ষোড়শ সংশোধনীর রায় নিয়ে তিন বিভাগের চলছে টানাহেঁচড়া

চুয়াডাঙ্গায় মতবিনিময়সভায় বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল বাসেত মজুমদার

স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আবদুল বাসেত মজুমদার বলেছেন ষোড়শ সংশোধনীর রায় নিয়ে বিচার বিভাগ, নির্বাহী বিভাগ ও পার্লামেন্ট এই তিন বিভাগে টানাহেঁচড়া চলছে। অতি সম্প্রতি প্রকট আকার ধারন করেছে। ষোড়শ সংশোধনীর রায়ের পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র আছে। জাতির পিতার আসনে যেই বিধান রেখেছেন তা পুনঃস্থাপন করবো। সর্বোপরি আমরা ব্যর্থ, আমরা পারিনি। গতকাল বুধবার বেলা ১০টায় চুয়াডাঙ্গা জেলা আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আইনজীবীদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি আব্দুল বাসেত মজুমদার এ মন্তব্য করেন।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে বারের সাধারণ সম্পাদক মহ. শামসুজ্জোহার (পিপি) সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময়সভায় বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট আবদুল বাসেত মজুমদার প্রধান অতিথি এবং রোল অ্যান্ড পাবলিকেশন কমিটির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো. ইয়াহিয়া বিশেষ অতিথি হিসেবে ও সরকারি কৌশলী (জিপি) মোল্লা আব্দুর রশিদ উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি সেলিম উদ্দিন খান, আলমগীর হোসেন ও এমএম শাহজাহান মুকুল, সিনিয়র আইনজীবী মসলেম উদ্দিন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার, সৈয়দ হেদায়েত হোসেন আসলাম ও শামীম রেজা ডালিম বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে কোরআন তেলাওয়াত করেন অ্যাড. আকসিজুল ইসলাম রতন। প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিকে ফুল দিয়ে বারের সভাপতি নুরুল ইসলাম ও বারের সহসভাপতি মামুন আক্তার বরণ করে নেন। এ সময় ভাইস চেয়ারম্যানের জুনিয়র হাইকোর্টের আইনজীবী হামিদুল ইসলাম হামিদসহ জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথি বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল বাসেত মজুমদার আরো বলেন, জনগণের প্রতিনিধি হলো পার্লামেন্ট। পার্লামেন্ট হলো সর্বময় ক্ষমতার মালিক। আমরা চাই বিচারকদের জবাবদিহিতা পার্লামেন্টের কাছে থাকুক। বিচারকদের দাবি তাদের ক্ষমতা পার্লামেন্টে গেলে বিচারকদের স্বাধীনতা থাকবে না। অ্যাটর্নি জেনারেল ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলদের আইন আছে এবং বেতনও আছে। কিন্তু জিপি-পিপি, এপিপি ও এজিপিদের জন্য আইন নেই এবং বেতনও নেই। এ বিষয়ে আইনমন্ত্রীর সাথে আলোচনা হয়েছে। তবে বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আইনজীবীদের স্ট্যাটাস কি হবে বিষয়টি নিয়ে সরকারের সাথে আলোচনা করা হবে। বার কাউন্সিলের উদ্যোগে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা যায় সেটি পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে। এক্ষেত্রে অনেক ডোনার এ বিষয়ে বলেছেন। শনিবারের দিন বার কাউন্সিল ভবন খুলে রাখার বিষয়টি ভেবে দেখা হবে। এতে আমার লাভ হবে বেশি। সারাদেশের আইনজীবীদের সাথে দেখা-সাক্ষাত হবে। দীর্ঘদিন যাবত আইনজীবীদের এনরোলমেন্টের পরীক্ষা বন্ধ থাকায় নতুন করে আইনজীবী বারে যোগদান করতে পারেনি। তবে এবার সাড়ে ৩৬ হাজার আইনজীবী হওয়ার জন্য এমসিকিউ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। এর মধ্যে ৮ হাজার উত্তীর্ণ হয়েছেন। দেশে প্রচুর বেকার ছেলে-মেয়ে রয়েছে। তবে আদালতে ভালো আইনজীবী আসুক সে চেষ্টা রয়েছে। আইনজীবীদের দীর্ঘদিনের দাবি, বার কাউন্সিলের স্লাব সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা এবং বার কাউন্সিলের নতুন ১৫ তলা ভবন নির্মাণ করা আমার জীবনের সবচেয়ে অর্জন হবে। চুয়াডাঙ্গায় চারটি সহকারী জজ পদায়ন ও চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন নির্মাণ দ্রুত হতে পারে সেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ সময় চুয়াডাঙ্গা বারের উন্নয়নে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে তিনি ২ লাখ টাকার অনুদানের চেক সভাপতি নুরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মহ. শামসুজ্জোহার কাছে তুলে দেন। অনুষ্ঠানে চুয়াডাঙ্গা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মানি খন্দকার তার প্রকাশিত আইনজীবী ও আইন জানো বিষয়ে মিউজিক ভিডিও’র পাঁচটি সিডি প্রধান অতিথি আবদুল বাসেত মজুমদারের হাতে উপহার হিসেবে তুলে দেন।