পাস ও জিপিএ–৫ দুটোই কমেছে : উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষায় গড় পাস ৬৮ দশমিক ৯১ শতাংশ
মাথাভাঙ্গা ডেস্ক: মাধ্যমিকের মতো উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষাতেও এবার পাসের হার কমেছে। ১০ শিক্ষাবোর্ডে এবার পাস করেছে ৬৮ দশমিক ৯১ শতাংশ শিক্ষার্থী। আর জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৭ হাজার ৯৬৯ জন শিক্ষার্থী। মূল্যায়ন পদ্ধতির পরিবর্তনের কারণে পাসের হার হ্রাস বলে মন্তব্য সংশ্লিষ্টদের। চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের ৯৮৪ জন পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ফেল করেছে ১৯৪ জন। যা হতাশাজনক। মেহেরপুর জেলার ১৯টি কলেজের মোট ৩ হাজার ৭০১ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পান করেছে ২ হাজার ৫৩১ জন।
দেশের দশটি শিক্ষাবোর্ডের অধীনে চলতি বছর অনুষ্ঠিত উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার এ ফল গতকাল রোববার সারাদেশে একযোগে প্রকাশ করা হয়। ফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সার্বিক পাসের হার কমার পেছনে ভূমিকা রেখেছে কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড। এ বোর্ডে এবার পাসের হার ৫০ শতাংশেরও কম। ১০টি শিক্ষা বোর্ডে গ্রেডিং পদ্ধতিতে ফল প্রকাশের ১৭তম বছরে এবারও সব বিষয়ে সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। পাসের হার কমার পাশাপাশি গতবছরের চেয়ে এবার জিপিএ-৫ কমেছে। গতকাল দুপুর ১টায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত সাংবাদিক সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ফলের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। এর আগে সকাল ১০টায় গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষাসমূহের ফল হস্তান্তর করেন শিক্ষামন্ত্রী। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন শিক্ষাসচিব সোহরাব হোসাইনসহ শিক্ষা বোর্ডসমূহের চেয়ারম্যানরা। মূল্যায়ন পদ্ধতির পরিবর্তনের কারণে পাসের হার কমেছে বলে মনে করেন শিক্ষামন্ত্রী। এ কারণে তিনি বিস্মিতও হননি বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন। ঢাকা বোর্ড: পাসের হার ৬৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ। এই বোর্ডে এবার পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ৩ লাখ ৩৩ হাজার ৭৩৮ জন। পাস করে ২ লাখ ৩২ হাজার ৭৪১ জন। এর মধ্যে ১ লাখ ১৭ হাজার ৮ জন ছাত্র এবং ১ লাখ ১৫ হাজার ৭৩৩ জন ছাত্রী। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৮ হাজার ৯৩০ জন। রাজশাহী বোর্ড: পাসের হার ৭১ দশমিক ৩০ শতাংশ। এই বোর্ডে থেকে এবার ১ লাখ ২১ হাজার ৮৩৬ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করে ৮৬ হাজার ৮৭২ জন। এর মধ্যে ৪৫ হাজার ২৪০ জন ছাত্র এবং ৪১ হাজার ৬৩২ জন ছাত্রী। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫ হাজার ২৯৪ জন। কুমিল্লা বোর্ড: পাসের হার ৪৯ দশমিক ৫২ শতাংশ। এই বোর্ডে এবার ১ লাখ ৩৭২ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। পাস করে ৪৯ হাজার ৭০৪ জন। এর মধ্যে ২৩ হাজার ৭৯২ জন ছাত্র এবং ২৫ হাজার ৯১২জন ছাত্রী। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬৭৮ জন। যশোর বোর্ড: পাসের হার ৭০ দশমিক ০২ শতাংশ। এই বোর্ডে এবার ৯৫ হাজার ৬৯২ জন পরীক্ষায় অংশ নেয়। ৬৭ হাজার ২ জন পাস করে। এর মধ্যে ৩৩ হাজার ৮০৮ জন ছাত্র এবং ৩৩ হাজার ১৯৪ জন ছাত্রী। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ হাজার ৪৪৭ জন। চট্টগ্রাম বোর্ড : পাসের হার ৬১ দশমিক ০৯ শতাংশ। এই বোর্ডে পরীক্ষায় অংশ নেয়া ৮২ হাজার ৪১৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৫০ হাজার ৩৪৭ জন পাস করে। এর মধ্যে ২৪ হাজার ৭১৬ জন ছাত্র এবং ২৫ হাজার ৬৩১ জন ছাত্রী। