গৃহকর্তাদেরকে বেঁধে রেখে গয়নাসহ তিন লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট
কোর্টচাঁদপুর প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার দুটি গ্রামের ৪ বাড়িতে ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে। গত শুক্রবার দিনগত রাতে উপজেলার সারুটিয়ায় ৩টি এবং পাশে রুদ্রপুর গ্রামের একটি বাড়িতে ডাকাতদল সোনার গয়না ও নগদ অর্থসহ তিন লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে।
ডাকাতির শিকার গৃহকর্তারা জানান, সংঘবন্ধ ডাকাতদল বাড়িতে প্রবেশ করে নিজেদেরকে পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য বলে পরিচয় দেয়। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাড়ির সদস্যদের ধারালো আস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বাড়ির পুরুষদেরকে রশিদিয়ে বেঁধে রেখে সোনা রূপার গয়না ও নগদ টাকা নিয়ে চলে যাই। ডাকাতির খবর পেয়ে রাতেই স্থানীয় ক্যাম্প পুলিশ ঘটনা স্থল পরিদর্শন করে এবং গ্রামবাসী ও ডাকাতির শিকার পরিবারের লোকজনের নিকট ডাকাতির বিবরণ শোনেন।
গ্রামবাসী জানায়, ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার দৌড়া ইউনিয়নের সারুটিয়া গ্রামের কর্মকার পাড়ায় রাত ১১টার দিকে একদল সংঘবদ্ধ ডাকাতদল হানা দেয়। তারা গোপাল চন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে নিত্যানন্দ (৪৫) বাড়িতে প্রবেশ করে তাকে ঘুম থেকে ডেকে তোলে কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই ধারালো অস্ত্রে মুখে জিম্মি করে বাড়ির সকলকে রশিদিয়ে বেঁধে রেখে ঘরে রাখা সোনার গয়না নগদ অর্থসহ অর্ধ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে যায়। এরপর পাশে আদিত্য নাথের ছেলে সরজিতের বাড়িতে প্রবেশ করে একইভাবে জিম্মি করে সোনার গয়নাসহ এক লাখ টাকার মালামাল এবং আদিত্য নাথের অপর ছেলে রতন কর্মকারের বাড়িতে প্রবেশ করে একটি মোবাইল, নগদ টাকা নিয়ে যায়।
ডাকাতির শিকার গৃহকর্তা নিত্যানন্দ জানান, রাতে আমি ঘরের বারান্দাই ঘুমিয়ে ছিলাম। রাত আনুমানিক ১১টা হবে। এমন সময় বাড়ির মধ্যে ১০-১২জন লোক প্রবেশ করে। আর ঘুম থেকে ডেকে তোলে। তারা নিজেদের পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টির লোকজন বলে পরিচয় দিয়ে আমাকে ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে রশিদিয়ে বেঁধে ফেলে। পরে বাড়ির অন্যদেরও একইভাবে বেঁধে রেখে ১টি চেন, ২টি আংটি, ২ জোড়া কানের দুল, ৩টি মোবাইল, ১ জোড়া নুপুর, ছেলের এইচ এসসি পরীক্ষার জন্য জমানো ৫ হাজার টাকা নতুন কাপড়সহ প্রায় ৬০-৬৫ হাজার টাকার মালামাল নিয়ে গেছে।
পাশের বাড়ির গৃহকর্তা শ্যামলি জানান, রাতে বাড়ির সবাইকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে ধারালো আস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ১টি চেন, ২টি আংটি, ২জোড়া কানের দুল, ২টি মোবাইল, ১ জোড়া নুপুর, ছাগল ও মসুরির বিক্রি করে রাখা ২৩ হাজার টাকাসহ ১ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে গেছে। পরে পাশের বাড়িতে প্রবেশ করে ১টি মোবাইল এবং নগদ ৫ হাজার ১শ টাকা নিয়ে চলে যায়। তিনি আরও জানান, যে সকল লোকজন বাড়ির মধ্যে প্রবেশ করেছিলো তাদের পরনে আনসার সদস্যের ন্যায় ডোরাকাটা পোশাক এবং পায়ে মজবুত জুতা পরা ছিলো। ডাকাতির খবর পেয়ে রাতেই তালসার পুলিশ ক্যাম্পের সদস্যরা ঘটনা স্থলে আসেন এবং ডাকাতি ঘটনার বিবরণ শোনেন। একই রাতে পাশে রুদ্রপুর গ্রামের ওয়াসেল আলীর ছেলে শরিফুল ইসলামের বাড়িতে ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে। ডাকাতদল বাড়ির লোকজনদেরকে জিম্মি করে সোনা, রুপার গয়না নগদ টাকাসহ লক্ষাধিক টাকার মালামাল নিয়ে গেছে।
গৃহকর্তা শরিফুল ইসলাম জানান, রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টা হবে এমন সময় বাড়ির মধ্যে ১০-১২ জন ডাকাতদল প্রবেশ করে বাড়ির লোজনদেরকে জিম্মি করে। পরে ঘরে কয়েকজন প্রবেম করে ১টি চেন, ১টি আংটি, ২০ জোড়া কানের দুল, ১টি মোবাইল, ঘরে রাখা নগদ ৭ হাজার টাকাসহ লক্ষাধিক টাকার মালামাল নিয়ে গেছে। ডাকাতির খবর পেয়ে স্থানীয় লক্ষীপুর পুলিশ ক্যাম্পের সদস্যা ঘটনা স্থলে যান এবং ডাকাতির বিবরণ শোনেন। বেশ কিছু দিন পর আবার এই ডাকাতির ঘটনা গ্রামবাসীর মধ্যে ডাকাত আতঙ্ক ছড়িয়েছে।