প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউসুফ আলী: পবিত্র মাহে রমজানের আজ ১৫তম দিন। দেখতে দেখতে আমরা শেষ করে দিলাম অর্ধেক রোজা। এই মাস আত্মশুদ্ধি ও তাকওয়া অর্জনের মাস। মহাপরাক্রমশালী আল্লাহ পাকের ভয়ে সমস্ত নাজায়েজ কাজ থেকে বেঁচে থাকার নামই তাকওয়া। মহান আল্লাহ জাল্লাশানুহ্ পবিত্র কোরআনে এরশাদ করেন, হে ইমানদারগণ! তোমাদেরওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপরও ফরজ করা হয়েছিলো যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো (বাকারা: ১৮৩ )। এই আয়াতের মাধ্যমে বোঝা যায় রোজার প্রধান উদ্দেশ্য হলো তাকওয়া অর্জন করা। যারা তাকওয়া অর্জন করে তাদের বলা হয় মুত্তাকি। আর মুত্তাকিদের জন্য পরকালে রয়েছে অঢেল প্রতিদান ও পুরস্কার। জান্নাতে তাদের দেয়া হবে অগণিত নেয়ামত। মহান আল্লাহ রব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআন মাজিদে মুত্তাকিদের পুরস্কার ঘোষণা করতে গিয়ে বলেন, নিশ্চয় মুত্তাকিদের জন্য রয়েছে সাফল্য। উদ্যান, আঙ্গুর; সমবয়ষ্কা, পূর্ণযৌবনা তরুণী এবং পূর্ণ পানপাত্র। তারা সেখানে অসার ও মিথ্যা কথা শুনবে না। এটা আপনার পালনকর্তার তরফ থেকে যথোচিত প্রতিদান (সূরা আন নাবা: ৩১-৩৬)। কোরআনের আরও অনেক আয়াত এবং অসংখ্য হাদিসে মুত্তাকিদের পুরস্কার ঘোষণা করে বলা হয়েছে যে তারা নানাবিধ উত্তম পানাহার, ফলমূল, আঙ্গুর, বাগবাগিচা, নয়নাভিরাম অট্টালিকা, বালাখানা, শান্ত ও আরামদায়ক পরিবেশ এবং সবচেয়ে বড় জিনিস আল্লাহর চির সন্তুষ্টির মধ্যে থাকবে। এই দুনিয়ায় সবাই চায় তার ধন সম্পদ অঢেল হোক, উত্তম পানাহার হোক, নয়নাভিরাম বাসস্থান হোক, চাকর-নকর পরিবেষ্টিত বাদশাহী থাকুক, সুশ্রী চিরযৌবনা স্ত্রী হোক ইত্যাদি ইত্যাদি..। আর এগুলো অবাস্তব কিছু নয়; সবই মানুষের স্বভাবগত কামনার বস্তু। মহান আল্লাহ তায়ালাই মানুষের অন্তরে এগুলোর চাহিদা ও বুঝ দান করেছেন যাতে সে পরকালের পুরস্কারের ব্যাপারে আন্দাজ করতে পারে। তবে এগুলো দুনিয়াতে কখনই পূরণ হবে না। কারণ দুনিয়া ভোগ বিলাসের জায়গা না, এটা আমলের জায়গা। ভোগ-বিলাস ও কামনা-বাসনা পূরণের জায়গা হলো জান্নাত যেখানে মন যা চায় তাই পাওয়া যাবে। রমজানের সিয়াম সাধনার মাধ্যমে বান্দা তাকওয়া হাসিলের সুযোগ পায়, যার মাধ্যমে পরকালে বিশাল বাদশাহীর মালিক হওয়া যায়। (লেখক: অধ্যাপক, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়)।