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ হাজার ৩৯১ জন।বরিশাল বোর্ড: পাসের হার ৭০ দশমিক ২৮ শতাংশ। এই বোর্ডে এবার ৬০ হাজার ৪৮৬ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করে ৪২ হাজার ৫০৭ জন। এর মধ্যে ২১ হাজার ১১১ জন ছাত্র এবং ২১ হাজার ৩৯৬ জন ছাত্রী। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৮১৫ জন। সিলেট বোর্ড: পাসের হার ৭২ শতাংশ। এই বোর্ডে এবার ৬৫ হাজার পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। পাস করে ৪৬ হাজার ৭৩৭ জন। উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২১ হাজার ৩০ জন ছাত্র এবং ২৫ হাজার ৭৬৭ জন ছাত্রী। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭০০ জন। দিনাজপুর বোর্ড: পাসের হার ৬৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ। এই বোর্ডে এবার ১ লাখ ৫ হাজার ৪০০ পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। পাস করে ৬৮ হাজার ৯৭২ জন। উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৩৫ হাজার ২ জন ছাত্র এবং ৩৩ হাজার ৯৭০ জন ছাত্রী। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ হাজার ৯৮৭ জন। মাদ্রাসা বোর্ড: পাসের হার ৭৭ দশমিক ০২ শতাংশ। এ বোর্ডের অধীনে এবার ৯৬ হাজার ৮০২ পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। পাস করে ৭৪ হাজার ৫৬১ জন। উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৪৩ হাজার ৬১২ জন ছাত্র এবং ৩০ হাজার ৯৪৯ জন ছাত্রী। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ হাজার ৮১৫ জন। কারিগরি শিক্ষা বোর্ড: পাসের হার ৮১ দশমিক ৩৩ শতাংশ। এ বোর্ডের অধীনে এবার ৯৭ হাজার ১৪ পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। পাস করে ৭৮ হাজার ৯০৪ জন। উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৫৪ হাজার ৫৮০ জন ছাত্র এবং ২৪ হাজার ৩২৪ জন ছাত্রী। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ হাজার ৬৬৯ জন।
চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ থেকে মোট ৯৮৪ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। মোট জিপিএ ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৭৪। এরমধ্যে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ ৫ পেয়েছে ৪৩, মানবিক বিভাগ থেকে ২৯ ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে ২ জন। এছাড়া বিভিন্ন বিভাগ থেকে মোট ৩৫০ জন ‘এ’ পেয়েছে। অকৃতকার্য হয়েছে ১৯৪ জন। চুয়াডাঙ্গা আদর্শ সরকারি মহিলা কলেজ থেকে এবার মোট ৫৮০ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এরমধ্যে মানবিক বিভাগ থেকে মাত্র ১ জন জিপিএ ৫ পেয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন বিভাগ থেকে ৩৯ জন ‘এ’ পেয়েছে। অকৃতকার্য হয়েছে ২৫৩ জন। চুয়াডাঙ্গা পৌর ডিগ্রি কলেজ থেকে মোট ৪শ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে কেউই জিপিএ ৫ পায়নি। বিভিন্ন বিভাগ থেকে ১৯ জন ‘এ’ পেয়েছে। অকৃতকার্য হয়েছে ১৯৮ জন যা মোট পরীক্ষার্থীর প্রায় অর্ধেক। এছাড়া জেলা সদরের বড় শলুয়া নিউ মডেল কলেজ থেকে ১৮৪ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ ৫ পেয়েছে ৩ জন। এছাড়া বিভিন্ন বিভাগ থেকে ৭৩ জন ‘এ’ পেয়েছে। অকৃতকার্য হয়েছে ১৮জন। তেতুল শেখ কলেজ থেকে মোট ৪১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মানবিক বিভাগ থেকে ৩ জন জিপিএ ৫ পেয়েছে। বিভিন্ন বিভাগ থেকে ‘এ’ পেয়েছে ১৬ জন। অকৃতকার্য হয়েছে ৬ জন। বদরগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ থেকে ৩৬১ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে কেউই জিপিএ ৫ পায়নি। তবে বিভিন্ন বিভাগ থেকে ‘এ’ পেয়েছে ৬১ এবং অকৃতকার্য হয়েছে ৫১ জন।
