বালিকা বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করায় ইমামতি করা যাবে না বলে ফতোয়া জারি

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় বালিকা বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার কারণে মসজিদের এক ইমামের বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি করেছে জেলা ওলামা পরিষদসহ কতিপয় মুফতি। তারা ফতোয়া দিয়েছেন, যেহেতু শিক্ষকতার কারণে পর্দা রক্ষা না করে বয়স্কা মেয়েদের সাথে কথাবার্তা ও সরাসরি দেখা সাক্ষাৎ করেন এ কারণে তিনি ফাসেক। আর ফাসেক খালিস দিলে তওবা না করা পর্যন্ত ইমামতি করা ও তার পেছনে নামাজ পড়া মাখরুহে তাহরিমি। এই ফতোয়া জারির কারেণ মসজিদের মুসল্লিদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও ভিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।

অভিযোগসূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের আদর্শ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ধর্মীয় শিক্ষক মাও. হারুন অর রশিদ। একই সাথে তিনি শহরের জান্নাতুল মাওলা জামে মসজিদের ইমাম। বছর তিনেক ধরে ইমামতি করলেও তার পেছনে নামাজ হবে না বলে সম্প্রতি ফতোয়া জারি করেছে জেলা ওলামা পরিষদ। বালিকা বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন বলেই হারুন অর রশিদের ইমামি জায়েজ হবে না বলে মত দিয়েছেন তারা।

জেলা ওলামা পরিষদের সভাপতি মুফতি জুনাইদ আল হাবীবী বলেন, যেহেতু শিক্ষক হারুন অর রশিদ তার বিদ্যালয়ের বয়স্ক মেয়েদের সাথে পর্দা না করে কথা বলেন এবং দেখা সাক্ষাৎ করেন সেহেতু তিনি ফাসেক। আর ফাসেক ব্যক্তির পেছনে নামাজ মাখরুহে তাহরিমি হয়ে যাবে। মাখরুহে তাহরিমি কী? এ প্রশ্নের জবাবে মুফতি হাবীবী বলেন, প্রায় হারামের কাছাকাছি। ৯৯ ভাগ নষ্ট হয়ে যাওয়াকে মাখরুহে তাহরিমি বলা হয়। এদিকে মুফতি হাবীবী এবং চুয়াডাঙ্গা বুজরুক গড়গড়ি মাদরাসার প্রধান মুফতি মুস্তাফা কামাল কাসেমীসহ চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়ার প্রায় এক ডজন মুফতি লিখিতভাবে একই ধরনের ফতোয়া দিয়েছেন ওই শিক্ষক ও ইমাম হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে চুয়াডাঙ্গা জান্নাতুল মাওলা মসজিদের মুসল্লিদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইমাম হারুন অর রশিদের কাছে জানতে চাইলে বলেন, আমি বালিকা বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করি। আমার মতো দেশের শ’ শ’ মানুষ শিক্ষকতার পাশাপাশি ইমামতি করে থাকেন। একজন শিক্ষক ও ছাত্রীদের মধ্যে যে সম্পর্ক তা বজায় রেখেই শিক্ষকতা করি। তাছাড়া ছাত্রীরা সবাই পর্দার সাথেই স্কুলে আসে। তাদের মধ্যে বেপর্দার কিছু নেই। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ ও ফতোয়া জারি উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও অজ্ঞতারই বহির্প্রকাশ।