সাঁতার শেখার প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে সদর ইউএনওর মতবিনিময়

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা বেলগাছীর দু-শিশু শিক্ষার্থী পানিতে ডুবে মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় চুয়াডাঙ্গার সর্ব মহল থেকে শোক প্রকাশ করা হয়েছে। বিশেষ করে জেলার সকল সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে বিষয়টি বিদ্যুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ে। নবাগত জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদ কাল বিলম্ব না করে ছুটে যান ঘটনাস্থলে। দু-শিশুর শোক-সন্তপ্ত পরিবারের সকলকে শান্তনা দেন এবং গভীর শোক প্রকাশ করেন। একই সাথে তাৎক্ষনিকভাবে দু-পরিবারের হাতে জেলা প্রশাসক ৫ হাজার করে টাকা তুলে দেন।

এদিকে মর্মান্তিকভাবে পানিতে ডুবে অকালে ঝরে যাওয়া চুয়াডাঙ্গা হাসপাতাল সড়কের রিজিয়া খাতুন প্রভাতী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির দু-শিশু শিক্ষার্থী লামিয়া ও ইয়াসমিনের প্রতি সমবেদনা ও শোক প্রকাশ করেছেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৃনাল কান্তি দে। তিনি এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময়কালে বলেন, সাঁতার শেখা প্রতিটি মানুষের জন্য অত্যাবশ্যকীয়। বিশেষ করে তোমরা যারা শিক্ষার্থী তাদের জন্য তো সাঁতার শেখার কোনো বিকল্প নেই। লামিয়া ও ইয়াসমিনের পানিতে ডুবে মৃত্যু হওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এ রকম দু:সংবাদ আর আমরা শুনতে চাই না। আমরা চাই তোমরা সবাই সাঁতার শিখবে। সাঁতার শুধু জীবনকে রক্ষা করার জন্যই নয়। সাঁতার জানা থাকলে যে কোনো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা, চাকরি ও প্রতিযোগিতায় অগ্রাধিকার দেয়া হয়ে থাকে। এছাড়া নদী-মাতৃক বাংলাদেশে বসবাস করতে গেলে প্রতিনিয়ত বন্যা, জলোচ্ছ্বাস ও পানি ঘটিত নানা রকম দুর্যোগের শিকার হতে হয়। এ প্রতিকুল দুর্যোগ থেকে রক্ষা পেতে হলে সাঁতার জানার কোনো বিকল্প নেই। তাই আমি তোমাদের ও তোমাদের অভিভাবকদের উদ্দেশে বলতে চাই অবহেলায় নিজেকে ঝুকিতে আবদ্ধ না রেখে জীবনের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এ শারীরিক কৌশল সাঁতার অতি সত্বর শিখে রাখ। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন ও খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের উদ্যোগে গড়ে ওঠা চুয়াডাঙ্গা শিশু-কিশোর সাঁতার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে গিয়ে খুব সহজেই তোমরা সাঁতার শিখতে পার। এ প্রতিষ্ঠানেই তোমাদের সাঁতার শিখতে হবে তা নয়। যেকোনো জায়গায় থেকে তোমরা সাঁতার শিখে রাখবে। যা তোমাদের নিরাপত্তা ও যোগ্যতা হিসেবে ভবিষৎ পথচলা মসৃন করবে। গতকাল বুধবার দুপুর ১২টায় সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে সাঁতার শেখার প্রয়োজনীয়তা বিষায়ক মতবিনিময়কালে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৃনাল কান্তি দে, সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি পুলক কুমার মণ্ডল, সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার মালাকার, চুয়াডাঙ্গা শিশু-কিশোর সাঁতার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ইনচার্জ নাসির আহাদ জোয়ার্দ্দার, সমন্বয়কারী রাজু আহম্মেদ, উদ্যোগী ব্যক্তি এনামুল হকসহ প্রশিক্ষকগণ।

উল্লেখ্য গত ২২ মে দুপুরে দামুড়হুদার পীরপুরে আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে লামিয়া ও ইয়াসমিন মাথাভাঙ্গা নদীতে ডুবে মারা যায়।