চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের নিকট তেঘরি গ্রামের জমি হারানো হতদরিদ্র মানুষগুলোর অভিযোগ : প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্বাহী অফিসারকে নির্দেশ

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদরের তেঘরি গ্রামের হতদরিদ্র ভূমিহীন ও মন্দিরের জমি হারানো লোকজন জেলা প্রশাসকের নিকট জমি জালিয়াতির বিষয়টি অবহিত করেছেন। জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদ বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে নির্দেশ দিয়েছেন। অপরদিকে দলীল লেখক রমজান আলীকে বিষয়টির সমাধান না হওয়া পর্যন্ত সকল প্রকার দলীল লেখা থেকে বিরত থাকার জন্য সাবরেজিস্ট্রি অফিস থেকে মৌখিকভাবে নির্দেশ দিয়েছে বলেও জানা গেছে।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নবগঠিত গড়াইটুপি ইউনিয়নের তেঘরি গ্রামের জমি জালিয়াতী চক্রের চক্রান্তে পড়ে জমি হারানো হতদরিদ্র, ভূমিহীন ও মন্দির কমিটির সদস্যসহ প্রায় ২০ পরিবারের লোকজন গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদের সাথে সদর উপজেলা চত্বরে দেখা করেছেন। দেখা করে একই গ্রামের আ. সাত্তারের ছেলে মজিবর রহমান ও তার শ্যালক এরশাদ আলী জালিয়াতি করে ১শ নং তেঘরি কলাগাছি মৌজার ১৮ বিঘা ২১ শতক জমি রেজিস্ট্রি করে নেয়ার বিষয়টি অবহিত করেন। যে জমিতে রয়েছে ভূমিহীন ৬ পরিবারের বসত ঘর, সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের সার্বজনিন কালী মন্দির। জেলা প্রশাসক তাৎখণিক চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৃনাল কান্তি দে’কে বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। ভুক্তোভোগীরা পরক্ষনই নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে যান। তিনি ভুক্তোভোগীদের কাছ থেকে জমি জালিয়াতির ঘটনার বর্ণনা শোনেন। সেই সাথে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রগুলো দেখেন।

এসময় নির্বাহী অফিসার বলেন, সরকারি সম্পত্তি কেউ জালিয়াতি করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অপরদিকে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পুলক কুমার মণ্ডল বলেন, খাস খতিয়ানের জমি জালিয়াতি করে রেজিস্ট্রি হয়েছে জানতে পেরে তদন্তপূর্বক গতকাল জেলা প্রশাসক বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। প্রতিবেদনে সাথে জাল দলীল প্রতিয়মান হওয়ায় তার কপিও পাঠানো হয়েছে।

জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদ বলেন, সার্বিক বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে আইনের ঊর্ধ্বে কেউ না।

উল্লেখ্য, গত ২ জুলাই তেঘরি গ্রামের আ. সাত্তারের ছেলে মজিবর রহমান ও তার শ্যালক এরশাদ আলী দলীল লেখক রমজান আলীকে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে খারিজ ছাড়াই জালিয়াতির মাধ্যমে ১শ নং তেঘরি কলাগাছি মৌজার ১৮ বিঘা ২১ শতক জমি রেজিস্ট্রি করে নেন বলে একই গ্রামের কায়দার আলী, কুতুব আলী, বাবলুর রহমান, শরিফুল ইসলাম, আবুল কালাম, আ. গণি, আ. করিম, আ. রশিদ, ইস্রাফিল, বিল্লাল, ছাদেক, হারুন গঙ, মহিদুল ইসলাম, মামুন, তাজুল, নাজিমসহ তেঘরি সার্বজনিন কালী মন্দিরের সভাপতি শ্রী মাধব হালদার, সাধারণ সম্পাদক বাসুদেব শর্মা লিখিত অভিযোগে জানান।