চুয়াডাঙ্গা ফাজিল মাদরাসা থেকে ৩০ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। তবে কেউই জিপিএ ৫ পায়নি। ‘এ’ পেয়েছে ৭ জন এবং ৩ জন অকৃতকার্য হয়েছে। বদরগঞ্জ বাকীবিল্লাহ কামিল মাদরাসা থেকে ৪৭ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। জিপিএ ৫ পেয়েছে ৫ জন, ‘এ’ পেয়েছে ১৩ ও অকৃতকার্য হয়েছে ১০ জন শিক্ষার্থী। কার্পাসডাঙ্গা ফাজিল মাদরাসা থেকে ৪৪ পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ৩৩ জন। দর্শনা দারুস সুন্নত ফাজিল মাদরাসা থেকে ৫২ জনের মধ্যে পাস করেছে ৪৩। কোন শিক্ষার্থী জিপিএ পায়নি। জীবননগর আলিম মাদরাসা এবার ৫১ পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ৫০ জন। হাসাদাহ ফাজিল মাদরাসা ৬১ পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ৬০ জন। আন্দুলবাড়িয়া আশরাফিয়া আলিম মাদরাসা থেকে ১৯ পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ১৭। আলমডাঙ্গার নওলামারী আলিম মাদরাসা ১১ জনে পাস করেছে ৮ জন। আলমডাঙ্গা এসআই আলিম মাদরাসা পাস করেছ ২৩ পরীক্ষার্থী ৩৬ জন। উসমানপুর-প্রাগপুর ফাজিল মাদরাসা থেকে ১৮ পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ১৫ জন। কাবিলনগর নসরুল উলুম আলিম মাদরাসায় ১৯ জন অংশ নিয়ে পাস করেছে ১০ জন।
সরোজগঞ্জ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, সরোজগঞ্জ তেতুল শেখ কলেজ থেকে ৪১ জন ছাত্রছাত্রী অংশগ্রহণ করে পাস করেছে ৩৫ জন। অকৃতকার্য হয়েছে ৬ জন। ফলাফলে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩ জন।
আলমডাঙ্গা ব্যুরো জানিয়েছে, আলমডাঙ্গা উপজেলায় এইচএসসি পরীক্ষায় ১ হাজার ৫৪৯ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ৭ জন জিপিএ-৫সহ ৯২৬ জন। পাসের হার প্রায় ৬০ ভাগ। সর্বাধিক জিপিএ-৫ পেয়েছে আলমডাঙ্গা ডিগ্রি কলেজে আর সর্বোচ্চ পাসের হার বরাবরের মতো খাসকররা কলেজ ধরে রেখেছে। আলমডাঙ্গা ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় এ বছর ৬৬৪ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৪১৮ জন পাস করেছে। এদের মধ্যে ৫ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। আলমডাঙ্গা মহিলা ডিগ্রি কলেজ থেকে ১৬৫ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ১০৪ জন পাস করেছে। হারদী এমএস জোহা ডিগ্রি কলেজ থেকে ২৮৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১ জন জিপিএ-৫সহ ১৩৪ জন শিক্ষার্থী পাস করেছে। নিগার সিদ্দিক কলেজ থেকে ১৫৭ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে ১০০ জন পাস করেছে। খাসকররা কলেজ থেকে ৯৩ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ১ জন জিপিএ-৫সহ ৬৩ জন পাস করেছে। জামজামি মহিলা কলেজ থেকে ১৮ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ১১ জন পাস করেছে। হাটবোয়ালিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ৯৮ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ৫৬ জন পাস করেছে। ডা. আফছার উদ্দিন কলেজ থেকে ৬৮ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রণ করে ৪০ জন শিক্ষার্থী পাস করেছে।
জীবননগর ব্যুরো জানিয়েছে, জীবননগর উপজেলায় ৪টি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭ জন। সর্বাধিক ৫টি জিপিএ-৫ পেয়ে উপজেলার শীর্ষে এবার অবস্থান করছে জীবননগর ডিগ্রি কলেজ। উপজেলার আন্দুলবাড়িয়া কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৪ জন পরীক্ষার্থীর একজনও পাস করেনি।
