নেইমারের শততম গোলে গ্রানাডাকে হারালো বার্সেলোনা

 

মাথাভাঙ্গা মনিটর: স্পেনের ঘরোয়া ফুটবল লিগ লা লিগায় রোববার গ্রানাডাকে ৪-১ গোলে পরাজিত করেছে বার্সেলোনা। নিষিদ্ধ মেসির অনুপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত ওই ম্যাচে কাতালান ক্লাবের হয়ে গোলের সেঞ্চুরি করেছেন ব্রাজিলীয় সুপার স্টার নেইমার। ওই জয়ের ফলে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দল রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে দুই পয়েন্টের ব্যবধানে চলে এসেছে লুইস এনরিখের দল। এর আগে অনুষ্ঠিত দিনের আরেক ম্যাচে আলাভেসকে ৩-০ গোলে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থান অক্ষুন্ন রাখে রিয়াল মাদ্রিদ। সান্তিয়াগো বার্নব্যুতে অনুষ্ঠিত ম্যাচে রিয়ালের হয়ে গোল তিনটি করেছেন করিম বেনজেমা, ইসকো এবং নাচো। বার্সার সঙ্গে দুই পয়েন্টের ব্যবধানে এগিয়ে থাকলেও রিয়ালের বাড়তি একটি ম্যাচও হাতে রয়েছে। শীর্ষ পয়েন্টধারী দল দু’টি তিন সপ্তাহ পর পরস্পরের মুখোমুখি হবে।

খেলা শেষে বার্সা কোচ বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বিরতির পর ম্যাচগুলো কিছুটা বৈশিষ্ট্যমন্ডিত হয়। কারণ খেলোয়াড়দের প্রচুর ভ্রমণ করতে হয়। যে কারণে তাদের মধ্যে ক্লান্তি ভর করে। এ সময় এ্যাওয়ে ম্যাচে অংশ নেয়া আরো বেশি কঠিন হয়ে পড়ে। তবে আমরা খুব ভালভাবেই এ সমস্যা অতিক্রম করেছি।’

ন্যুয়েবো লস কার্মেনেসে অনুষ্ঠিত ম্যাচের শুরু থেকেই প্রতিপক্ষ স্বাগতিক গ্রানাডাকে চেপে ধরে বার্সেলোনা। প্রথম দফায় মুহুর্মুহু আক্রমণে গ্রানাডা রক্ষনভাগকে ব্যতিব্যস্ত করে তোলে বার্সেলোনা। তবে বার বারই মেসির অনুপস্থিতিতে গোল করতে ব্যর্থ হয়েছে তারা। একে একে ব্যর্থ গোলের মহড়ায় সামিল হন সুয়ারেজ ও নেই-মাররা। শেষ পর্যন্ত অবশ্য লিড নিয়েই প্রথমার্ধের বিরতিতে গেছে অদম্য কাতলান দলটি। ম্যাচের ৪৪তম মিনিটে লুইস সুয়ারেজের গোলে লিড পায় বার্সেলোনা। জর্ডি আলবার বাড়ানো বল ধরে ডি-বক্সের ঠিক বাইরে থেকে গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে জালে পাঠান দারুণ ফর্মে থাকা এই উরুগুয়ে তারকা (১-০)। তবে এই লিড বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি এনরিখের শিষ্যরা। রক্ষণভাগের দুর্বলতায় ৫০তম মিনিটে গোলটি পরিশোধ করে দেয় গ্রানাডা। বার্সার রক্ষণভাগের নামী-দামী তারকাদের মধ্যেই দ্রুতগতিতে বার্সার রক্ষণভাগে ঢুকে বল নিয়ে কৌণিক শটে গোলটি পরিশোধ করে দেন স্বাগতিক দলের মিডফিল্ডার জেরেমি বোগা (১-১)। তবে অবনমনের হুমকিতে থাকা দলের এই স্বস্তির সমতা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ৬৪তম মিনিটে গোল করে বার্সাকে ফের এগিয়ে দেন পেকো আলকাসার। সুয়ারেজের ক্রসের বল পেয়ে ডি-বক্সে ঢুকে প্রতিপক্ষের জালে জড়িয়ে দেন তিনি (২-১)। এ সময় কিছুটা পেশি শক্তি প্রয়োগ করে খেলতে দেখা যায় স্বাগতিক খেলোয়াড়দের। যার খেসারত হিসেবে ১০ জনের দলে পরিণত হয় গ্রানাডা। ডিফেন্ডার উচে হেনরি আগবো ৮২তম মিনিটে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন। পরের মিনিটেই মিডফিল্ডার ইভান রাকিটিচের গোলে ৩-১ ব্যবধানে পৌঁছে যায় বার্সেলোনা। ম্যাচে নেইমার প্লে-মেকারের ভূমিকা পালন করলেও বার বার ব্যর্থ হচ্ছিলেন গোল করতে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য শততম গোলের দেখাটি পেয়েছেন এই ব্রাজিলীয় তারকা। ইনজুরি টাইমে সুয়ারেজের পাস ফাঁকায় পেয়ে অনায়াসে গোল করতে সক্ষম হন নেইমার। যেটি তাকে পৌঁছে দেয় এক অনন্য উচ্চতায়। বার্সেলোনার হয়ে এটি ছিল নেইমারের শততম গোল। ১৭৭টি ম্যাচ থেকে গোলের এই সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছেন নেইমার।

বার্নব্যুতে এর আগে অনুষ্ঠিত লা লীগার ম্যাচে ডিপোর্তিভো আলভেসকে ৩-০ গোলে হারিয়ে শিরোপার দিকে আরো একধাপ এগিয়ে যায় পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দল রিয়াল মাদ্রিদ। ম্যাচের ৩১তম মিনিটে করিম বেনজেমার গোলে লিড পায় জিদানের শিষ্যরা। ৮৫তম মিনিটে ইসকো গোল করে ব্যবধান দ্বিগুন করেন। তিন মিনিট পর নাচোর গোলে ৩-০ ব্যবধানে জয়লাভ করে ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নরা। খেলা শেষে কোচ জিনেদিন জিদান বলেন, ‘প্রতিটি ম্যাচে পুরো ৯০ মিনিট একইধাচে খেলা সম্ভব না। আমাদেরও নানাবিধ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। আমরা ভালভাবে খেলতে পারিনি। শেষ পর্যন্ত প্লে-মেকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। তিনিই সতীর্থদের বলের যোগান দিয়ে গোল করিয়েছেন। আর এটিই হচ্ছে এই দলের প্রধান বৈশিষ্ট্য।’

দিনের আরেক ম্যাচে ডিপোর্তিভো লা কারুনাকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে ভ্যালেন্সিয়া। এদিকে নিজেদের মাঠে স্পোর্টিং গিজেনের সঙ্গে গোল শূন্য ড্র করার পরও পয়েন্ট টেবিলের চতুর্থ স্থান ধরে রেখেছে সেভিয়া। তাদের সংগ্রহ ৫৮ পয়েন্ট। সমান সংখ্যক পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানে এগিয়ে থেকে তালিকার তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। ৬৮ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার শীর্ষে রয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। ২য় স্থানে থাকা বার্সেলোনার সংগ্রহ ৬৬ পয়েন্ট।