নালিশ করে প্রতিকার পেলেন জয়রামপুরের নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন

বছর পর ৫০ হাজার টাকা ফেরত দিলেন ইন্স্যুরেন্স উপ প্রকল্প পরিচালক

স্টাফ রিপোর্টার: কেউ ঠকাচ্ছে বা ঠকিয়েছে বলে বসে থাকার বদলে ঊর্ধ্বতন কর্তার কাছে নালিশ করলে প্রতিকার যে মেলে তার আরো একটি উদাহরণ সৃস্টি করলেন দামুড়হুদা জয়রামপুর বারুইপাড়ার নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। লিখিত নালিশের একপর্যায়ে পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স ডেপুটি প্রজেক্ট ডিরেক্টর আজাদ আলী ৫০ হাজার টাকা ফেরত দিতে বাধ্য হয়েছেন। গতপরশু বৃহস্পতিবার তিনি দামুড়হুদা বাসস্ট্যান্ডে কয়েজন জনপ্রতিনিধি ও ইন্স্যুরেন্সের কয়েক কর্মকর্তার উপস্থিতিতে এ টাকা ফেরত দিয়ে তিনি পার পান।

গ্রাহকের অভিযোগে জানা যায়, ২০০৯ সালে দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুর গ্রামের বারুইপাড়ার মৃত নজরুল ইসলাম পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ডেপুটি প্রজেক্ট ডিরেক্টর আজাদ আলীর মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকার একটি একক বীমা করেন। ২০১১ সালে তিনি হাউলি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে ২ নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী হয়ে নির্বাচিত হন। ওইদিনই নির্বাচন কেন্দ্রে সঙঘর্ষে তিনি নিহত হন। বীমার নিয়ম অনুযায়ী কোনো গ্রাহকের অস্বাভাবিক মৃত্যু হলে তিনি বীমা অঙ্কে দ্বিগুণ টাকা ফেরত পাবেন। সেই হিসেবে নজরুল ইসলামের পরিবার ১ লাখ ৩ হাজার ৩শ টাকা পাওয়ার কথা। সে হিসেবে পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স থেকে নজরুল ইসলামের স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনের নামে ২০১২ সালে ১ লাখ ৩ হাজার ৩০০ টাকার একটি চেকও ইস্যু হয়। কিন্তু তাকে শুধুমাত্র বীমার অঙ্ক অর্থাত ৫০  হাজার টাকা দেন আজাদ। বিস্তারিত না জেনেই সরল বিশ্বাসে মেনে নেন নিহত নজরুল ইসসলামের স্ত্রী। তখন ওই ৫০ হাজার টাকা সাবিনা ইয়াসমিনকে না দিয়ে তার মেয়ের নামে একটি বীমা করে দেন আজাদ। সম্প্রতি বিষয়টি জানতে পারেন সাবিনা ইয়াসমিন। পরে এ বিষয়ে কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিকট লিখিত অভিযোগ করেন সাবিনা ইয়াসমিন। এরপরই টনক নড়ে কর্মকর্তাদের। গতকাল দামুড়হুদা চৌরাস্তা এলাকায়  আত্মসাৎ করা টাকা ফেরত দেয়ার সময় অভিযুক্ত ইন্স্যুরেন্স কর্মকর্তা আজাদ আলী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, হাউলি ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর জহির উদ্দিন, পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ডিপিডি গোলাম সরোয়ার, এপিডি সালাউদ্দিন বিশ্বাস মিলন, নিহত নজরুলের ছেলে নাজমুলসহ অনেকে।

এ বিষয়ে পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সিনিয়র ম্যানেজার জাকির হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, গ্রাহকের প্রাপ্য বীমা অঙ্কের দ্বিগুন টাকা সাবিনা ইয়াসমিনের নামে চেক ইস্যুর মাধ্যমে পরিশোধ করা হয়েছে। এ বিষয়ে পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিএম ইউসুফ আলীর সাথে মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় সাধারণ গ্রাহকদের অনেকেই অভিযুক্ত আজাদ আলীকে নিয়ে বিরূপ সমালোচনা শুরু করেন। ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ইস্যুকৃত সাবিনা ইয়াসমিনের চেকের সেই টাকা কিভাবে অভিযুক্ত ক্যাশ করলেন সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখার পাশাপাশি কোম্পানির সুনাম রক্ষার স্বার্থে বিভাগীয় তদন্তপূর্বক উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়ার প্রতিও গুরুত্বারোপ করেছেন অনেকে।

এদিকে গতরাতে আজাদ আলী মোবাইলফোনে মাথাভাঙ্গাকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ সঠিক নয়। একটি বিষয় উত্থাপন হওয়ার প্রেক্ষিতে ঊর্ধ্বন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে তাদের পরামর্শ অনুপাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। গ্রাহকের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ অবান্তর।