জীবননগর ডিগ্রি কলেজ থেকে ৪৩৩ জন পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে ২৩৭ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫ জন। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৭৩ জন পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে ৫৭ জন। জিপিএি-৫ পেয়েছে ২ জন। মানবিক বিভাগ থেকে ৩৩২ জন পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে ১৬১ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩ জন। ব্যবসায় শিক্ষায় ২৮ জন পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে ১৯ জন। জীবননগর আদর্শ মহিলা ডিগ্রি কলেজ থেকে ১৪৬ জন পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে ৯৫ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ জন। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৭ জন পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে ৫ জন। মানবিক বিভাগ হতে ১১৭ জন পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে ৮৩ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ জন। বাণিজ্য বিভাগ থেকে ১০ জন পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে ৭ জন। উথলী মহাবিদ্যালয় থেকে ১৩৭ জন পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে ৭৫ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ জন। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১৪ জন পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে ৪ জন। মানবিক বিভাগ থেকে ১১১ জন পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে ৬৪ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ জন। ব্যবসায় শিক্ষায় ১২ জন পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে ৭ জন ও আন্দুলবাড়িয়া কলেজ থেকে ১৩৫ জন পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে ৬৫ জন। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৪ জন পরীক্ষার্থীর একজনও পাস করেনি। মানবিক বিভাগ থেকে ১১৭ জন পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে ৬০ জন ও ব্যবসায় শিক্ষায় ১৪ জন পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে ৫ জন।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, চলতি বছর যশোর বোর্ডের অধীনে এইচএসসি পরীক্ষায় মেহেরপুর জেলার তিন উপজেলার ১৯ টি কলেজ থেকে মোট ৩ হাজার ৭০১ জন অংশ নিয়ে পাশ করেছে ২ হাজার ৫৩১ জন। এদের মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছে ৩১ জন। পাশের শতকরা হার ৬৮ দশমিক ৩৯ ভাগ।
মেহেরপুর জেলা সদরের মোট ৫টি কলেজ থেকে এক হাজার ৯২৩ জন অংশ নিয়ে এক হাজার ২১৩ জন পাস করেছে। এদের মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছে ২১ জন। এদের মধ্যে মেহেরপুর সরকারি কলেজ থেকে ৬০০ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৩৯০ জন পাস করেছে। এদের মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছে মাত্র ৩ জন। সরকারি মহিলা কলেজ থেকে ৬৯২ জন অংশ নিয়ে ১৪ জন জিপিএ-৫সহ ৪৬০ জন পাস করেছে। পৌর ডিগ্রি কলেজ থেকে ৩৪৪ জন অংশ নিয়ে ১৯৬ জন পাস করেছে। যাদের মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছে ৪ জন, এআরবি কলেজ থেকে ১০২ জন অংশ নিয়ে ৭৬ জন পাস করেছে। যাদুখালী স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ১৮৫ জন অংশ নিয়ে ৯১ জন পাস করেছে।
