দর্শনা অফিস: দামুড়হুদার বিভিন্ন ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যরা পৃথক পৃথকভাবে মাদক ও চোরাচালানবিরোধী অভিযান চালিয়ে আটক করেছে ২৫ জনকে। উদ্ধার করা হয়েছে মাদকদ্রব্য ও চোরাচালানি মালামাল। আটককৃতদের বিরুদ্ধ থানায় আলাদা আলাদাভাবে মামলা দায়ের করেছে বিজিবি। গত মঙ্গলবার বেলা ৫টার দিকে দামুড়হুদার কুড়–লগাছি ইউনিয়নের ঠাকুরপুর বিজিবি ক্যাম্পের নায়েক রেজাউল ইসলাম ও রাসেল সিকদার সঙ্গীয় সদস্যদর নিয়ে অভিযান চালিয়ে ঠাকুরপুর সীমান্তের ৮৮ নং মেন পিলারের কাছ থেকে আটক করেছেন চাকুলিয়া গ্রামের মুনসুর আলী বিশ্বাসের ছেলে হেলাল উদ্দিনকে (৩৭)। বিজিবির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, হেলাল গরু পাচার ও চোরাচালানে উৎসাহিত করণের পাশাপাশি এলাকায় চাঁদাবাজি করে থাকে। এ ঘটনায় নায়েক রেজাউল ইসলাম বাদি হেলালের বিরুদ্ধে দামুড়হুদা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। শনিবার বেলা ৪টার দিকে দামুড়হুদার মুন্সিপুর বিজিবি ক্যাম্পের নায়েক বীরেন্দ্র গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সঙ্গীয় সদস্যদের নিয়ে অভিযান চালান মুন্সিপুর বাঁশতলা নামক স্থানে। ওই স্থানে আটক করা হয় দামুড়হুদার কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের আরামডাঙ্গা গ্রামের ফকির বিশ্বাসের ছেলে তাহাজ্জল ইসলাম (২১), বাবু খার ছেলে রায়হান উদ্দিনকে (২০)। আটককৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে দুটি ভারতীয় বাইসাইকেল। এ ঘটনায় নায়েক বীরেন্দ্র বাদি হয়ে আটককৃতদের বিরুদ্ধে দামুড়হুদা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। একইদিন বিকেলে ঠাকুরপুর বিজিবি ক্যাম্পের নায়েব সুবেদার ইসলাম উদ্দিন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সঙ্গীয় সদস্যদের নিয়ে অভিযান চালান চাকুলিয়া মাঠে। আটক করেন চাকুলিয়া গ্রামের সালাউদ্দিনের ছেলে নেপা (৩০), আ. হালীমের ছেলে বিশারদ (২৮), জামাল উদ্দিনের ছেল কুদ্দুস (৪০) ও ঠাকুরপুরের মান্দার আলীর ছেলে আসাদুলকে (৪১)। বিজিবির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আটককৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ৪০ বোতল ফেনসিডিল। এ ঘটনায় নায়েব সুবেদার ইসলাম উদ্দিন বাদি হয়ে আটককৃতদের বিরুদ্ধে দামুড়হুদা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। একইদিন বেলা ৫টার দিকে দামুড়হুদা বড়বলদিয়া বিজিবি ক্যাম্পের হাবিলদার আরিফুল ইসলাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সঙ্গীয় সদস্যদের নিয়ে মাদকবিরোধী অভিযান চালান ছোটবলদিয়া মাঠে। এ অভিযানে বিজিবি সদস্যরা আটক করেন, পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের কামারপাড়ার আব্দুস সাত্তার বিশ্বাসের ছেলে আসাদুল হক (৪৫), মজিবর বিশ্বাসের ছেলে মহিউদ্দিন (৩৬) ও খোরশেদ আলমের ছেলে ফারুক হোসেনকে (২২)। বিজিবির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আটককৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ৪৫ বোতল ফেনসিডিল। এ ঘটনায় হাবিলদার আরিফুল ইসলাম বাদি হয়ে আটককৃতদের বিরুদ্ধে দামুড়হুদা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। একই দিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে হুদাপাড়া বিজিবি ক্যাম্পের হাবিলদার আলীমুজ্জামান সঙ্গীয় সদস্যদের নিয়ে অভিযান চালিয়েছে হুদাপাড়া বাঁশঝাড় নামকস্থান থেকে আটক করেছে ২ জন অভিযুক্ত মাদককারবারীকে। আটককৃত হলো হুদাপাড়ার কালু কয়ালের ছেলে আলমগীর (২৪) ও আবুল হোসেনের ছেলে নবীকে (২৬)। বিজিবির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আটককৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ২৪ বোতল ফেনসিডিল। এ ঘটনায় হাবিলদার আলীমুজ্জামান বাদী হয়ে আটককৃত ২ জনের বিরুদ্ধে দামুড়হুদা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। সন্ধ্যার পর জগন্নাথপুর বিজিবি ক্যাম্পের নায়েব সুবেদার আ. বারেক শেখ সঙ্গীয় সদস্যদের নিয়ে মাদকবিরোধী অভিযান চালান হুদাপাড়া মাঠে। মাঠ থেকে ২৪ বোতল ফেনসিডিলসহ আটক করা হয়েছে, হুদাপাড়া গ্রামের আ. মান্নানের ছেলে মফিজুল (৩২) ও তাজেম ম-লের