গাংনীতে বন্ধুর পরীক্ষা দিতে এসে আটক ॥ ভুয়া পরীক্ষার্থীর এক মাস কারাদন্ড

গাংনী প্রতিনিধি: ভারতে অবস্থান করেও মেহেরপুর গাংনী মহিলা ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে ডিগ্রি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে মিলন হোসেন নামের এক যুবক। তবে স্ব-শরীরে নয়। মিলন সেজে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন তারই বন্ধু তুহিন হোসেন (২২)। তবে হয়নি শেষ রক্ষা। মিলন হোসেনকে পরীক্ষা থেকে বহিস্কার এবং ভূয়া পরীক্ষার্থী তুহিন হোসেনকে এক মাসের কারাদন্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। তবে পরীক্ষা কেন্দ্রে মিলনকে সহায়তাকারীরা নেপথ্যেই থেকে গেছেন।
তুহিন হোসেন গাংনী উপজেলার সহড়াবাড়ীয়া গ্রামের বাবু মিয়ার ছেলে। সে চলতি বছর এইচএসসি পাস করেছে। বহিষ্কৃৃত মিলন হোসেন গাংনী পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের গোলাম পঞ্জায়েতের ছেলে।
জানা গেছে, গাংনী সরকারি ডিগ্রি কলেজের ছাত্র মিলন হোসেন চলতি বছর অনুষ্ঠেয় ডিগ্রি পরীক্ষায় (ফাইনাল) অংশ নেয়। তার রোল নং ৫২০৪২৬৫। গাংনী মহিলা ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে বৃহস্পতিবার বিকেলে ভূগোল পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে পরীক্ষার্থীরা। তার প্রবেশ পত্র নিয়ে তুহিন হোসেন নামের ওই যুবক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরিফ-উজ-জামান কেন্দ্রে অভিযান চালান। প্রবেশ পত্রের ছবির সাথে ভুয়া পরীক্ষার্থীর ছবির অমিল দেখা দিলে তিনি পুলিশকে আটকের নির্দেশ দেন। এ প্রসঙ্গে আটক তুহিন জানায়, মিলন হোসেনের সাথে তার ভালো সম্পর্ক। পারিবারিক কাজে সে ভারতে অবস্থান করছে। তাই আমাকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে অনুরোধ করে।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফ-উজ-জামান এ প্রসঙ্গে বলেন, গোপন সংবাদেগর ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়েছিলো। পরীক্ষার্থীর কাগজপত্র ঘেটে ভূয়া পরীক্ষার্থীর বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে আটক তুহিন হোসেন অপরাধ স্বীকার করেছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা আইনে তাকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদ- দেয়া হয়। তাকে জেলা কারাগারে প্রেরণ করেছে পুলিশ।
জানা গেছে, মিলন হোসেন বেশ কিছুদিন ধরে ভারতে অবস্থান করছেন। তার হয়ে বেশ কয়েকটি পরীক্ষায় অংশ নেয় তুহিন। মিলনের ছবিযুক্ত প্রবেশপত্র হাতে নিয়েই সে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। ফলে যে শিক্ষক কক্ষ পরিদর্শক ছিলেন তিনি কী দায়িত্ব পালন করেছেন তা প্রশ্ন উঠেছে। অপরদিকে হলসুপার ও পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির সদস্যদের চোখ এড়িয়ে কীভাবে এই অপকর্ম সম্ভব হয়েছে সে প্রশ্নও এখন মানুষের মুখে মুখে। মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে পরীক্ষা সংশ্লিষ্টরা ভুয়া পরীক্ষার্থীকে সুযোগ করে দিয়েছে বলে এলাকায় গুঞ্জন চলছে। তবে ভুয়া পরীক্ষার্থীর সাথে কারা জড়িত তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বললেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার।

Leave a comment