চুয়াডাঙ্গা জীবননগরের আন্দুলবাড়িয়ার রাজধানীপাড়ায় ভয়াবহ দুর্ঘটনা ॥ গ্যাসের চুলা বিক্রেতার দায়িত্বজ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: নতুন গ্যাস সিলিন্ডার আর চুলা কিনে মা ছেলেই জ্বালানোর চেষ্টা করতে গিয়ে আগুনে পুড়ে দুজনই এখন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। গতকাল শুক্রবার বিকেলে রান্নাঘরে রান্নার জন্য চুলা জ্বালতেই দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে শুরু করে। অগ্নিদগ্ধ মা হাবিবা সুলতানা (৫০) ও ছেলে খন্দকার তানভীর আহমেদকে (১৩) আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে নেয়া হয়েছে।
হাবিবা সুলতানার স্বামী মৃত খন্দকার নাসির উদ্দীন আহমেদ চুয়াডাঙ্গা জীবননগরের আন্দুলবাড়িয়া এলাকার সংবাদপত্র সরবরাহকারী। দৈনিক মাথাভাঙ্গাসহ ঢাকার পত্রপত্রিকার এজেন্ট হিসেবে দীর্ঘদিন সুনামের সাথে দায়িত্ব পালনের একপর্যায়ে তিনি ইন্তেকাল করলে তার স্ত্রীই ব্যবসার হাল ধরেন। ছেলে তানভীর আহমেদ স্কুলছাত্র। তার শরীরের প্রায় ৬০ শতাংশ ও হাবিবা সুলতানার শরীরের প্রায় ৪০ শতাংশ পুড়ে গেছে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. কানিজ নাঈমা এ তথ্য জানিয়ে বলেছেন, অবস্থা যেহেতু গুরুতর, সেহেতু দ্রুত ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। গতকালই এদেরকে ঢাকায় নেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, হাবিবা সুলতানা একজন সংগ্রামী নারী। দু মেয়ে এক ছেলে। বড় মেয়ে লেখাপড়া শেষ করে ঢাকায় মোবাইলফোন অপারেটর কোম্পানিতে কর্মরত। ছোট মেয়ে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের ছাত্রী। ছেলে খন্দকার তানভীর আহমেদ আন্দুলবাড়িয়া বহুমুখি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্র। ছেলে তানভীরকে নিয়ে হাবিবা খাতুন তার স্বামীর ভিটে আন্দুলবাড়িয়া রাজধানীপাড়ার বাড়িতেই বসবাস করে আসছিলেন। প্রতিবেশীরা বলেছেন, গতপরশু বৃহস্পতিবার মা-ছেলে দুজনে বাজার থেকে গ্যাস সিলিন্ডার ও চুলা কিনে বাড়ির রান্নাঘরে বসান। নিজেরাই চুলায় গ্যাস সংযোগ করে জ্বালানোর চেষ্টা করেন। গত বৃহস্পতিবার জ্বালানোর চেষ্টা করে না পেরে রেখে দেন। গতকাল সকালে পুনরায় চেষ্টা করলে গ্যাস সিলিন্ডারের পাইপ লিক করে। ফলে গ্যাস সিলিন্ডার ও গ্যাসের চুলা রেখে পাশেই কাঠ জ্বালানো চুলায় রান্না শুরু করেন। আগুন দিতেই দুপ করে জ্বলে ওঠে আগুন। আগুনের গুলায় ওরা মা-ছেলে মুহূর্তের মধ্যেই ঝলসে যায়। দ্রুত উদ্ধার করে নেয়া হয় হাসপাতালে। একই সাথে অনেকেই প্রশ্ন তুলে বলেন, নতুন গ্যাস সিলিন্ডার ও নতুন চুলা যে দোকান থেকে কিনেছে সেই দোকান থেকে কেন সর্তক করে দেয়া হয়নি, কেনোই বা মিস্ত্রি ছাড়াই নিজেদের ঠিক করে নেয়ার সুযোগ দিয়েছে? নাকি গ্যাস সিলিন্ডারই ছিলো ত্রুটিযুক্ত? তা না হলে গ্যাস বের হয়ে রান্নাঘরে গ্যাস ছড়িয়ে থাকলো কেন?
হাবিবা সুলতানা ও তার ছেলে খন্দকার তানভীর আহমেদের দ্রুত সুস্থতা কামনায় সকলের নিকট দোয়া প্রার্থনা করেছে মাথাভাঙ্গা পরিবার।