হরিণাকুণ্ডুতে এডিবির বিশেষ বরাদ্দের ৩১ লাখ টাকার গোপনে টেন্ডার : ক্ষুব্ধ ঠিকাদার ও চেয়ারম্যান

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলায় এডিবির বিশেষ বরাদ্দাদের প্রায় ৩১ লাখ টাকার গোপন টেন্ডার ও ভাগবন্টন নিয়ে সেখানকার ইউপি চেয়ারম্যানরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। চরম অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে এডিবির এই বিশেষ বরাদ্দের অর্থ লোপাটের উদ্দেশ্যে গোপন করায় হরিণাকুণ্ডুর ৮ চেয়ারম্যান ও দুই উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রতিকার দাবি করেছেন। অভিযোগ উঠেছে উপজেলা পরিষদের মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত ও ইউপি চেয়ারম্যানদের মতামত ছাড়াই নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনিরা পারভিন, উপজেলা চেয়ারম্যান এমএ মজিদ ও উপজেলা প্রকৌশলী বিকাশ চন্দ্র নন্দি বিশেষ মিশন নিয়ে এই গোপন টেন্ডার করেছেন।

বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর চেয়ারম্যানদেরকে ৯ লাখ টাকার বরাদ্দ দেন বলে জানা গেছে। চেয়ারম্যানদের একটি সূত্র জানায়, আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে সরকারি এই অর্থ লোপাট করার জন্যই কাউকে জানানো হয়নি। হরিণাকুণ্ডু উপজেলার রঘুনাথপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাকিবুল হাসান রাসেল জানান, ৩০ লাখ ৯৭ হাজার টাকার মধ্যে ২১ লাখ টাকা আরএফকিউ কোটেশন টেন্ডার করে চারজন ঠিকাদারকে দেয়া হয়েছে। বাকী টাকা ৮ চেয়ারম্যানকে পিআইসি কমিটির মাধ্যমে কাজ বাস্তাবায়নের জন্য দিয়েছেন। কিন্তু চারজন চেয়ারম্যান এডিবির এই বিশেষ বরাদ্দের অর্থ গ্রহণ করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। চেয়ারম্যান রাকিবুল হাসান রাসেল অভিযোগ করে তাদের মতামত না নিয়ে বা গোপনে এই কাজ করা হয়েছে। উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও এবং উপজেলা প্রকৌশলী আরএফকিউ করে ভাগাভাগি করেছেন।

হরিণাকুণ্ডু উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সেলিনা খাতুন অভিযোগ করেন, আমাদের বাদে এভাবে গোপনে প্রকল্প তৈরি করে টেন্ডার করা ঠিক হয়নি। কারণ আমরা তো জনপ্রতিনিধি। আমাদের না জানিয়ে এগুলো করা হচ্ছে। জোড়াদহ ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল হুদা পালাশ অভিযোগ করেন, এপ্রিল মাসের দ্বিতীয় বৃহস্পতিবার যে সভায় এডিবির বিশেষ বরাদ্দের অনুমোদন দেখানো হয়েছে, সেখানে এ বিষয়ে কোনো আলোচনাই হয়নি। সম্পূর্ণ গোপনে চেয়ারম্যানদের না জানিয়ে এ কাজ করা হয়েছে। তিনি বলেন এটা সবচেয়ে বড় ধরণের অফিসিয়াল দুর্নীতি। হরিণাকুণ্ডু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার আর্থিক খাতে এতো নোংরাভাবে মাথা ঘামানো ঠিক হয়নি। এ বিষয়ে হরিণাকুণ্ডু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনিরা পারভিনের বক্তব্য জানতে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

বিষয়টি নিয়ে হরিণাকুণ্ডু উপজেলা চেয়ারম্যান এডএমএ মজিদ জানান, এডিবির অর্থ বরাদ্দ নিয়ে কোনো লুকোচুরি করা হয়নি, গোপন টেন্ডারও করা হয়নি। গত বছর এ খাতের সরকারি টাকা ফেরত যওয়ার কারণে এবার বিধি মোতাবেক আরএফকিউ করা হয়েছে। তিনি বলেন গত বছর ইউপি চেয়ারম্যানরা গোণ্ডগোল করায় ৩০ লাখ টাকা ফেরত যায়। সে কারণে হরিণাকুণ্ডুতে এডিবির টাকায় জন গরুত্বপূর্ণ কোনো কাজ হয়নি। সেই দিক বিবেচনা করেই এবার ৭০% টাকা আরএফকিউ ও ৩০% টাকা পিআইসি কমিটি করে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।