ঝিনাইদহ সওজ’র সেই বিতর্কিত নির্বাহী প্রকৌশলীর অবশেষে বদলি

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের বিতর্কিত ও দুর্নীতিবাজ নির্বাহী প্রকৌশলী সেলিম আজাদ খানকে হবিগঞ্জ জেলায় বদলি করা হয়েছে। ভোলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোয়াজ্জেম হোসেনকে ঝিনাইদহে পদায়ন করা হয়েছে। বুধবার এ সংক্রান্ত বদলি আদেশ ঝিনাইদহ সওজে এসে পৌছুলে কর্মকর্তা কর্মচারীরা একে অপরকে মিষ্টি খাইয়ে উল্লাস প্রকাশ করেন। এছাড়া শোকরানা জানিয়ে স্থানীয় মসজিদে দোয়ার মাহফিলের আয়োজন করা হয়। সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলীর অফিস আদেশে বলা হয়েছে আগামী ১২ সেপ্টম্বরের মধ্যে নির্বাহী প্রকৌশলী সেলিম আজাদ খানকে হবিগঞ্জ জেলায় যোগদান করতে হবে। অন্যথায় ১৩ সেপ্টম্বর থেকে তাৎক্ষণিকভাবে অবমুক্তি হিসেবে গণ্য হবেন। অভিযোগ পাওয়া গেছে, নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে সেলিম আজাদ খান যোগদানের পর থেকে টেন্ডারবাজি, কমিশন বাণিজ্য ও ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে সরকারের কোটি কোটি টাকা তছরূপ করেন। ঝিনাইদহ জেলার বিভিন্ন সড়ক কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হলেও মানহীন কাজের কারণে অল্প দিনের মধ্যে নষ্ট হয়ে যায়। এ নিয়ে তোপের মুখে পড়েন নির্বাহী প্রকৌশলী সেলিম আজাদ খান।
ফেসবুক ও পত্রপত্রিকায় লেখালেখির ফলে একাধিক তদন্ত সম্পন্ন হয়। দুর্নীতি দমন কমিশনে জমা হয় অভিযোগের পাহাড়। দুদকের ঝিনাইদহে অনুষ্ঠিত গনশুনানিতে নির্বাহী প্রকৌশলী সেলিম আজাদ খানের বিরুদ্ধে ২০টি অভিযোগ জমা হয়। কিন্তু তিনি জনরোষের ভয়ে জবাব দিতে গনশুনানিতে উপস্থিত হননি। তার দুর্ব্যবহারে কর্মকর্তা কর্মচারীরা অতিষ্ঠ হয়ে স্বেচ্ছায় ৯ জন অন্যত্র বদলি হয়ে যান। ফলে লোকবলের অভাবে কাজকর্ম ব্যহত হয়। তার অসদাচরণের বিষয়টি প্রধান প্রকৌশলীর অফিসকে লিখিতভাবে জানান ২৯ জন কর্মকর্তা কর্মচারী। তথ্যানুসন্ধান করে জানা গেছে সেলিম আজাদ খান ২০০৬ সালের ২৪ আগস্ট অ্যাসিসটেন্ট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে যোগদান করেন। এই ১১ বছরে তিনি ১৬ জায়গায় বদলি হয়েছেন। অসামাজিকতা, কর্মচারীদের সাথে দুর্ব্যাবহার ও চরম দুর্নীতির কারণে কোনো স্টেশনে তার কর্মকাল বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। অনেক স্থানে তিনি মারধরও খেয়েছেন। বদলির বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী সেলিম আজাদ খান জানান, আমাকে হবিগঞ্জ বদলি করা হয়েছে। তিনি বলেন, এখানে তো আমি ঘরবাড়ি বেঁধে থাকতে আসেনি। ডিপার্টমেন্ট চেয়েছে তাই আমাকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে। তবে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তিনি প্রত্যাখ্যান করেন।