মাথাভাঙ্গা মনিটর: লেগ স্পিনার রশিদ খানের দুর্দান্ত বোলিঙে সেন্ট লুসিয়ায় ড্যারেন স্যামি স্টেডিয়ামে প্রথম ওয়ানডেতে আফগানিস্তানকে ৬৩ রানে পরাজিত করেছে আফগানিস্তান। ১৮ বছর বয়সী রশিদ ১৮ রানে নিয়েছেন ৭ উইকেট। এর ফলে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল সফরকারীরা। প্রথমে ব্যাটিং থেকে আফগানিস্তান ওপেনার জাভেদ আহমাদির ৮১ রানের কল্যাণে ৬ উইকেটে ২১২ রান সংগ্রহ করে। কিন্তু রশিদের বোলিং তোপে ক্যারিবীয়ানদের ইনিংস ৪৪.৪ ওভারে মাত্র ১৪৯ রানে গুটিয়ে গেলে প্রথম ম্যাচে দারুণ জয় তুলে নেয় আফগানরা। ওয়ানডেতে রশিদের এই বোলিং সেরা বোলারের তালিকায় চতুর্থ স্থান দখল করে নিয়েছে। ২২তম ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস যখন ২ উইকেট ৬৮ ছিলো তখন ষষ্ঠ বোলার হিসেবে আফগানিস্তানের অধিনায়ক আসগর স্টানিকজাই রশিদকে বোলিংয়ে আমন্ত্রণ জানান। প্রথম ওভারে জেসন মোহাম্মদ ও অভিষিক্ত রোস্টোন চেজকে প্রথম দুই বলে সাজঘরে ফেরত পাঠিয়ে রশিদ দুর্দান্ত কিছু করারই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। পরের ওভারে সর্বোচ্চ স্কোরার শাই হোপ (৩৫) ও অধিনায়ক জেসন হোল্ডারের উইকেট তুলে নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পরাজয় নিশ্চিত করেন। ওই মুহূর্তে তার বোলিং ফিগার ছিলো ১ রানে ৪ উইকেটে। এরপরপই অ্যাশলে নার্সকে এলবিডব্লিউ’র ফাঁদে ফেললে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর দাঁড়ায় ৭ উইকেটে ৯০। এরপর অষ্টম উইকেটে জোনাথন কার্টার (১৯) ও আলজারি জোসেফ (২৭) মিলে ৪৫ রান যোগ না করলে স্বাগতিকদের হয়ত আরো আগেই থেমে যেতে হতো। কার্টারকে মিডউইকেটে বদলী ফিল্ডার শফিকুল্লাহ ক্যাচে পরিণত করে সাজঘরে ফেরত পাঠান গুলবাদিন নাইব। নিজের নবম ওভারে রশিদ জোসেফ ও মিগুয়েল কামিন্সকে দ্রুত তুলে নিলে দারুণ এক জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে আফগানিস্তান। ম্যাচ শেষে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার গ্রহণের সময় রশিদ বলেছেন, ‘আমি আমার বোলিং নিয়ে অনেক পরিশ্রম করেছি। আমি এই বিশেষ পুরস্কারটা আফগানিস্তানের মানুষের জন্য উৎস্বর্গ করতে চাই, সাম্প্রতিক সময়ে তারা বেশ কঠিন সময় পার করছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ বড় দল এবং তাদের বিরুদ্ধে এই ধরনের জয় সত্যিই বিশেষ কিছু।’ গত সপ্তাহে কাবুলে ট্রাক বোমা হামলায় প্রায় দেড়শ মানুষ নিহত হয়েছে এবং অনেকেই আহত হয়েছেন। এদিকে হোল্ডার দলের ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার বিষয়টিকে সামনে নিয়ে এসে বলেছেন, এই ধরনের ব্যাটিংয়ের আসলে কোন ব্যাখ্যা নেই। আফগানিস্তানের ছোট স্কোর তাড়া করতে নেমে আমরা কোন ধরনের পেশাদারিত্ব দেখাতে পারিনি। আমরা আফগানিস্তানকে মোটেই খাটো করে দেখিনি। কিন্তু রোববার পরের ম্যাচে অবশ্যই আমাদেরও সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামতে হবে। এর আগে আফগানরা তাদের ইনিংসে তেমন কোন পারফরমেন্স দেখাতে পারেনি। একমাত্র আহমাদি ও নাইব ছাড়া আর কোনো ব্যাটসম্যানই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের শাসন করতে পারেনি। আহমাদি ১০২ বলে ৮টি বাউন্ডারি ও ২টি ওভার বাউন্ডারির সহায়তায় ওয়ানডেতে তার আগের সর্বোচ্চ রানের সমান রান সংগ্রহ করেছেন। ৩৭তম ওভারে আহমাদি যখন সাজঘরে ফিরেন তখন দলের স্কোর ছিল ৫ উইকেট ১৩১। তবে নাইব এসে দলীয় স্কোর কিছুটা সমৃদ্ধ করতে চেষ্টা করেছেন। ২৮ বলে তার করা ঝড়ো গতির অপরাজিত ৪১ রানে আফগানদের ইনিংস ২০০’র কোটা পার করতে সমর্থ হয়। সপ্তম উইকেটে নাইব মোহাম্মদ নবীকে (২৭*) সাথে নিয়ে ৫৮ রানের ইনিংস উপহার দেন।