আলমডাঙ্গা গোকুলখালীর পশুহাট ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে জমে উঠেলেও প্রাকৃতিক দুর্যোগ বন্যায় খেতেল খামারি ও ব্যাবসায়ীদের লোকসানের আশঙ্কা

সাইদুর রহমান: আলমডাঙ্গা গোকুলখালীর ঐতিহ্যবাহী পশুহাট ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে জমে উঠেছে। প্রচুর ক্রেতা বিক্রেতার সমাগম ঘটলেও দাম অন্য বছরের তুলনায় অনেক কম। আর এই দাম কম হওয়াকে প্রাকৃতিক দুর্যোগকে (বন্যা) দায়ী করছে হাট ইজারাদাতা ও ব্যাপারীরা। গত বছরের তুলনায় গরুপ্রতি ১০ হাজার টাকা লোকসান হওয়ায় অধিকাংশ খেতেল ও খামারি  তাদের গরু ছাগল ফেরত নিয়ে যেতে দেখা গেছে। যার ফলে খেতেল ও খামারিদের লোকসানের আশঙ্কা।

গতকাল শুক্রবার গোকুলখালীর পশুহাটে প্রচুর গরু-ছাগল আমদানি হতে দেখা গেছে। সেই সাথে নতুন খেতেল ও খামাররিদের তাদের পশুকে রঙ্গিন সাজে সাজিয়ে আনতে দেখা গেছে। প্রচুর পরিমাণে গরু ছাগল আমদানি হলেও কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় অধিকাংশ বিক্রেতায় তাদের পশু ফেরত নিতে দেখা গেছে । তবে বেশি মোটা গরুর চেয়ে মাঝারি মাপের গরু ও ছাগলের দিকে ক্রেতাদের নজর বেশি ছিলো বলে জানা গেছে। চাহিদা অনুযায়ী দাম না পাওয়ায় বিক্রেতারা তাদের পশু বিক্রি করতে না পারায় তাদের মুখে হতাশার ছাপ। দাম কম হওয়ার ফলে বিক্রেতারা তাদের পশু বিক্রি না করায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় রফতানি করা ব্যাপারীরা তাদের চাহিদা মোতাবেক পশু কিনতে পারেননি বলে জানান।

ভালাইপুর গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে মুফাজ্জেল হোসেন বলেন এই এ বছর গরু ছাগলের দাম গত বছরের তুলনায় অনেক কম। গত বছর যে গরুর দাম ৭০- ৭৫ হাজার টাকা ছিলো অথচ এ বছর সেই গরুর দাম বলেন ৫০-৫৫ হাজার টাকা। অনেকে বিক্রেতাকে দেখা গেছে লোকসান দিয়ে তাদের পশু বিক্রি করতে। এ বিষয়ে তাদের কাছে জানতে চাইলে বলেন, সকলে গরু নিয়ে হাটে এসেছি খরিদ্দার এর চেয়ে বেশি দাম না বলায় অনেকটা বাধ্য হয়েই এ দামেই বিক্রি করে দেই। তবে যারা পশু কিনেছেন তারা বলেছেন যে এ বছর গরুর দাম একটু কম হওয়াই বেশ সাচ্ছন্দ মতোই কিনেছি।

গতকাল শুক্রবার সরেজমিনে গোকুরখালী পশুহাটে ঘুরে দেখা যায় যে দূর-দূরান্ত থেকে গরু পালনকারী খামারিরা ও ব্যাবসায়ীরা ট্রাক, নসিমন, করিমন, পাউয়ারটিলার ও লাটাহাম্বারে করে প্রচুর পরিমাণ গরু ছাগল নিয়ে আসছে। বাজারে প্রচুর ক্রেতা থাকা স্বত্বেও বেচাকেনা নেই বললেই চলে। হাটমালিক দেলোয়ার হোসেন দিপু ও তৌহিদুল ইসলাম ফকা, আব্দুস সালাম বিল্পব ও আব্দুল আমিল ফটিক বলেন, গরু-ছাগলের দাম গত বছরের তুলনাই কম হলেও হাটে ব্যাপক হারে গরু আমদানি হলেও কাঙ্ক্ষিত বেচা-কেনা নেই বললেই চলে। আমরা হাটের পক্ষ থেকে সন্ধ্যার পর ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সুবিধার্থে জেনারেটরের মাধ্যমে লাইটের ব্যবস্থা করেছি। যেহেতু ঈদকে সামনে রেখে এ সব পশুহাটে ব্যাপক হরে জালটাকার ব্যবহার হয়ে থাকে আর বিক্রেতাদের সুবিধার্থে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে সোনালী ব্যাংক গোকুলখালী বাজার শাখা ও অগ্রণী ব্যাংকে কমকর্তা সকাল থেকেয় হাটে জাল টাকার কারবার করতে না পারে তাই জালটাকা শনাক্তকারী মেশিন দিয়ে ক্রেতা এবং বিক্রেতারে টাকা গুনে দেয়ার কাজে সহায়তা করেন।

ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সুবিধার্থে সকাল থেকে প্রশাসনিক তৎপরতা দেখা গেছে।  ঢাকা, বরিশাল, চিটাগাং, কুয়াকাটা, সীতাকুণ্ডু ও ফরিদপুরের ব্যাপারী ও দলিয়ারপুর, ভালাইপুর, খাদিমপুর, দরবেশপুরে গরু ও ছাগল বিক্রেতারা অভিযোগ করে বলেন, গরুপ্রতি ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ের কাছ থেকে ৩শ টাকা নেয়ার কথা থাকলেও ৪৫০ টাকা হারে নেয়া হচ্ছে এবং ছাগল প্রতি উভয় মিলে ১১৫ টাকা খাজনা নেয়ার নিয়ম থাকলেও ৩০০ টাকা করে নেয়ার অভিযোগ করেন। তবে এ বিষয়ে হাটমালিক দেলোয়ার হোসেন দিপু জানান, ঈদ উপলক্ষে কিছু টাকা বেশি নেয়া হলেও ব্যাপারী ও বিক্রেতা যে অভিযোগ করেছেন তা সঠিক নয়।