ছেলেধরা গুজবে গাংনীতে মানসিক প্রতিবন্ধী আটক ॥ আবেগঘন পরিবেশে পরিবারে ফেরত

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী উপজেলার মহাম্মদপুর গ্রামে এক মানসিক প্রতিবন্ধীকে আটক করেছে গ্রামবাসী। ছেলেধরা সন্দেহে গতকাল সোমাবার দুপুরে তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। অবশ্য এর মধ্যদিয়ে প্রায় দুই সপ্তাহ পর মানসিক প্রতিবন্ধীকে খুঁজে পেলেন তার ছেলে। গাংনী থানায় বাবাকে নিতে এসে বাপ-ছেলের এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
মানসিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তির নাম মঞ্জিল হোসেন (৫৬)। তিনি পাবনার ঈশ^রদী উপজেলার ভারইমারী উপজেলার মৃত সাহেব আলী বেপারির ছেলে।
স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, মঞ্জিল হোসেন পাগলের বেশে ঘুরতে ঘুরতে গতকাল দুপুরে মহাম্মদপুর গ্রামের গিয়ে পৌঁছান। এ সময় গ্রামের কতিপয় স্বার্থান্বেষী লোক তাকে ছেলেধরা হিসেবে অপপ্রচার করে। এতে তিনি জনরোষে পড়েন। তবে পুলিশের তড়িৎ পদক্ষেপে মানসিক প্রতিবন্ধীকে দ্রুত উদ্ধার করা সম্ভব হয়।
গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, তিনি মানসিক প্রতিবন্ধী হলেও ভাঙা ভাঙা কথা বলতে পারেন। বেশ কিছুক্ষণ চেষ্টার পর তার নাম-ঠিকানার কিছুটা বের করা হয়। পরে সম্ভাব্য স্থানে খোঁজ নিয়ে তার পরিচয় নিশ্চিত হয় পুলিশ। খবর পেয়ে রাতে মানসিক প্রতিবন্ধীর ছেলে রতন বেপারিসহ পরিবারের লোকজন গাংনী থানায় পৌঁছান। রতনের কাছে তার পিতাকে বুঝিয়ে দেয়া হয়। রাতেই তারা বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন।
মানসিক প্রতিবন্ধীর ছেলে রতন বেপারি গাংনী থানায় পিতাকে পেয়ে জড়িয়ে ধরেন। তার দুই চোখ পানিতে টলমল করছিলো। এক আবেগঘন পরিবেশের মধ্য দিয়ে তিনি পিতাকে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন।
রতন বেপারি বলেন, ২৪ বছর আগে তার পিতা মানসিক ভারসম্য হারিয়ে ফেলেন। পাবনা মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসায় কিছুটা সুস্থ্য হয়েছেন। মাঝেমধ্যেই তিনি বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন। সপ্তাহ দুয়েক আগে তিনি বড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে যাননি। সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে সন্ধান করেও ব্যর্থ হই। পিতাকে কাছে পেয়ে পুলিশসহ সংশ্লিষ্ঠ সকলের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন তিনি।
মানসিক প্রতিবন্ধীকে অক্ষত অবস্থায় পরিবারে ফিরিয়ে দেয়া সম্ভব হয়েছে জানিয়ে গাংনী থানার ওসি বলেন, ছেলেধরা গুজব যারা ছড়াচ্ছে তাদের নামের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। দুয়েক দিনের মধ্যে তালিকা তৈরি সম্পন্ন করা হবে। যারা এই গুজব ছড়িয়ে ফায়দা লুটতে চাচ্ছে তাদে বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দিকে যাচ্ছে পুলিশ।