পানিবন্দি শতাধিক পরিবার ॥ তলিয়ে গেছে রাস্তাসহ মাঠের ফসল

দামুড়হুদায় একটানা বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত ॥ গৃহপালিত পশুপাখি নিয়ে বিপাকে জনগণ
বখতিয়ার হোসেন বকুল: একটানা তিনদিন বিরামহীন বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় পানিবন্দি অবস্থায় দামুড়হুদায় বসবাস করছে প্রায় শতাধিক পরিবার। তলিয়ে গেছে ধান, বেগুন, ঝালসহ পটোলক্ষেত। বিপাকে পড়েছে গৃহপালিত পশু গরু-ছাগল নিয়েও। সময়মতো বাইরে বের হতে না পেরে যারা সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া সাধারণ জনগণ। দু বেলা দু মুঠো খাবারের জন্য যাদের প্রতিদিন কাজে বের হতে হয় ওই সকল খেটে খাওয়া নি¤œ আয়ের লোকজনকে বাড়িতে বসে অলস সময় পার করতে হচ্ছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, দামুড়হুদা উপজেলা শহরের গ্রামীণ টাউয়ারের সামনের পিচরোডটি হাঁটু সমান পানিতে তলিয়ে গেছে। ওই নোংরা পানি মাড়িয়ে এলাকার শ শ মুসল্লিদের মসজিদে নামাজ পড়তে যেতে হয়। এছাড়া কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের ওই রাস্তা দিয়ে বই খাতা নিয়ে স্কুলে যাতায়াত করতে গিয়ে পড়তে হয় চরম সমস্যায়। ওই সড়কটি বিগত কয়েক বছর ধরে খানাখন্দে ভরে নোংরা পানি জমে থাকলেও সংস্কারের নেই কোনো উদ্যোগ। এলাকার সচেতন মহলের অনেকেই চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ওই রাস্তা দিয়ে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রতিনিয়ত যাতায়াত করলেও কারো যেন কোনো মাথাব্যথা নেই। রাস্তাটি জরুরি ভিত্তিতে সংস্কারের দাবি তুলেছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী। এছাড়া একটানা বৃষ্টিতে দামুড়হুদা দশমীপাড়ার আব্বাস আলী, আক্কাচ আলী, জাহাঙ্গীর, আলমগীর, ফিরোজ, বক্কর আলী, মমিন, নফিদুল, মতিয়ার, মজিদ, আজিবার, আমিন, কালাম, ছালেম, শরীফুল, আনার আলী, আশরাফুল, জিয়ারুল, চান্দু, লিটন, মিলন এবং ঘাটপাড়ার আমিরুল, শফি, ফারুক, বোতাম, তোমা, আখিতারা, লতিফ, করিম, জলিল, মোহাম্মদ আলী, কাদের, ফছি, ইয়াছিন ও মহাসিনের বাড়ির উঠোনসহ চারিদিকে পানিতে তলিয়ে গেছে। চারিদিক পানি থইথই করছে। ভুক্তভোগীরা বলেছেন, ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় তারা পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। তাছাড়া গৃহপালিত পশু গরু-ছাগল নিয়েও রয়েছেন বিপাকে। গরু-ছাগলের খাবারসহ থাকার জায়গা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন তারা।
দামুড়হুদা বাসস্ট্যান্ড পাড়ায় বসবাসকারী মতিয়ার রহমান মতি বলেছেন, বাড়ির উঠোনসহ রান্নাঘরের মধ্যেই হাঁটু সমান পানি জমে রয়েছে। চারদিকে ঝোপঝাড়ে ভর্তি হয়ে ভয়ে ভয়ে রাত কাটাতে হচ্ছে। দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলেছেন, যে সমস্ত রাস্তা পানিতে তলিয়ে গেছে ওই সমস্ত রাস্তাগুলো জরুরিভিত্তিতে মেরামতের ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরও বলেন, গত কয়েকদিন ধরে মাথাভাঙ্গা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেতে দেখা গেছে। এছাড়া চারদিক পানি জমে থাকায় বসতবাড়িতে সাপের উপদ্রব বৃদ্ধি পেতে পারে। সাপসহ মশামাছির হাত থেকে রক্ষা পেতে বাড়ির আশপাশের ঝোপঝাড় পরিষ্কার রাখার জন্য সকলকে পরামর্শও দিয়েছেন তিনি।