চুয়াডাঙ্গা তেঘরির মজিবর গঙের বিরুদ্ধে জমি জালিয়াতির অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদরের তেঘরি গ্রামের মজিবর গঙের বিরুদ্ধে হতদরিদ্র ভূমিহীন ও মন্দিরের জমি জালিয়াতি করে রেজিস্ট্রি করে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তোভোগী ২০ পরিবার ও মন্দির কমিটির সদস্যরা এ ঘটনায় সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট গণপিটিশণের মাধ্যমে অভিযোগ করেছে বলে জানিয়েছেন। ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার ঝড় তুলেছে। সেই সাথে দলিল লেখক রমজান আলী, মজিবর ও তার সহযোগীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছেন ভুক্তোভোগীরা।
অভিযোগে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নবগঠিত গড়াইটুপি ইউনিয়নের তেঘরি গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে মজিবর রহমান ও তার শ্যালক এরশাদ আলী জালিয়াতি করে ১শ নং তেঘরি কলাগাছি মৌজার ১১৮৭, ১০৮০ ও ১৩৪২ নম্বরের তিনটি দলিল তৈরি করেন। যেখানে জমির পরিমাণ রয়েছে ১৮ বিঘা ২১ শতক। দলিল লেখক রমজান আলীকে ম্যানেজ করে প্রথমে ওই জমি মজিবর তার স্ত্রীর বড়বোন মালেকা খাতুনের নামে রেজিস্ট্রি দেখায়। পরবর্তীতে মজিবর ও এরশাদ মালেকার কাছ থেকে তার স্বামী সাবির বদ্দী ও ৪ বোনের নামে অর্ধেক এবং মজিবরের স্ত্রী জায়েদা খাতুনের নামে অর্ধেক সম্পত্তি প্রায় দু মাস আগে চুয়াডাঙ্গা সাব রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে ভুয়া দলিলকে ভায়া দলিল দেখিয়ে কৌশলে দানপত্রে মালিকানা পরিবর্তনে রেজিস্ট্রি করে নেয়। তবে কৌশলগত কারণে মজিবর ও এরশাদ নিজেদের নামে কোনো জমি নেননি। ঘটনা জানাজানি হয়ে পড়লে সকলের মাথায় বাজ ভেঙে পড়ার মতো হয় জমির মালিকদের। তেঘরি গ্রামের কায়দার আলী, কুতুব আলী, বাবলুর রহমান, শরিফুল ইসলাম, আবুল কালাম, আব্দুল গণি, আব্দুল করিম, আব্দুর রশিদ, ইসরাফিল, বিল্লাল, ছাদেক, হারুন গঙ, মহিদুল ইসলাম, মামুন, তাজুল, নাজিমসহ তেঘরি সার্বজনীন কালি মন্দিরের সভাপতি শ্রী মাধব হালদার, সাধারণ সম্পাদক বাসুদেব শর্মা লিখিত অভিযোগে জানান, মজিবর ও এরশাদ চক্রান্ত করে ভুয়া দলিল তৈরি করেছে যেখানে খাস খতিয়ানের তেঘরি সার্বজনীন কালি মন্দিরের ৩০ শতক জমি, ৬ ভূমিহীন পরিবারের ৩১ শতক জমিও রয়েছে। জালিয়াতি করে নেয়া জমিতে প্রত্যেকেরই বসতভিটা রয়েছে। এ ঘটনায় ভুক্তোভোগীরা বিষয়টি প্রথমে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পুলক কুমার ম-লকে মৌখিকভাবে এবং সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন বলে জানান।
এ ব্যাপারে দলিল লেখক রমজান আলী বলেন, মজিবর যে ভায়া দলিলের মাধ্যমে আমাকে দিয়ে জমি রেজিস্ট্রি করিয়েছে খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি সেই দলীলগুলোর নম্বর ও সাল ঠিক থাকলেও ক্রেতা বিক্রেতার নাম ঠিক নেই। ফলে দলীলগুলো ভুয়া বলে মনে হচ্ছে। তবে এর সমাধণ করার চেষ্টা করছি। ইউপি চেয়ারম্যান আকতার হোসেন বলেন, দলিল লেখককে বিষয়টি সংশোধনের জন্য বললেও তিনি টালবাহানা শুরু করে দিয়েছেন। এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৃনাল কান্তি দে এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) পুলক কুমার ম-ল বলেন, জাল প্রমানিত হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অপরদিকে এ ঘটনায় অনেকেরই মনে প্রশ্ন জেগেছে খারিজ ছাড়া জমিগুলো রেজিস্ট্রি হলো কিভাবে? ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার ঝড় তুলেছে। সেই সাথে অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছেন এলাকাবাসী। এ ব্যাপারে মজিবরের সাথে যোগাযোগ করা হলে মোবাইলের অপর প্রান্ত থেকে জনৈক মহিলা জানান, দলিল লেখক এমনটি করেছে। বিষয়টির প্রতি চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তোভোগী হতদরিদ্র পরিবারগুলো এবং মন্দির কমিটির সদস্যরা।