মাথাভাঙ্গা মনিটর: বার্সেলোনা সভাপতি জোসেপ মারিয়া বার্তোমেউ বেশ রাগত স্বরেই বলেছিলেন, ‘নেইমার এখন ইতিহাস। লিওনেল মেসিই বার্সার নেতা থাকবেন।’ একদিন পর বিমান দুর্ঘটনার শিকার ব্রাজিলিয়ান ক্লাব শাপেকোয়েন্সকে শ্রদ্ধা জানানো জোয়ান গ্যাম্পার ট্রফির প্রীতি খেলায় আর্জেন্টাইন জাদুকর এক গোল এবং দুটি এসিস্ট করে ৫-০ গোলে জিতিয়েছেন দলকে। নেতা নয় তো কী!
আবারও সত্য প্রমাণিত হলো পেশাদারী ফুটবলের প্রবাদের মতো হয়ে যাওয়া কথাটি: কারো জায়গাই অপূরণীয় নয়। নেইমারের জায়গায় কোচ আর্নেস্তো ভালভারদে খেলালেন বার্সার যুক একাডেমি থেকে উঠে আসা জেরার্ড লাজারোকে। ওসমান ডেমবেলে কিংবা ফিলিপে কটিনহো-কে ক্যাম্প ন্যু-তে আনার চেষ্টা চলছে। কিন্তু একটি গোল ও দুটিতে সহায়তা করে জেরার্ড দেখালেন, নেইমারের জায়গাটা নিতে প্রস্তুত তিনিও। তবে খেলার সবচেয়ে সুন্দর আর আবেগঘন মুহূর্তের কেন্দ্রে ছিলেন অ্যালান রুশেল। সেই রুশেল গত নভেম্বরে যিনি প্রাণ হারাতে পারতেন ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায়। ৩৫ মিনিট খেলার পর যখন মাঠ ছেড়ে উঠে যাচ্ছিলেন, ৬৫ হাজার ভক্তের সবাই দাঁড়িয়ে সম্মান জানিয়েছেন শাপেকোর বীরকে। দুর্ঘটনার পর এটাই রুশেলের প্রথম ম্যাচ। গত নভেম্বরে কোপা সুদামেরিকানার ফাইনালের প্রথম লেগে কলম্বিয়ার অ্যাটলেটিকো নাসিওনালের বিপক্ষে খেলতে মেদেলিন যাওয়ার পথে বিধ্বস্ত হয় শাপেকোয়েন্সের খেলোয়াড়-কর্মকর্তা বহনকারী বিমান। ওই দুর্ঘটনায় মারা যান ৭৭ যাত্রীর ৭১ জন । এদের মধ্যে ছিলেন ক্লাবটির ১৯ জন খেলোয়াড় ও কর্মকর্তা। দলের বেঁচে আছেন মাত্র তিনজন- রুশেল, নেতো এবং জ্যাকসন ফোলম্যান। সবাই এসেছিলেন ক্যাম্প ন্যু-তে।
খেলার ষষ্ঠ মিনিটে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে বাঁ-দিকে বল বাড়ান ইভান রাকিতিচ, ফাঁকায় পেয়ে অনায়াসে লক্ষ্যভেদ করেন জেরার্ড। পাঁচ মিনিট পর ২৫ গজ দূর থেকে জোরালো শটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন সের্হিও বুসকেতস। ২৮ মিনিটে জেরার্ডের বাড়ানো বল উঁচু শটে জালে পাঠান মেসি। ৫৫ মিনিটে মেসির পাস থেকে গোল করেন লুইস সুয়ারেজ। ৭৪ মিনিটে দলের পঞ্চম গোলটি করেন ডেনিস সুয়ারেজ। দুর্ঘটনার ১০ দিন পর শাপেকোয়েন্সকে শ্রদ্ধা জানাতে প্রীতি ম্যাচ খেলার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলো বার্সেলোনা। প্রাপ্ত অর্থ থেকে আড়াই লাখ ইউরো দান করা হবে ক্লাব পুনর্গঠনে। ৭১টি তারকাখচিত জার্সি পরে খেলতে নামে শাপেকোয়েন্সের খেলোয়াড়রা। ফোলম্যান এবং নেতোর বলে আলতো ছোঁয়ার শুরু হয় ম্যাচ। খেলার পর রুশেলের জার্সিতে নিজের নামাঙ্কিত করে দেন মেসি। শাপেকোয়েন্স তারকার প্রতি আর্জেন্টাইন জাদুকরের বার্তা ছিলো: আমাদের স্বপ্নগুলো জীবন্ত হয়ে উঠুক। খুব বেশি সময় নেই।