ছেলে রফিকুলকে (৪৫)। আটককৃত ২ জনের বিরুদ্ধে নায়েব সুবেদার আ. বারেক বাদী হয়ে দামুড়হুদা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। একইদিন রাত ৯টার দিকে দর্শনা বিজিবি ক্যাম্পের হাবিলদার আশানুল হক সঙ্গীয় সদস্যদের নিয়ে মাদকবিরোধী অভিযান চালান দর্শনা পৌর শহরের ঈশ্বরচন্দ্রপুরে। বিজিবি সদস্যরা ঈশ্বরচন্দ্রপুর ৪ রাস্তার মোড় থেকে ১২ বোতল ফেনসিডিলসহ আটক করেছেন ওই মহল্লার হাবিবুর রহমানের ছেলে আরাফাতকে (৪০)। হাবিলদার আশানুল হক বাদি হয়ে আরাফাতের বিরুদ্ধে দামুড়হুদা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। পরেরদিন রাত ১টার দিকে দর্শনা কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার জাহাঙ্গীর হোসেন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে মাদকবিরোধী অভিযান চালান ঈশ্বরচন্দ্রপুর মাঠে। ওই মাঠ থেকে ১৩ বোতল ফেনসিডিলসহ আটক করেছেন ঈশ্বরচন্দ্রপুরের সাবদার মিয়ার ছেলে টুটুলকে (৩২)। সুবেদার জাহাঙ্গীর হোসেন বাদি হয়ে টুটুলের বিরুদ্ধে দামুড়হুদা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। রাত দেড়টার দিকে দামুড়হুদার ফুলবাড়ী বিজিবি ক্যাম্পের নায়েব সুবেদার মতিউর রহমান সঙ্গীয় সদস্যদের নিয়ে মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়ে ওই গ্রামের আজিম উদ্দিনের ছেলে মন্টুকে (৪০) ১০ বোতল ফেনসিডিলসহ আটক করেছেন। নায়েব সুবেদার মতিউর রহমান বাদি হয়ে মন্টুর বিরুদ্ধে দামুড়হুদা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। একই রাত দেড়টার দিকে দামুড়হুদার সুলতানপুর বিজিবি ক্যাম্পের নায়েব সুবেদার তোতা মিয়া সঙ্গীয় সদস্যদের নিয়ে মাদকবিরোধী অভিযান চালান ঝাঝাঁডাঙ্গা সড়কে। এ সময় আটক করা হয় দামুড়হুদার পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের নাস্তিপুর গ্রামের আফাজ উদ্দিনের ছেল ইয়াকুব (৩০), ঝাঝাডাঙ্গা গ্রামের মুন্নাফের ছেলে সুমন (২৮) ও কসর উদ্দিনের ছেলে আল আমিনকে (৩০)। আটককৃতদের কাছ থেকে ৯০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে বলে বিজিবির তরফ থেকে জানানো হয়েছে। এ ঘটনায় নায়েব সুবেদার তোতা মিয়া বাদি হয়ে আটককৃত ৩ জনের বিরুদ্ধে দামুড়হুদা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। একই সময় বারাদি বিজিবি ক্যাম্পের হাবিলদার কাজী শাহীন সঙ্গীয় সদস্যদের নিয়ে মাদকবিরোধী অভিযান চালান কামারপাড়া গালার মাঠে। ওই মাঠ থেকে আটক করেন, কামারপাড়ার হানিফ ম-লের ছেলে মশিউর রহমান ভাদু (৪০) ও নাস্তিপুরের মান্দার আলী ম-লের ছেলে ইয়াছিন আরাফাতকে (৩২)। আটকৃতদের কাছ থেকে ৪৮ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধারের তথ্য দিয়েছে বিজিবি। হাবিলদার কাজী শাহিন বাদি হয়ে আটককৃত ২ জনের বিরুদ্ধে দামুড়হুদা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। গত রোববার ভোরে দর্শনা নিমতলা বিজিবি ক্যাম্পের হাবিলদার ইকবাল হোসেন সঙ্গীয় সদস্যদের নিয়ে মাদকবিরোধী অভিযান চালান জয়নগর মেহগনি বাগানের মাঠে। ১২ বোতল ফেনসিডিলসহ আটক জয়নগরের মুরশিদ আলীর ছেলে আব্দারকে (৩০)। আব্দারের বিরুদ্ধে হাবিলদার ইকবাল হোসেন দামুড়হুদা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। সকাল ৬টার দিকে নিমতলা বিজিবি ক্যাম্পের নায়েব সুবেদার আবুল কালাম সঙ্গীয় সদস্যদের নিয়ে মাদকবিরোধী অভিযান চালান ঈশ্বরচন্দ্রপুর বিএসপি মাঠে। ওই মাঠ থেকে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর ইউনিয়নের আকন্দবাড়িয়া সমর আলীর ছেলে মিঠুকে (৩০) ১২ বোতল ফেনসিডিলসহ আটক করা হয়েছে। মিঠুর বিরুদ্ধে দামুড়হুদা থানায় মামলা দায়ের করেছেন নায়েব সুবেদার আবুল কালাম। এছাড়া রাত ১টার দিকে দর্শনা বিজিবি ক্যাম্পের হাবিলদার আশানুল হক সঙ্গীয় সদস্যদের নিয়ে অভিযান চালিয়ে ঈশ্বরচন্দ্রপুর গোরস্থানের কাছ থেকে পরিত্যাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করেছেন ১১৯ বোতল ফেনসিডিল। রাত দেড়টার দিকে দর্শনা কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার জাহাঙ্গীর হোসেন সঙ্গীয় সদস্যদের নিয়ে চোরাচালানবিরোধী অভিযান চালিয়ে কালিগঞ্জ থেকে ১৩ লাখ ৮৬ হাজার ৩৯০ টাকা মূল্যের ভারতীয় বিভিন্ন মালামাল।