গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট (বিএম) কলেজের অধ্যক্ষ পদ দিয়ে আবারো উত্তেজনা শুরু হয়েছে। অধ্যক্ষ পদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি নিয়ে আবুল কালাম আজাদ স্বপন গতকাল শনিবার কলেজে যেতে চাইলে প্রতিবাদ জানান ছাত্রলীগ ও প্রাক্তন কমিটির সদস্যবৃন্দ। আওয়ামী লীগ নেতা হত্যা মামলার আসামি হিসেবে কলেজ কর্তৃপক্ষ ২০১৪ সালে তাকে বহিষ্কার করে। মিথ্যা তথ্য দিয়ে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের অভিযোগ ছাত্রলীগের। অপরদিকে আবুল কালাম আজাদের অভিযোগ, শুধুমাত্র পেশিশক্তির বলে কলেজে ঢুকতে দেয়া হয়নি। গতকাল সকাল থেকে গাংনী উপজেলা ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থান নেন। কলেজে প্রবেশের রাস্তায় অবস্থান নিয়ে অধ্যক্ষ বিরোধী কথাবার্তা বলেন। দুপুর দুইটার দিকে কলেজ ছুটি হলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাস ছেড়ে যায়। কলেজে পাঠদান হলেও অধ্যক্ষ প্রবেশ করেননি। তবে কলেজ ক্যাম্পাস ত্যাগ করার আগে দুপুরে খিঁচুড়ি রান্না করে খাওয়া-দাওয়া করেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। অধ্যক্ষ পদে পুনর্বহালের দাবিদার আবুল কালাম আজাদ স্বপনের অভিযোগ, ছাত্রলীগ অধ্যক্ষের চেয়ার পুড়িয়ে দিয়েছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ছাত্রলীগ নেতারা বলেছেন, আমরা ওই কলেজে খিঁচুড়ি পিকনিক করেছি।
জানতে চাইলে গাংনী উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি তোহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব হোসেন বলেন, ২০১৩ সালের ২৫ ডিসেম্বর রাতে বাঁশবাড়িয়া গ্রামের নুরুল আমিনকে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। নুরুল আমিন গাংনী পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। হত্যাকা-ের মূল অভিযুক্ত হিসেবে অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ স্বপনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। পরে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তিনি বাঁশবাড়িয়া গ্রামের বিএনপির প্রভাবশালী নেতা। নুরুল আমিন হত্যাকা- ও কলেজের অর্থ লোপাটের অভিযোগে কলেজ কর্তৃপক্ষ ২০১৬ সালের ৮ মার্চ সরকারি কর্মচারী বিশেষ বিধানে তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করে। কারিগরি শিক্ষাবোর্ডে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাকে যদি কলেজে প্রবেশ করতে দেয়া হয় তাহলে আবার বিশৃঙ্খলা শুরু হবে।
এ বিষয়ে আবুল কালাম আজাদ স্বপন বলেন, আমি অধ্যক্ষ পদেই রয়েছি। গত ২৩ জুলাই থেকে দায়িত্ব পালন করছি। কারিগরি শিক্ষাবোর্ড থেকে একটি এডহক কমিটি অনুমোদন দিয়েছে। এর প্রধান হচ্ছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। আমার বহিষ্কারাদাশের বিরুদ্ধে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আবেদন করি। তদন্ত শেষে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করেছে। নিয়ামনুযায়ী আমি কলেজে দায়িত্ব পালন করছি। কিন্তু ছাত্রলীগের বাধায় কলেজে প্রবেশ করতে পারিনি। তারা পেশিশক্তির বলে অবৈধভাবে কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থান নেয়। বিষয়টি পরিচালনা পর্ষদ (এডহক) সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানিয়েছি।
বাঁশবাড়িয়া বিএম কলেজ পরিচালনা পর্ষদের (এডহক) সভাপতির দায়িত্বে থাকা গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফ-উজ-জামান বলেন, আমি কয়েকদিনের জন্য ছুটিতে আছি। অফিসে ফিরে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।