গাংনীতে প্রেমিকাকে মারধর করে প্রেমিকের বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা ॥ নেপথ্যে……

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী উপজেলার হাড়িয়াদহ গ্রামে প্রেমিকার ওপর অভিযান করে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছে মিশকাত হোসেন (২০) নামের এক যুবক। এর আগে প্রেমিকা আনোয়ারা খাতুনকে মারধর করে মিশকাত। মিশকাতকে ছেড়ে অন্য এক যুবকের সাথে প্রেমসম্পর্কের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে এলাকায় গুঞ্জন চলছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হাড়িয়াদহ গ্রামের চাঁদ আলীর ডিপ্লোমা পড়–য়া ছেলে মিশকাত আলীর সাথে প্রতিবেশী কৃষক আনারুল ইসলামের মেয়ে আনোয়ারা খাতুনের প্রেমসম্পর্ক ছিলো। আনোয়ারা খাতুন ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নার্স হিসেবে কর্মরত। ঈদের ছুটিতে দুজন বাড়িতে আসেন। ঈদের দুই দিন পর ৪ সেপ্টেম্বর দুপুর তিনটার দিকে মিশকাত হোসেন আনোয়ারার বাড়িতে যায়। তার মোবাইলফোন ছিনিয়ে নিয়ে কললিস্ট পরীক্ষার চেষ্টা করেন। এ সময় বাধা দিলে আনোয়ারাকে চড়-থাপ্পড় দেয় মিশকাত। একপর্যায়ে মোবাইল নিতে ব্যর্থ হয়ে বাড়ি ফিরে বিষপান করে। পরিবারের লোকজন তাকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে গাংনী থেকে কুষ্টিয়া এবং দুইদিন আগে তাকে ঢাকার একটি হাসপাতালে নেয়া হয়। তার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে গ্রামে গুঞ্জন রয়েছে। তবে তার চিকিৎসার বিষয়ে তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন তার মা-বাবা।
ধানখোলা গ্রামের টোকন হোসেন নামের এক ট্রাক্টর চালকের সাথে আনোয়ারা ও তার পরিবারের সম্পর্ক। এ কারণে মিশকাত আলীর সাথে আনোয়ারা সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। যার ফলে মিশকাত আলী আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে বলে গ্রামজুড়ে গুঞ্জন চলছে। মিশকাত আলীর মা ও বাবা বলেন, আমার ছেলে সুস্থ হয়ে যাবে। যদি অন্য কোনো সমস্যা হয় তাহলে ওদের (আনোয়ারা) বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থার দিকে যাবো। এর আগে তারা কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। জানতে চাইলে আনোয়ারার মা বলেন, আমরা গরিব বলে মিশকাতের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করতে মেয়েকে চাপ দিয়েছিলাম। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মেয়ের মোবাইলে আজেবাজে ম্যাসেজ নিয়ে হুমকি দেয় মিশকাত। পরে ওই দিন দুপুরে আমার বাড়িতে এসে আনোয়ারা ও আমার ছোট মেয়েকে মারধর করে। বিকেলে আমরা মামলা করতে থানায় গিয়েছিলাম। গ্রামের কয়েকজনের বিচারের আশ্বাসে মামলা না করে বাড়ি ফিরে আসি। এখন মিশকাতের পরিবার বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে।
স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, ধানখোলা গ্রামের ফরিদ হোসেনের ছেলে ট্রাক্টর চালক টোকন হোসেন যাওয়া-আসা করেন আনোয়ারার বাড়িতে। এ নিয়ে আনোয়ারা ও মিশকাতের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। টোকনের সাথে সম্পর্কের জেরে মিশকাতের সাথে সম্পর্কে ভাটা পড়ে। ফলে ক্ষিপ্ত হয় মিশকাত। প্রেমিকার প্রতি অবিশ^াস জন্ম নেয়। ক্ষোভ ও অভিমান থেকেই সে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছে বলে গ্রামের মানুষ মনে করছে। বিষপানের জন্য টোকনকে দায়ী করছেন অনেকেই।
জানতে চেয়ে মোবাইলে কল দিয়েও মিশকাত ও আনোয়ারার মোবাইলফোন বন্ধ পাওয়া যায়। অন্যদিকে অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে টোকন। তিনি বলেন, আনোয়ারার পিতার সাথে একসাথে ইটভাটায় কাজ করার সুবাদে বাড়িতে যাওয়া-আসা ছিলো। আমার সাথে কারো কোনো সম্পর্ক নেই।