সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা রুখতে কবি নজরুলের সাহিত্য চর্চার বিকল্প নেই

চুয়াডাঙ্গা আন্তঃজেলা নজরুল সঙ্গীত প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে কবি নাতনি খিলখিল কাজী

 

জহির রায়হান সোহাগ/শরিফ রতন: কার্পাসডাঙ্গার আটচালা ঘরে এসে আমি দাদু কাজি নজরুলকে খুঁজে বেড়িয়েছি। তাঁর স্মৃতির স্থানে এসে আমি নিজেকে হারিয়ে ফেলেছিলাম। মনে হচ্ছিল দাদু বুঝি পাশেই আছেন। তাঁর ব্যবহৃত প্রতিটি জিনিসে যেন তাঁর পরশ পাই। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কার্পাসডাঙ্গা সাইক্লোন সেন্টার প্রাঙ্গণে সোহরাব হোসেন স্মৃতি সংসদের আয়োজনে আন্তঃজেলা নজরুল সঙ্গীত প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী ও আলোচনা সভায় উপরোক্ত কথা বলেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের নাতনি খিলখিল কাজী। তিনি আরও বলেন, সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা রুখতে কবি নজরুলের সাহিত্য চর্চার কোন বিকল্প নেই। তাই জাতীয় স্বার্থে কবির প্রতিটি স্মৃতি চিহ্ন সংরক্ষণ করতে হবে। আমি এর আগে কখনো  কার্পাসডাঙ্গায় আসিনি। দাদুর স্মৃতি বিজড়িত স্থানে এসে আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি। তিনি চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেনের প্রশংসা করে বলেন, তিনি বড় একজন পুলিশ কর্মকর্তা হয়েও কবি নজরুল সম্পর্কে  না জানা অনেক কিছু জানেন। তিনি তাঁর বক্তব্য শুনে মুগ্ধ হয়েছেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন দেশ বরেণ্য নজরুল সঙ্গীত শিল্পী রাহাত আরা গীতি, সাবেক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক হামিদুর রহমান, বাংলাদেশ অগ্নিবীণা কেন্দ্রীয় সংসদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এইচ এম সিরাজ, কৃষিবিদ রফিকুল ইসলাম চৌধুরী, দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল হাসান, উপজেলা আ.লীগের সভাপতি সিরাজুল আলম ঝন্টু, কার্পাসডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদের সভাপতি রবিউল হোসেন সুকলাল, সোহরাব স্মৃতি সংসদের সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান আহম্মদ আলী। কার্পাসডাঙ্গা নজরুল স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন দশর্না কলেজের সাবেক জিএস আব্দুল হামিদ, কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি কামরুজ্জামান রানা, সাংবাদিক হাসমত আলী, মেহেদী হাসান মিলনসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। পরে আন্তঃজেলা নজরুল সঙ্গীত প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবি নজরুলের গান পরিবেশন করেন কবির নাতনি খিলখিল কাজী, দেশ বরেণ্য নজরুল সংগীত শিল্পী এম এ মান্নান, রাহাত আরা গীতি, বাংলাদেশ বেতারের নজরুল সঙ্গীত শিল্পী আজহারুল ইসলামসহ স্থানীয় শিল্পীবৃন্দ।

এর আগে বেলা ১১টায় কার্পাসডাঙ্গা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনে কার্পাসডাঙ্গা সোহরাব হোসেন স্মৃতি সংসদের আয়োজনে আন্তঃজেলা নজরুল সঙ্গীত প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন। এতে চারটি বিভাগে ৩০ জন প্রতিযোগী অংশ নেয়। বিচারকের দায়িত্বে ছিলেন কবি কাজী নজরুল ইসলামের নাতনি খিলখিল কাজি, দেশ বরেণ্য নজরুল সংগীত শিল্পী এম এ মান্নান, রাহাত আরা গীতি, বাংলাদেশ বেতারের নজরুল সঙ্গীত শিল্পী আজহারুল ইসলাম, চুয়াডাঙ্গা শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত শিক্ষক আশরাফ আলী ও মশিউর রহমান। এসময় পারকৃষ্ণপুর মদনা ইউপি চেয়ারম্যান জেলা আ.লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক এসএম জাকারিয়া আলম, কার্পাসডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান জেলা আ.লীগের সদস্য খলিলুর রহমান ভুট্ট, কার্পাসডাঙ্গা নজরুল স্মৃতি সংসদের সভাপতি এম এ গফুর, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, কার্পাসডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদের সভাপতি রবিউল হোসেন সুকলাল, কার্পাসডাঙ্গা কলেজের অধ্যক্ষ হামিদুল ইসলাম, আটচালা ঘর মালিক প্রকৃতি বিশ্বাস, কার্পাসডাঙ্গা সাংবাদিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি এম এ জলিল, নজরুল শিল্পী রঘুনাথ পাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।