হরিণাকুন্ডু রেজিস্ট্রি অফিসে ঘুষ বাণিজ্যের পর এবার চারটি দলিল গায়েব নিয়ে তোলপাড়!

 

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু সাবরেজিস্ট্রার অফিস থেকে চারটি দলিল গায়েব হয়ে গেছে। এ নিয়ে নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। এর আগে ঝিনাইদহ রেজিস্ট্রারের মাহাফেজখানা থেকে বালাম বইয়ের পাতা গায়েব হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। এক মহিলা কর্মচারীকে এক বছর সাময়িক বরখাস্ত রেখে আবার পুনর্বহাল করা হয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, প্রতিনিয়ত অনিয়ম ও দুর্নীতির মধ্যে ডুবে যাচ্ছে সাব রেজিস্ট্রি অফিসের অফিস সহকারীরা। তাদের ইন্ধনে একদিকে যেমন ঘুষ বাণিজ্য চলছে, অন্যদিকে প্রতিপেক্ষর কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা নিয়ে দলিল ও বালাম বই গায়েব করে দেয়া হচ্ছে। ঝিনাইদহ সাবরেজিস্ট্রি অফিসে এখন প্রতি লাখে এক হাজার টাকা বাধ্যতা ঘুষ দিতে হচ্ছে। সদর সাব রেজিস্ট্রার মৃত্যুঞ্জয়ী শিকারী যোগদান করেই এই ফরমান জারি করেছেন বলে অভিযোগ। এ নিয়ে দলিল লেখকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। জেলা রেজিস্ট্রারের অফিসসুত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের জানুয়ারী মাসে হরিণাকুন্ডু সাব রেজিস্ট্রি অফিস থেকে চারটি দলিল রেজিস্ট্রি হয়, যার দলিল নং ছিলো ১০৪, ১০৫, ১০৬ ও ১০৭। প্রতিপক্ষের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা খেয়ে অফিস সহকারী আমিরুল ইসলাম, পিয়ন জাহিদুল ইসলাম, মহরার শামসুজ্জামান, নকলনবিশ চাঁদ আলী ও মাসুরা খাতুন গায়েব করে দেন। প্রাপ্ত তথ্যমতে গত ২৮ মার্চ সাবেক ঝিনাইদহ জেলা রেজিস্ট্রার বীর জ্যোতি চাকমা হরিণাকুণ্ডু সাবরেজিস্ট্রার অফিস পরিদর্শনকালে বিষয়টি ধরা পড়ে।

এ নিয়ে তিনি কারণ দর্শানের নোটিশ দেন। জবাবে হরিণাকুণ্ডু সাব রেজিস্ট্রি অফিসের অফিস সহকারী আমিরুল ইসলাম লিখিত জবাবে জানান, সাব রেজিস্ট্রার হাসানুজ্জামান চারটি দলিল নিজ জিম্মায় রেখে ঢাকায় দুই মাসের ট্রেনিঙে গেছেন। ফলে দলিলগুলো দেখানো সম্ভব হচ্ছে না। পরে দুই মাসের ট্রেনিং শেষ করে সাব রেজিস্ট্রার হাসানুজ্জামান চারটি দলিল তার জিম্মায় নেই বলে জানিয়ে দেন। এ নিয়ে শুরু হয় তোলপাড়। এখনো পর্যন্ত দলিল চারটি খুঁজে পাওয়া যায়নি। অফিস সহকারী আমিরুল ইসলাম, পিয়ন জাহিদুল ইসলাম, মহরার শামসুজ্জামান, নকলনবিশ চাঁদ আলী ও মাসুরা খাতুন কারো দ্বারা প্ররোচিত হয়ে দলিল চারটি গায়েব করতে পারে এমন আশঙ্কার কথা জানান ঝিনাইদহ থেকে সদ্য বদলি হওয়া জেলা রেজিস্ট্রার বীর জ্যোতি চাকমা। বিষয়টি নিয়ে হরিণাকুণ্ডুর সাব রেজিস্ট্রার হাসানুজ্জামান এ খবরের সত্যতা স্বীকার করে জানান, দলিল চারটি এখনো পাওয়া যায়নি। আশা করছি ২-১ দিনের মধ্যে পাওয়া যাবে। তিনি বলেন, অনেক কাগজপত্রের মধ্যে খোঁজা হচ্ছে। তিনি বলেন, আমি ঢাকায় দুই মাসের ট্রেনিঙে ছিলাম। তার মধ্যে দলিল চারটি হারানোর খবর জানতে পারি।