স্টাফ রিপোর্টার: ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) ১৩৬তম সম্মেলন আজ ঢাকায় শুরু হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় পাঁচ দিনব্যাপী এ সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। এ সময় তিনি স্মারক ডাকটিকিট উন্মোচন এবং আইপিইউ ওয়েবটিভি উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধন উপলক্ষে সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় বর্ণিল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সম্মেলনের অন্যান্য ইভেন্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) অনুষ্ঠিত হবে।
১৩৮ বছরের ইতিহাসে সংস্থাটি এবারই প্রথমবারের মতো কোনো পরিবেশবান্ধব সম্মেলনের (গ্রিন অ্যাসেম্বলি) আয়োজন করছে। আর বাংলাদেশের ইতিহাসে আন্তর্জাতিক পরিসরে এটাই সবচেয়ে বড় আয়োজন। পাঁচ দিনের এ সম্মেলনে বিশ্বের ১৩২টি দেশের স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার ও সংসদ সদস্যসহ প্রায় দেড় হাজার প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন। তবে পাকিস্তানসহ ছয়টি দেশ সম্মেলনে অংশ নিচ্ছে না। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ও আইপিইউর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এ সম্মেলনের প্রেসিডেন্ট স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। এবারের সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য- ‘বৈষম্যের প্রতিকার: সবার জন্য মর্যাদা ও কল্যাণ নিশ্চিত।’ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী এবং শিশু অধিকারকর্মী কৈলাস সারথি। ১৮৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত আইপিইউর আন্তর্জাতিক সম্মেলন প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে হচ্ছে। সম্মেলন উপলক্ষে শুক্রবার বিআইসিসিতে স্থাপিত মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, আইপিইউ প্রেসিডেন্ট সাবের হোসেন চৌধুরী ও আইপিইউর সেক্রেটারি জেনারেল মার্টিন চুংগং। সম্মেলন উপলক্ষে নেয়া হয়েছে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বাংলাদেশ ১৯৭২ সালে রোমে অনুষ্ঠিত আইপিইউ কাউন্সিলে অংশ নেয়ার মাধ্যমে আইপিইউতে যুক্ত হয়।
জঙ্গিবাদ রোধের কৌশল নিয়ে আলোচনা করবে আইপিইউ: সংবাদ সম্মেলনে আইপিইউ সেক্রেটারি জেনারেল মার্টিন চুংগং বলেন, অসমতা ও বিচারহীনতাই বিশ্বব্যাপী সহিংস উগ্রবাদ বাড়ার অন্যতম কারণ। আইপিইউ এ বিষয়গুলো নিয়ে ঢাকার সম্মেলনে আলোচনা করবে।
সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ আজ বৈশ্বিক সমস্যা। শুধু সামরিক কৌশল দিয়ে এর মোকাবেলা করা যাবে না। এর মূল কারণ খুঁজে বের করতে হবে। সরকারের গৃহীত কৌশলের পাশাপাশি পার্লামেন্ট মেম্বাররা কীভাবে এ নিয়ে কাজ করতে পারেন, সেই কৌশল ঠিক করতে আইপিইউ নির্বাহী কমিটিতে আলোচনা হবে। তিনি বলেন, সংসদ সরকারের কোনো সম্প্রসারণ নয়। সরকারের বাইরে সংসদের কাজ আছে। সেই বিষয়গুলো নিয়ে আইপিইউ কাজ করবে। সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক অগ্রগতি তুলে ধরা এবং বাংলাদেশ সম্পর্কে সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারের মন্তব্যের পর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সৃষ্ট নেতিবাচক ধারণা দূর করার একটি সুবর্ণ সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে এ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, এবারের আইপিইউ সম্মেলন বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় একটি বড় অর্জন। গণতন্ত্রকে সুসংহতকরণ, সংসদীয় গণতন্ত্রের রীতিনীতি চর্চার ক্ষেত্রে আইপিইউ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তিনি এ আয়োজনে সহযোগিতার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, আমরা এ সম্মেলন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে বাংলাদেশের চলমান অগ্রগতি, সম্ভাবনা এবং একটি ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সম্ভাবনাময় বাংলাদেশ গড়ার কথা তুলে ধরার সুযোগ পাবো।
স্পিকার জানান, জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়ার নেতৃত্বে বাংলাদেশের ১৭ সদস্যের প্রতিনিধিদল সম্মেলনে অংশ নেবে। প্রতিনিধিদলে সরকারি-বিরোধী দল, স্বতন্ত্র ও নারী সংসদ সদস্যরা রয়েছেন।