নারায়ণগঞ্জে আরও পাঁচটি অস্ত্র উদ্ধার : অভিযান চলছে

 

স্টাফ রিপোর্টার: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভোলাবো ইউনিয়নের বাসুন্দা এলাকার শীতলক্ষ্যা নদী থেকে আরও পাঁচটি অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। অস্ত্র উদ্ধারে দ্বিতীয় দিনের মতো গতকাল শনিবার পুলিশ এই অভিযান চালায়। অস্ত্র মজুতের ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে পুলিশ মোট চারজনকে আটক করেছে। আটক হওয়া চারজন হলেন রূপগঞ্জের দাউদপুর ইউনিয়নের বাগলা গ্রামের শরীফ খান, গুটিয়াবো গ্রামের শান্ত, মাঝপাড়া গ্রামের রাসেল ও গোবিন্দপুর গ্রামের শাহীন। রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন বলেন, অভিযান শেষ না হওয়ায় অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় এখন পর্যন্ত মামলা হয়নি।

রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বাচলের ৫ নম্বর সেক্টরের একটি কৃত্রিম লেকে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করে। শুক্রবার দিনভর এই অভিযান চলে। গতকাল সকাল থেকে লেকটিতে পুলিশের নেতৃত্বে আবারও উদ্ধার অভিযান শুরু করেন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা। কিন্তু দিনভর এই অভিযানে লেক থেকে তাঁরা কিছু পাননি। বিকেলে লেকটি থেকে সাত-আট কিলোমিটার দূরে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে পাঁচটি সাবমেশিনগান উদ্ধার করা হয়।

অস্ত্র উদ্ধারকাজে অংশ নেয়া ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের ডুবুরি মো. আবু ইউসুফ বলেন, বাসুন্দা এলাকার শীতলক্ষ্যা নদীর পাড় থেকে দুই-আড়াই শ গজ দূরে নদীর তলদেশ থেকে অস্ত্রগুলো উদ্ধার করা হয়। এগুলো আগের অস্ত্রগুলোর মতো কোনো ব্যাগে পাওয়া যায়নি। ছড়ানো-ছিটানো অবস্থায় নদীর তলদেশে ছিল।

নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আটক হওয়া ব্যক্তিদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অস্ত্রগুলো নদী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। লেকের পানি সেচের জন্য তাঁরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। পানি সেচের পর আবার তল্লাশি চালানো হবে।

পুলিশের ব্রিফিং: গতকাল বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি ও উদ্ধার হওয়া অস্ত্রের উৎসের সন্ধানের জন্য পুলিশ সদর দপ্তরের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান মো. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশ অর্ডনেন্স ফ্যাক্টরি ও চীন থেকে বাংলাদেশ পুলিশ যে অস্ত্র কেনে, সেগুলোর সঙ্গে উদ্ধার হওয়া অস্ত্রগুলো মিলিয়ে দেখা হয়েছে। কোনো মিল পাওয়া যায়নি। আরও দু-একটি দেশের অস্ত্রের সঙ্গে মিল রয়েছে কি না, তা দেখা হবে।

ডিআইজি আরও বলেন, আটক হওয়া ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, প্রায় চার মাস আগে হৃদয় নামের এক যুবক লেকে মাছ ধরতে গেলে অস্ত্রের বস্তা তাঁর পায়ে লাগে। তিনি একটি বস্তা তুলে ৯-১০টি অস্ত্র পান। সেগুলো তারা কয়েকজন মিলে বিভিন্ন জায়গায় লুকিয়ে রাখেন। এর মধ্যে তাদের কাছ থেকে তিনটি অস্ত্র (একটি শরীফের বাড়ি থেকে, বাকি দুটো আশুলিয়ার একটি জায়গায়) উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি অস্ত্রগুলো উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। ডিআইজি বলেন, মূল অস্ত্রের চালানের সাথে আটক হওয়া ব্যক্তিদের কোনো সংশ্লিষ্টতা এখনো পাওয়া যায়নি। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিআইজি বলেন, চট্টগ্রামে উদ্ধার হওয়া ১০ ট্রাক অস্ত্রের সঙ্গে এগুলোর মিলথাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

 

Leave a comment