এ বছর ৯১টি পূজামন্ডপ ॥ ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে নজরদারি বাড়াতে হবে

চুয়াডাঙ্গায় শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন-২০১৭ উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ সেপেটম্বর পর্যন্ত শারদীয়া দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে ও শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা সম্পন্ন হতে পারে সেদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে দায়িত্বশীল হওয়ার অনুরোধ করা হয়। চলতি বছর জেলায় ৯১টি দুর্গাপূজাম-প তৈরির প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত সভায় ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আব্দুল মোমেন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) খোন্দকার ফরহাদ আহমদ, জেলা আনসার কমান্ড্যান্ট আশরাফুল ইসলাম, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক এবিএম রবিউল ইসলাম, সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক এসএম রফিকুল ইসলাম, বিআরডিবির উপপরিচালক তাপসী রানী সাহা, ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক (ডিএডি) আব্দুস ছালাম, চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার প্যানেল মেয়র-১ একরামুল হক মুক্তা, হিন্দু-বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি ডা. মার্টিন হীরক চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত কুমার সিংহ, শ্যামল কুমার নাথ, কিংকর কুমার দে, ষষ্ঠিচরণ কর্মকার, নির্মল কুমার জোয়ার্দ্দার, সুজন হালদার, সেন কুমার হালদার ও বিজয় কুমারসহ চুয়াডাঙ্গা সদর, আলমডাঙ্গা, দামুড়হুদা ও জীবননগর উপজেলার পূজাম-পের সভাপতি-সম্পাদকসহ প্রতিনিধিরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। সভায় জানানো হয়- চলতি বছর চুয়াডাঙ্গা জেলায় ৯১টি স্থানে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ২৭টি, আলমডাঙ্গা উপজেলায় ২৭টি, দামুড়হুদা উপজেলায় ১৯টি এবং জীবননগর উপজেলায় ১৮টি দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে ৩টি ভিজিলেন্স টিম গঠন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক আব্দুর রাজ্জাক আরো বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোর দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নজরদারি বাড়াতে হবে। সন্ধ্যার পূর্বেই প্রতিমা বিসর্জন দিতে হবে। মসজিদে আজান ও নামাজের সময় শব্দ বন্ধ রাখবেন। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত সরবরাহের ব্যবস্থা রাখতে হবে। প্রয়োজনে জেনারেটর ব্যবহার করতে হবে। সামর্থ্য আছে এমন মন্ডপগুলোতে সিসিটিভির ব্যবস্থা করতে পারেন। পূজামন্ডপে ছেলেমেয়েদের জন্য আলাদা চলাচলের ব্যবস্থা রাখতে হবে। স্বেচ্ছাসেবক যারা দায়িত্ব পালন করবেন, তাদের আলাদাভাবে চেনার উপায় থাকতে হবে। আনসার সদস্যদের ড্রেস পরিহিত অবস্থায় ডিউটি পালন করতে হবে। পূজামন্ডপে অনুদানের জন্য ঢাকায় চিঠি পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দপত্র এলেই তা দেয়া হবে। ওইদিনই পবিত্র আশুরা অনুষ্ঠিত হবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় থাকে সেদিকে সকলকে দৃষ্টি রাখতে হবে।
চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আব্দুল মোমেন বলেন, সকল পূজামন্ডপে পুলিশ-আনসার মোতায়েন করা হবে। যদি পুলিশ-আনসার না যায় লিখিতভাবে জানাতে হবে। নিরাপত্তার সাথে শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হতে পারে সেজন্য সকলকে আন্তরিক হতে হবে। ডেকসেট বাজাবেন না। সীমান্ত জেলা চুয়াডাঙ্গায় মাদকের প্রবণতা থাকে। মানুষ ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে, এ সময় অঘটন ঘটে। পুলিশ ফোর্সের আচরণ ঠিক থাকে সে বিষয়টা দেখা হবে। প্রতিমা তৈরি থেকে বিসর্জন পর্যন্ত সচেষ্ট থাকবেন। জেলা আনসার কমান্ড্যান্ট আশরাফুল ইসলাম বলেন, সাধারণ কেন্দ্রে ৪ জন, ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ৬ জন এবং অধিক ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ৮ জন আনসার সদস্য মোতায়েন করা হয়ে থাকে। আনসার সদস্যদের প্রতিদিন খাবারের জন্য ২৫০ টাকা এবং আলাদা ডিউটি ভাতা দেয়া হয়। এরপর খাবার নিয়ে কোনো অভিযোগ থাকার কথা নয়। চুয়াডাঙ্গা জেলা হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি ডা. মার্টিন হীরক চৌধুরী বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ বাংলাদেশ। বিশ্বে বাংলাদেশ রোল মডেল। নিজেদের নিরাপত্তা নিজেদের নিশ্চিত করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সবকিছু করে দেবে এটা ঠিক নয়।
মুজিবনগর প্রতিনিধি প্রতনিধি: মুজিবনগরে দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষে প্রস্তুতিসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মুজিবনগর থানা সম্মেলনকক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১০টায় এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতিত্ব করেন মুজিবনগর থানা ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম। বক্তব্য রাখেন মুজিবনগর উপজেলা দুর্গাপূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি ডা. সুকুমার কর্মকার, সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার পাল ও ৭টি পূজামন্ডপের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ। উপজেলায় ৭টি পূজামন্ডপ অনুষ্ঠিত হবে। দুর্গাপূজা উদযাপনে সকল প্রকার আইনি সহযোগিতা আশ্বাস দেন ওসি মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম।