আলমডাঙ্গা ব্যুরো: আলমডাঙ্গার ভোগাইল বগাদী গ্রামের পলি খাতুন হত্যা মামলার আসামি এনামুল ও আব্দুস সামাদ আত্মসমর্পণ করেছে। গতকাল বুধবার বিকেলে আলমডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিনের নিকট ওই ২ আসামি উপস্থিত হন। সে সময় তাদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে উপজেলা চেয়ারম্যান তাদেরকে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের হাতে তুলে দেন।
এলাকাসূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার ভাংবাড়িয়া ইউনিয়নের ভোগাইল বগাদী গ্রামের এক সন্তানের জননী পলি খাতুন আগে ছিলেন একই গ্রামের মেছের আলী লাল্টুর স্ত্রী। মাস পাঁচেক আগে তিনি একই গ্রামের ওলি ফকিরের ছেলে দু সন্তানের জনক এনামুল হকের সাথে পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে তোলেন। মাস পাঁচেক আগে স্বামীর ঘর ছেড়ে এনামুলের সাথে বিয়ে করেন তিনি। ঘরে দুই সন্তান রেখে দ্বিতীয় বিয়ে করার কারণে নিজের বাড়ি থেকে বিতাড়িত হন এনামুল হক। বাধ্য হয়ে এনামুল ও পলি খাতুন একই গ্রামের আবদুস সামাদের বাড়িতে আশ্রয় নেন। সামাদ সম্পর্কে এনামুলের বন্ধু। তবে গ্রামের কয়েকজন বলেছেন গ্রামের জহুরুল ইসলাম এবং হাসান জোর করে সামাদের বাড়িতে এনামুল ও পলিকে রেখে যায়।
এদিকে গত বুধবার দিনগত রাত দেড়টার দিকে ১০-১২ জনের একদল মুখোশধারী দুর্বৃত্ত সামাদের বাড়িতে হানা দেয়। তারা সামাদের মেয়ে সাগরী খাতুনের কানের দুল ও একটি মোবাইলফোন কেড়ে নেয়। সাগরী জানান, দুর্বৃত্তরা ঘরের জিনিসপত্র তছনছ করে এবং আমার চোখে টর্চ লাইট মেরে ধরে রাখে। সামাদের স্ত্রী ফিরোজা জানান, দুর্বৃত্তরা এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বাড়িতে তাণ্ডব চালায়। পরে ঘর থেকে অস্ত্রের মুখে এনামুল ও তার স্ত্রী পলি খাতুনকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। ভোর বেলা তারা ফিরে আসে।
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ফিরে আসার পর ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে এনামুল জানান, তাদেরকে বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূর পোলতাডাঙ্গা শ্মশানঘাটের কাছে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। সেখানে আমাকে পিঠমোড়া দিয়ে বেঁধে স্ত্রীকে অন্যত্র নিয়ে যায়। দু ঘণ্টা পর স্ত্রীসহ তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়। এনামুলের দাবি তার স্ত্রী পলিকে ওই দুর্বৃত্তরা পালাক্রমে ধর্ষণ করে বলে পলি তাকে জানায়। এ মুখ সে আর লজ্জায় কাউকে দেখাবে না বলে সকাল ৮টার দিকে বিষ পান করেন।
এ ঘটনায় পলির পিতা বাদী হয়ে ৬ জনকে আসামি করে আলমডাঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার এক আসামি আব্দুস সামাদের স্ত্রী ফিরোজা খাতুন গতকাল চুয়াডাঙ্গা আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন। গতকাল বিকেল ৫টার দিকে একই মামলার আসামি এনামুল হক ও আব্দুস সামাদ আলমডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিনের অফিস কক্ষে আসেন আত্মসমর্পণের বিষয়ে আলোচনা করতে। এক পর্যায়ে উপজেলা চেয়ারম্যান থানার ওসি (তদন্ত) লুৎফুল কবির, এসআই জিয়াউল হকের হাতে তাদেরকে তুলে দেন। তাদেরকে আজ বৃহস্পতিবার চুয়াডাঙ্গা জেল হাজতে প্রেরণ করা হবে।