স্টাফ রিপোর্টার: অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের কাঙ্ক্ষিত টেস্ট সিরিজ শুরু হচ্ছে আজ রোববার। হোম অব ক্রিকেটখ্যাত মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচ শুরু হবে। দুই দলের মধ্যে সবশেষ টেস্ট সিরিজ অনুষ্ঠিত হয়েছে ১১ বছর আগে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশ সবশেষ টেস্ট ম্যাচ খেলেছে ২০০৬ সালে। এমনকি সে সময় টুইটারের যাত্রাও শুরু হয়নি। বাংলাদেশের বিপক্ষে সবশেষ সিরিজ খেলার পর অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে টেস্ট অভিষেক হয়েছে মিচেল জনসনের। সেই জনসন এক দশকের ক্যারিয়ারে ৩১৩টি উইকেট নিজের ঝুলিতে ভরে নিয়েছেন।
অবশ্য দুদলের মধ্যে টেস্ট সিরিজ খেলার যে কোনো চেষ্টা হয়নি তা নয়। ২০০৮ সালে বাংলাদেশকে আতিথেয়তা দেয়ার কথা ছিলো অসিদের। পরে সেই সিরিজ ২০১০ সাল পর্যন্ত স্থগিত করা হয়। পরে সেই সিরিজ আর হয়নি। ২০১১ সালে ফিউচার ট্যুর প্রোগ্রামের অধীনে বাংলাদেশে দুটি টেস্ট ম্যাচ খেলার সিদ্ধান্ত নেয় অস্ট্রেলিয়া। তা সত্ত্বেও সেসময় দেশটি বাংলাদেশ সফরে এসে তিনটি ওয়ানডে ম্যাচের মধ্যেই সিরিজ সীমাবদ্ধ রাখে। এরপর ২০১৫ সালে একটি টেস্ট ম্যাচ খেলতে বাংলাদেশে আসার পরিকল্পনা করে অসিরা। কিন্তু তখন নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে সেই সিরিজ বাতিল করা হয়।
এবার দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজ হচ্ছে কোনো প্রস্তুতি ম্যাচ ছাড়া। দলটির জন্য এশিয়ার কন্ডিশনে সাম্প্রতিক সময়ে যা বিরল। স্লো পিচে ব্যাটিংয়ে অভ্যস্ত ব্যাটসম্যান আছেন শুধু ডেভিড ওয়ার্নার ও ওসমান খাজা। আর স্পিনে যুক্ত হয়েছেন অ্যাস্টন এগার। অথচ তাদের এই সিরিজে ২-০ ব্যবধানে হেরে গেলে তারা র্যাংকিংয়ে ছয় নম্বরে ছিটকে পড়বে। যদিও দুদলের অতীত রেকর্ডও কথা বলছে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষেই। এ পর্যন্ত বাংলাদেশের বিপক্ষে চারটি টেস্ট খেলেছে অস্ট্রেলিয়া। যার চারটিতেই অসিরা জিতেছে। আর তিনটিতেই জিতেছে ইনিংস ব্যবধানে। বাংলাদেশও আত্মবিশ্বাসের দিক থেকে পিছিয়ে নেই। ঘরের মাটিতে সম্প্রতি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ ও শ্রীলঙ্কা সফরে পারফরমেন্স বাংলাদেশকে আত্মবিশ্বাস যোগাচ্ছে। তাছাড়া সাকিব আল হাসানের মতো বিশ্বমানের অলরাউন্ডার এই দলে আছে। তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিমও হয়ে উঠতে পারেন অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের জন্য মাথাব্যথার কারণ।
এই হোম সিরিজে স্পিন আক্রমণ নিয়ে আশাবাদী বাংলাদেশ। দলের স্পিন অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান বলেন, আমি মনে করি আমাদের স্পিন বিভাগ তাদের চেয়ে শক্তিশালী। অন্য কন্ডিশনে যাই হোক আমরা বাংলাদেশে স্পিনে তাদের চেয়ে সেরা।
অপরদিকে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ বলেন, ‘আমার মনে হয় দুর্দান্ত একটি সিরিজ হবে। এটি আমাদের দলের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা ভারতের মাটিতে কি শিখেছি তা দেখার সুযোগ থাকবে এ সিরিজে। ভারতের উইকেটের সাথে এখানকার উইকেটের যথেষ্ট মিল রয়েছে। আশা করবো সেখানে আমরা যা শিখেছি তা কাজে লাগাতে পারবো এবং এতে কোন সন্দেহ নেই খুবই উপভোগ্য একটি সিরিজ হবে।’ দীর্ঘ প্রায় এক যুগ পর টাইগার-অসি সিরিজ হলেও এখানে চোখ রাঙাচ্ছে বৃষ্টি। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ম্যাচের প্রতিদিনই বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। তাই শেষ পর্যন্ত ফল কি হয় তা নিয়ে একটা সংশয় থাকছেই।
সম্ভাব্য বাংলাদেশ একাদশ: তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, ইমরুল কায়েস, মুশফিকুর রহিম (অধিনায়ক ও উইকেটরক্ষক), সাকিব আল হাসান, সাব্বির রহমান, নাসির হোসেন, মেহদি হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, শফিউল ইসলাম ও মুস্তাফিজুর রহমান।
অস্ট্রেলিয়া: ডেভিড ওয়ার্নার, ম্যাট র্যানশো। স্টিভেন স্মিথ (অধিনায়ক), ওসমান খাজা, পিটার হ্যান্ডস্কম্ব, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, ম্যাথু ওয়েড (উইকেটরক্ষক), অ্যাস্টন এগার, প্যাট কামিন্স, জোস হাজলউড ও নাথান লিয়ন।