সকল জেলা উপজেলায় একটি করে মডেল মসজিদ-ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র

 

স্টাফ রিপোর্টার: প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপনসহ মোট ১৩ প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর শেরে-বাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়।

এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২০ হাজার ৪০২ কোটি ৭৫ লাখ ৭৯ হাজার টাকা। এর মধ্যে সরকারি ও সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ৯ হাজার ৬৭২ কোটি ৭৫ লাখ ৭৯ হাজার টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ১০ হাজার ৭৩০ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে।

বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল প্রকল্প সম্পর্কে বলেন, দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় আধুনিক সুবিধা সম্বলিত মসজিদ বা ইসলামী স্থাপনা নেই। এ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সরকার সৌদি আরবের সহায়তায় সারাদেশে আধুনিক মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। এতে লাইব্রেরি, কোরআন পঠন, শিশুদের শিক্ষা সুবিধা, হজ্জ যাত্রী ও ইমামদের প্রশিক্ষণসহ নানাবিধ সুবিধা থাকবে।

তিনি জানান, এপ্রিল ২০১৭ থেকে ডিসেম্বর ২০১৯ মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে। এতে মোট ব্যয় হবে ৯ হাজার ৬২ কোটি ৪১ লাখ টাকা। এর মধ্যে সৌদি সরকারের কাছ থেকে পাওয়া যাবে ৮ হাজার ১৬৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। বাকি ৮৯২ কোটি ৬২ লাখ টাকা বাংলাদেশ সরকার নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় করবে। অনুমোদিত অন্য প্রকল্পসমূহ হচ্ছে- জেলা পর্যায়ে আইটি/হাইটেক পার্ক স্থাপন প্রকল্প। এর ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৭৯৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা। পটুয়াখালী গোপালগঞ্জ ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইন এবং গোপালগঞ্চ ৪০০ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ২৯৪ কোটি ২৪ লাখ টাকা। মহেশখালী-আনোয়ারা গ্যাস সঞ্চালন সমান্তরাল পাইপলাইন নির্মাণ প্রকল্প। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ১০৯ কোটি ২৩ লাখ টাকা। কর্ণফুলি নদীর তীর বরাবর কালুরঘাট সেতু হতে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ প্রকল্প। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৯৭৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্থতায় উন্নীতকরণ প্রকল্প। এর ব্যয় ৭৯৮ কোটি ১৫ লাখ টাকা। থানচি-রিমাকরি-মদক-লিকরি সড়ক নির্মাণ প্রকল্প। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৬৯ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। কক্সবাজার-টেকনাফ-মেরিন ড্রাইভ সড়ক নির্মাণ প্রকল্প তৃতীয় পর্যায় প্রকল্প। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৫৫ কোটি ৮২ লাখ টাকা। সিলেট শহর বাইপাস-গ্যারিসন লিংক টু শাহ পরাণ সেতুঘাট সড়ক চার লেন মহাসড়কে উন্নয়ন প্রকল্প। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ২৩৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। খালিশপুর-মহেশপুর-দত্তনগর-জিন্নানগর-যাদবপুর মহাসড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন প্রকল্প। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা। সুনামগঞ্জ টেক্সটাইল ইন্সটিটিউট স্থাপন প্রকল্প। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৭ কোটি ২২ লাখ টাকা। ঢাকা শহরে তিনটি পাইকারী কাঁচা বাজার নিমার্ণ প্রকল্প। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৫০ কোটি টাকা। এছাড়া থ্রিজি প্রযুক্তিকরণ চালু এবং ২ দশমিক ৫ জি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৭৫ কোটি টাকা।

এসময় পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী এলএনজি টার্মিনাল এখন থেকে সমুদ্রে তৈরি না করে ভূমিতে তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি আরও জানান, একনেক বৈঠকে নগর দারিদ্র সংক্রান্ত একটি প্রকল্প অনুমোদন না দিয়ে ফেরত দেয়া হয়েছে। কারণ, শহরে বস্তির সংখ্যা বাড়ুক এটা প্রধানমন্ত্রী চান না। তিনি বলেছেন, বস্তিবাসীদের জন্য সুউচ্চ ভবন নির্মাণ করতে হবে। এ বিষয়টি প্রকল্পে সঠিকভাবে অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশনা দেন তিনি।