গাংনী উপজেলার মোট ১২টি কলেজ থেকে এক হাজার ২৬৯ জন অংশগ্রহণ করে ৯৭৬ জন পাস করেছে। এদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১০ জন। এদের মধ্যে গাংনী ডিগ্রি কলেজ থেকে ১৫০ জন অংশ নিয়ে ৯০ জন পাস করেছে। গাংনী মহিলা কলেজ থেকে ২৪৫ জন অংশ নিয়ে ১৭৫ জন পাস করেছে। এদের মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছে মাত্র একজন। গাংনী পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ২৫৩ জন অংশ নিয়ে ১৭২ জন পাস করেছে। এদের মধ্যে ৩ জন জিপিএ ৫ পেয়েছে। বামন্দী-নিশিপুর কলেজ থেকে ৮৬ জন অংশ নিয়ে ৮২ জন পাস করেছে। জিপিএ ৫ পেয়েছে একজন। কাজিপুর কলেজ থেকে ১০৮ জন অংশ নিয়ে পাস করেছে ১০২ জন। জিপিএ ৫ পেয়েছে একজন। মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল গনি কলেজ থেকে ৩১ জন অংশ নিয়ে ২৮ জন পাস করেছে। ভাটপাড়া বিএম কলেজ থেকে ২২ জন অংশ নিয়ে ১৩ জন পাস করেছে। করমদী কলেজ থেকে ৭০ জন অংশ নিয়ে ৬৩ জন পাস করেছে। জিপিএ ৫ পেয়েছে একজন। তেরাইল-জোড়পুকুরিয়া কলেজ থেকে ৭৭ জন অংশ নিয়ে ৬৯ জন পাস করেছে। সন্ধানী স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ১৭৯ জন অংশ নিয়ে ১৫১ জন পাস করেছে। এদের মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছে ৩ জন। কুতুবপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ৪৫ জন অংশ নিয়ে ৩১ জন পাস করেছে। এদিকে গাংনী উপজেলার মড়কা জাগরণী কলেজের কোনো পরীক্ষার্থী পাস করেনি। ওই কলেজ থেকে এ বছর ৩ জন এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সবাই ফেল করেছে।
অন্যদিকে মুজিবনগর উপজেলার ২টি কলেজ থেকে ৫০৯ জন অংশ নিয়ে ৩৪২ জন পাস করেছে। এদের মধ্যে মুজিবনগর সরকারি ডিগ্রি কলেজ থেকে ৪৫১ জন অংশ নিয়ে ৩১৫ জন পাস করেছে এবং মহাজনপুর কলেজ থেকে ৫৮ জন অংশ নিয়ে ২৭ জন পাস করেছে।
এদিকে এইচএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় মেহেরপুর সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ১৩৬ জন অংশ নিয়ে ১১৯ জন পাস করেছে। এদের মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছে একজন।
এছাড়া এইচএসসি (বিএম) পরীক্ষায় সদর উপজেলার মেহেরপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজ থেকে ৩১ জন অংশ নিয়ে ২৮ জন পাস করেছে। মুক্তিযোদ্ধা আহম্মদ আলী বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজ থেকে ৮৫ জন অংশ নিয়ে ৭৩ জন পাস করেছে। বদরুননেছা বিএম কলেজ থেকে ৮ জন অংশ নিয়ে সকলেই পাস করেছে। গাংনী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজের ১৪২ জনে ১১৬ জন পাস করেছে। এদের মধ্যে ৫ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। ধানখোলা বিএম কলেজের ৩২ জন পরীক্ষা দিয়ে শতভাগ পাস করেছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ জন। তেরাইল-জোড়পুকুরিয়া কলেজের ৭০ জনের মধ্যে ৫৫ জন পাস করেছে। গাংনী সরকারী ডিগ্রি কলেজের ৫২ জনের মধ্যে পাস করেছে ৪৩ জন। একজন জিপিএ-৫ পেয়েছে। হাড়াভাঙ্গা ডিএস ফাজিল মাদরাসার ৫৫ জনে ৪২ জন পাস করেছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ জন। গাংনী বিএম (বাঁশবাড়িয়া) ৮৬ জনে পাস করেছে ৭৩ জন। একজন জিপিএ-৫ পেয়েছে। এদিকে মুজিবনগর উপজেলার বাগোয়ান টেকনিক্যাল কলেজ থেকে ৮২ জন অংশ নিয়ে ৬০ জন পাস করেছে। এদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫ জন।
অপরদিকে বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের অধীনে আলিম পরীক্ষায় ১৫৬ জন অংশ নিয়ে মাত্র ৬৩ জন পাস করেছে। এদের মধ্যে মেহেরপুর দারুল উলুম আহমদিয়া ফাজিল মাদরাসা থেকে ৪৪ জন অংশ নিয়ে ২০ জন, আমঝুপি মাদরাসা থেকে ২৭ জন অংশ নিয়ে ১৫ জন, মুজিবনগরের মানিকনগর মাদরাসা থেকে ২৪ জন অংশ নিয়ে ১৫ জন, গাংনীর মানিকদিয়া মাদরাসা থেকে ১৯ জন অংশ নিয়ে ৯ জন, গাংনীর ছিদ্দিকিয়া মাদরাসা থেকে ১২ জন অংশ নিয়ে মাত্র ২ জন ও হাড়াভাঙ্গা মাদরাসা থেকে ৩০ জন অংশ নিয়ে পাস করেছে ২২ জন।