ক্ষুদ্র মাছ ব্যবসায়ীদের আন্দোলন অব্যাহত : আড়তেই খুচরা মাছ বিক্রির সিদ্ধান্ত
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের কোনো বাজারেই গতকাল মাছ পাননি ভোক্তা সাধারণ। ক্ষুদ্র মৎস্য ব্যবসায়ীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে বাজারে মাছ বিক্রি বন্ধ রয়েছে। আন্দোলনের খবর পেয়ে গতকাল তেমন কোনো মহাজন চুয়াডাঙ্গায় মাছ আমদানি করেননি। তবে মাছের আড়তপট্টির আড়তদারদের তরফে জানানো হয়েছে, আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে চুয়াডাঙ্গা মাছের আড়তেই খুচরা ক্রেতাদের নিকট মাছ বিক্রি করা হবে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা মৎস্য আড়তদার মালিক সমিতির একাধিক নেতা বলেছেন, যতোদিন চুয়াডাঙ্গার ক্ষুদ্র মাছ বিক্রেতারা কমিশন না দিয়ে আন্দোলনে থাকবে ততোদিন আড়তেই খুচরা মাছ বিক্রি করা হবে। যদিও ক্ষুদ্র মাছ ব্যবসায়ীদের আন্দোলনের খবরে গতকাল বুধবার তেমন কোনো বেপারী বা মৎস্যচাষি চুয়াডাঙ্গার আড়তে মাছ আনেননি। গতপরশু উদ্বৃত্ত কিছু মাছ গতকাল আড়তদারদের বিক্রি করতে দেখা গেছে। জেলার বিভিন্ন এলাকার মাছের আড়তদারদের নিয়ে গতকাল চুয়াডাঙ্গা মাছের আড়তদার সমিতির নেতৃবৃন্দ বৈঠকে মিলিত হয়ে মধ্যাহ্নভোজে শরিক হন। এ আয়োজনকে ক্ষুদ্র মৎস্য বিক্রেতাদের অনেকেই আড়তদারদের ভুড়িভোজ বলে অখ্যায়িত করে বলেন, কিছুতেই গরিব ব্যবসায়ীরা ওই আড়তদারদের অন্যায় দাবি মানবে না।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা মৎস্য আড়তদার মালিক সমিতি গত ১৮ মার্চ থেকে ফেড়ে বা ক্ষুদ্র মাছ ব্যবসায়ীদের ওপরও কেজিপ্রতি কমিশন আদায় শুরু করেন। গত ২০ মার্চ এ নিয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের মাছের আড়তপট্টিতে আড়তদার ও ফোড়ে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। সকাল ৯টার দিকে চুয়াডাঙ্গা ক্ষুদ্র মাছ ব্যবসায়ী সমিতি মাইকে প্রচার দিয়ে আড়ত থেকে মাছ কেনা বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়ে বলে, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বা ফোড়েদের নিকট থেকে কমিশন আদায় বন্ধ না করা পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত বলবত থাকবে। এ বিষয়ে তারা জেলা প্রশাসকের নিকট নালিশও করে। অপরদিকে আড়তদারদের তরফেও তাদের কমিশন আদায়ের যুক্তি তুলে ধরে জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি দেয়। বিকলে সমঝোতার উদ্যোগ নেয়া হলেও তা ভেস্তে যায়। ক্ষুদ্র মাছ ব্যবসায়ীরা তাদের আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেয়। ফলে গতকাল চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের কোনো বাজারেই মাছ কেনা-বেচা হয়নি। জেলা শহরের প্রবেশদ্বারগুলোতে সকাল থেকেই ফোড়েদের আড়তে যাওয়া এবং মাছ কেনা বন্ধ করতে জোরালো পিকেটিং করতে দেখা গেছে। অপরিদকে বাজারে মাছ কিনতে যাওয়া ভোক্তা সাধারণ মাছ না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরতে হয়েছে। এমনকি জামাই এলেও গতকাল জামাইয়ের পাতে মাছ দিতে পরেননি অনেকে। অবশ্য ফ্রিজওয়ালা বাড়ির শাশুড়ি ফ্রিজ থেকে মাছ বের করে ভাজতে নিশ্চয় ভোলেননি। তবে মাছের খুচরা বাজারে খুচরা ব্যবসায়ীদের আন্দোলন অব্যাহত থাকলে ফ্রিজশূন্য হতে কতোক্ষণ?