ঝিনাইদহে সুদে ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্যে জিম্মি নিম্ন আয়ের মানুষ : নেই প্রতিকার

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: দাদন ও মুদারাবা ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ছেন ঝিনাইদহের প্রতিটি উপজেলার নিম্ন আয়ের মানুষ। সুদ ব্যাসায়ীদের শর্ত হলো কেউ যদি ৫০০০ টাকা লোন নেয় তাহলে প্রতিদিন ৫০ টাকা করে দিয়ে মুদারাবা ব্যবসায়ীদের টাকা ৪ মাসে শোধ করতে হয়। না দিতে পারলে দ্বিগুন হারে সুদ দিতে হয়। সুদ ও চক্রবৃদ্ধি সুদের বেড়াজালে এরইমধ্যে ভিটেমাটি হারিয়েছেন অনেকে।

টাকা দিতে না পারায় কয়েকটি পরিবার পালিয়ে দেশ ছেড়ে চলে গেছে ভারতে। শারিরীকভাবে লাঞ্ছিত হয়ে অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন দিনের পর দিন। আর অসাধু মহাজনদের সুদের অত্যাচারের প্রতিকার মিলছে না কোথাও। ঝিনাইদহের ৬ উপজেলার নিম্ন আয়ের মানুষ নিজেদের জীবন ও জীবিকার জন্য টাকা ধার নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। সোনার গয়না, জমি, স্বাক্ষর করা ব্যাংকের চেক বই ও নন জুডিসিয়াল স্ট্যাম্প বন্ধক রেখে সুদখোর মহাজনরা অভাবী মানুষদের টাকা দেয়। আর্থিক অনটনে ধারকর্য করে পরবর্তীতে দ্বিগুণ কিংবা তিনগুন টাকা পরিশোধ করেও কালীগঞ্জ উপজেলার ভাটপাড়া, খয়েতলা ও কোলা, বলরামপুর ও ইউনিয়নের অনেকেরই মেটেনি দেনার দায়। কখনো কখনো পাওনা টাকার দোহাই দিয়ে জব্দ করা হচ্ছে ভিটেমাটি অথবা গোয়ালের গরু।

কোলা গ্রামের ঋণগ্রহীতা সুবাস জানান, ভ্যান চালিয়ে দেনা দিতে পারছি না। অনেক ঋণগ্রহীতা শারীরিক ভাবেও লাঞ্চিত হচ্ছেন সুদখোর মহাজনদের কাছে। অত্যাচারে জমিজমা বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। তবে বেশির ভাগ লোকই মহাজনদের খপ্পরে পড়ে বছরের পর বছর ঋণগ্রস্তই থাকছেন। বর্তমানে নতুন ধান ঘরে তোলার আগেই দাদন ও সুদ ব্যবসায়ীদের দাপট বেড়ে চলেছে। সুদ ব্যবসায়ীরা পাওনাদারদের বাড়ি বাড়ি চষে বেড়াচ্ছে সুদের পাওনা টাকার জন্য।

এদিকে কালীগঞ্জ উপজেলার গাজীর বাজার এলাকায় তিন সুদখোর মহাজন এলাকার সহস্রাধিক মানুষের কাছে লাখ লাখ টাকা বিতরণ করেছেন। বিভিন্ন নাম দিয়ে তারা এলাকায় আড়াই বছর ধরে দাদন ব্যবসা করে আসছেন। দাদন ব্যবসায়ীরা শতকরা মাসিক ১৮ থেকে ২০ টাকা হারে সুদ নিচ্ছেন।

ঝিনাইদহের প্রতিটি উপজেলার একটি বিশাল জনগোষ্ঠী দিন মজুরির মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে। আর দরিদ্র এই জনগোষ্ঠীর নিত্য অভাব অনটনের সুযোগ নিচ্ছে কিছু অসাধু সুদ ব্যবসায়ী। এ বিষয়ে ঝিনাইদহের ৬ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা জানান, অভিযোগ পাওয়ার পরই আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেবো।