ডিঙ্গেদহ প্রতিনিধি: কেরু কোম্পানির নিকট থেকে লিজ নেয়া জমিতে লাগানো বেগুন ও কচুক্ষেত ট্রাকটর দিয়ে ভেঙে দেয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার সকালে কেরু কোম্পানির ফুলবাড়ি কৃষি খামারের কর্মকর্তারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগে ক্ষেত মালিক ফুলবাড়ি গ্রামের জোয়াদ আলীর ছেলে সুবারেক বলেন, ২০১৬ সালে কেরু কোম্পানির নিকট থেকে ফুলবাড়ি কৃষি খামারের ১ একর ২৮ শতক জমি লিজ নিয়ে বেগুনের চাষ করি। এর মধ্যে প্রায় ৫০ শতক জমিতে ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে কচু লাগায় এবং বাকি প্রায় আড়াই বিঘা জমিতে বেগুন ছিলো। এখনও ৬ মাস জমি লিজের মেয়াদ আছে। লিজের টাকা ও নিয়মিতভাবে পরিশোধ করা হয়েছে। কিন্তু মেয়াদ না শেষ হতেই গতকাল সোমবার সকালে কেরু কোম্পানির ইনচার্জ আবু তালহা ও সহকারী হারুন আলী তার সকল মাঠ পাহারাদার নিয়ে এসে ট্রাকটর দিয়ে দেড় বিঘা জমির কচু ও বেগুন গাছের আংশিক ভেঙে নষ্ট করে দিয়েছে।
এ ব্যাপারে কেরুর খামারের উপ-ব্যবস্থাপক ও ফুলবাড়ি কৃষি খামারের ইনচার্জ আবু তালহা জানান, ফুলবাড়ি গ্রামের সোবারেক আলী কেরু কোম্পানির নিকট থেকে ১ একর ২৮ শতক জমি ২০১৬ সালের আগস্ট মাস পর্যন্ত লিজ নিয়ে বেগুনের চাষ করে। কিন্ত উল্লেখিত সময়ের মধ্যে বেগুনের আবাদ না ওঠায় পুনরায় লিজের জন্য আবেদন করেন। ওই সময়ের মধ্যে কেরু কোম্পানি অন্য কোনো আবাদ না করায় ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত কেরু কর্তৃপক্ষ সোবারেক আলীর নিকট জমিটি পুনরায় লিজ দেয়। ফার্ম এলাকার জমির মেয়াদ শেষ হলে নতুন করে আর কোনো জমি লিজ না দেয়ার জন্য কেরু কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেন বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশন এর চেয়ারম্যান। এরই প্রেক্ষিতে ফুলবাড়ী গ্রামের সোবারেক আলি ২০১৭ সালের জানুয়ারী মাসে যখন কচু লাগান তখন তাকে কচু লাগাতে নিষেধ করা হয় এবং ফেব্রুয়ারী মাসের ২৮তারিখের পর বেগুনের গাছ তুলে নেয়ার জন্য বলা হয়। কিন্তু সোবারেক তাদের কথা উপেক্ষা করে কচু লাগিয়ে দেয়। এর পর ২৮ ফেব্রুয়ারীর পর কচু ও বেগুন গাছ তুলে নিয়ে জমি ছেড়ে দিতে বললে সোবারেক বলে ২০দিন সময় দিলে হুইপ সাহেবের দিয়ে স্পেশাল অর্ডারে মাধ্যমে জমিটি লিজ করিয়ে নিবে। কিন্তু মার্চ মাস প্রায় শেষ হতে চললে ও বার বার জমি ছেড়ে দিতে বললে ও কোন কর্নপাত না করে টালবাহনা করতে থাকে। কর্পোরেশনের নির্দেশ মোতাবেক বর্তমানে কেরু ফার্ম এলাকার সকল জমি চাষ করে কলাই, তিল জাতীয় ফসল বপণ করছেন। সোবারেকের নিকট লিজকৃত জমির মেয়াদ শেষ হয়ে ১ মাস পার হলেও সোবারেক তার ফসল তুলে জমি না ছাড়ার কারণে কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মোতাবেক সরকারি জমিটি দখল করে কলাই বোনা হয়েছে এবং সোবারেকের পিতার অনুরোধে বাকি বেগুন তুলে নেয়ার জন্য ৩ দিন সময় দেয়া হয়েছে। ৩ দিনের মধ্যে বেগুন গাছ তুলে না নিলে সম্পূর্ণ বেগুন গাছ ভেঙে ফেলে কলাই বুনে দেয়া হবে।
এ ব্যাপারে ফার্ম ম্যানেজার আব্দুল বারী জানান, সোবারেকের লিজের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর বার বার জমিটি ছেড়ে দেয়ার কথা বলার পর কোনো কর্নপাত না করলে ট্রাক্টর দিয়ে চাষ করে কলাই বোনা হয়েছে এবং সরকারি জমি দখল করা হয়েছে।