চুয়াডাঙ্গার আকন্দবাড়িয়ায় পাউয়ারটিলারের পেছনে কেজিএন পরিবহনের ধাক্কায় স্কুলছাত্র সুমনের মর্মান্তিক মৃত্যু : ৯ জন আহত

 

বেগমপুর প্রতিনিধি: দশজন শ্রমিক পাউয়ারটিলারে করে ধান কাটতে যাচ্ছিলো আকন্দবাড়িয়া গ্রামের কুঁড়েতলা মাঠে। যাওয়ার পথে পাউয়ারটিলারটি দর্শনা-জীবননগর মহাসড়কে ওঠে পড়লে পেছন দিক থেকে সজোরে ধাক্কা দেয় কেজিএন পরিবহনের একটি বাস। আহত হনয় পাউয়ারটিলারে থাকা ১০ শ্রমিক। তাদের মধ্যে স্কুলছাত্র সুমনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়। ঘাতক বাসটিকে আটকে করেছে পুলিশ।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, লেখাপড়ার পাশাপাশি পরের জমিতে কামলাখাটে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর ইউনিয়নের আকন্দবাড়িয়া স্কুলপাড়ার আরজেম আলীর ছেলে উথলী বয়েজ স্কুলের ১০ শ্রেণির ছাত্র সুমন (১৫)। গতকাল সোমবার সকাল সোয়া ৭টার দিকে মহল্লার আরও ৯ শ্রমিকের সাথে গ্রামের কুঁড়ের মাঠে শাহাজামালের ধান কাটার জন্য একটি পাউয়ারটিলারে করে যাচ্ছিলো। এ সময় পাউয়াটিলারটি দর্শনা-জীবননগর মহাসড়কের আকন্দবাড়িয়া যাত্রী ছাউনির সামনে মহাসড়কের ওপরে ওঠে। পাউয়াটিলারটি জীননগরের দিকে মুখ ফেরাতেই পেছন দিক চুয়াডাঙ্গা থেকে ছেড়ে আসা যশোরগামী কেজিএন পরিবহনের একটি বাস (ঢাকা-মেট্র-জ-১১-০০৫২) সজোরে ধাক্কা মারে। ধাক্কায় পাউয়াটিলারটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে এবং শ্রমিকেরা ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন। আহতরা হলেন- আরজেমের ছেলে সুমন (১৫), রমজান আলী (৪৮), শাহাজামাল (৩৮), সাহাবুল (৩৬), নজরুল ইসলাম (৩২), রফিকুল ইসলাম (৩৯), মাহাবুল (৩৬), আমজাদ হোসেন (৪২) ও ফিরোজ আহম্মেদ (৩০)। আহতদের মধ্যে স্কুলছাত্র সুমনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়ার পথেই তার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘাতক বাসটি পাউয়াটিলারের সাথে ধাক্কা মেরেই দ্রুত জীবননগরের দিকে পালিয়ে যায়। মোবাইলে যোগাযোগ করে বাসের পিছু নিলে সন্তোষপুর তেলপাম্পের নিকট বেরিকেড দেন পথচারীরা। অবস্থা বেগতিক বুঝে চালক বাসটি সন্তোষপুর তেলপাম্পের কাছে রেখে সটকে পড়ে। বেগমপুর ক্যাম্প পুলিশের ইনচার্জ এসআই মাসনুন লেলিন বলেন, বাসটি জীবননগর পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে। শেষ খবর জানা নেই। এদিকে সুমনের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না তোলায় আপস-মীমাংসার মধ্যদিয়ে গতকালই আছর বাদ জানাজা শেষে গ্রাম্য কবরস্থানে সুমনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। অপরদিকে পিতার কাঁধে সন্তানের লাশ তা কোনোভাবেই নিজেদেরকে বুঝ দিতে পারছিলেন না সুমনের মা-বাবা। সুমনের মা কোহিনুর বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, অভাবের সংসার। এর মধ্যেও পরের জমিতে কামলা খেটে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছিলো সে। এভাবে আমাদের ছেড়ে চলে যাবে ভাবতেই পারছি না।