যশোরের সিরিয়াল কিলার নান্নু ভারতে খুন

স্টাফ রিপোর্টার: যশোরের ‘সিরিয়াল কিলার’ মোখলেছুর রহমান নান্নু ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁয় খুন হয়েছে। গত শনি ও রোববার ভারতীয় গণমাধ্যমে সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। গত শুক্রবার ভারতীয় পুলিশ বনগাঁর চড়ুইগাছি এলাকার জিয়ালা খাল থেকে পচাগলা মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। স্ত্রী লাভলি ইয়াসমিন নিহতের মৃতদেহ শনাক্ত করেছে। নিহত মোখলেছুর রহমান নান্নু যশোর সদর উপজেলার শ্যামনগর গ্রামের সাইফুল ইসলাম সাফুর ছেলে। তার বিরুদ্ধে যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জিল্লুর রহমান মিন্টুসহ অন্তত ২০টি হত্যা মামলা রয়েছে। প্রায় দেড় বছর ধরে ভারতে পালিয়ে ছিলো। বনগাঁর বোয়ালদহ গ্রামে জমি কিনে বাড়িও করেছিলো। সন্ত্রাসীরা তাকে হত্যা করে খালে কচুরিপানার মধ্যে লাশ রেখে যায়। ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, গত বুধবার দুপুরে স্থানীয়রা খালের জলে পাট পচাতে গিয়ে এক ব্যক্তি কচুরিপানার নিচে মৃত দেহটি দেখেছিলেন। তার কথায় গ্রামবাসী গুরুত্ব দেয়নি। শুক্রবার স্থানীয় কয়েকজন মৃতদেহ ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দেয়। পরে পচাগলা লাশ পুলিশ উদ্ধার করেছে। শুক্রবার বিকেলে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালমর্গে গিয়ে মোখলেছুর রহমান নান্নুর স্ত্রী মৃতদেহ শনাক্ত করেন। তিনি বলেন, আমার স্বামীর বা পায়ের কড়ে আঙুল কাটা ছিলো। উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিরও কড়ে আঙুল কাটা। থানায় স্বামী হত্যার অভিযোগ করেছেন নান্নুর স্ত্রী লাভলী ইয়াসমিন। তিনি স্বামী সন্ধান না পেয়ে পাসপোর্টে ভারতে যান। সেখানে গিয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। জমি কিনে বাড়িও করেছিলেন: উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার সি সুধাকর ভারতীয় গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন ‘খুনের মামলায় তদন্ত চলছে।’ তদন্তে পুলিশ জানতে  পেরেছে,  শোহারবকে খুনের ‘সুপারি’  দেয়া হয়েছিলো সীমান্তের ওপার থেকে। দুষ্কৃতিদের দিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে নান্নুকে খুন করা হয়। পুলিশ জানতে  পেরেছে, খুনের রাতে নান্নুর সাথেই ছিলো সোহরাব। বনগাঁর বোয়ালদহ গ্রামে সোহরাব মণ্ডলের বাড়িতে দেড়বছর ধরে ভাড়া থাকতেন মোখলেছুর রহমান নান্নু। ওই গ্রামে জমি কিনে বাড়ি তৈরি করছিলেন নান্নু। জমি কিনতে পঞ্চায়েতের অনুমতি নিতে না হলেও বাড়ি করতে অনুমতি লাগে। এক্ষেত্রে বাড়ি তৈরির জন্য নান্নু পঞ্চায়েত থেকে কোনো অনুমতি নেননি বলেই দাবি করেছেন স্থানীয় ঘাটবাওর পঞ্চায়েতের প্রধান  জেসমিন আরা খাতুন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, মাস তিনেক আগে জমি কিনে বাড়ি তৈরি শুরু করেন নান্নু। মাঝে মধ্যে এখানেই থাকতেন। কয়েক দিনের মধ্যে পাকাপাকিভাবে বাড়িতে উঠে আসার কথা ছিলো। ভালো ব্যবহার করতেন এলাকায়। নিহতের একটি এ দেশের আধার কার্ড পুলিশ উদ্ধার করেছে। সেখানে নাম আছে ‘নান্নু মণ্ডল’। বাড়ির ঠিকানা দেয়া হয়েছে বনগাঁর জয়পুর গ্রামে। আধার কার্ডটি নকল না আসল পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে।

 

Leave a comment