আবাদে ক্ষতির খেসারত সমাজকেও দিতে হয়

 

আমাদের দেশ কৃষি প্রধান দেশ। এদেশের কৃষকদের ক’জন প্রশিক্ষণ নিয়ে কৃষক হয়েছেন? প্রায় সকলেই বংশপরমপরায় কৃষক। দেখেই শেখা। বিজ্ঞান যুগ এখন। কৃষিক্ষেত্রে প্রযুক্তির ছোঁয়া পদে পদে। লাঙল, মই উঠে গেছে, বীজও হাতে ছেটানোর বদলে এসেছে ড্রাম সিডার। শুধু কি তাই, আরো কতোকিছু! এরপরও ধানের আবাদে পাতাপোড়া রোগ কেন? নিশ্চয় সচেতনতায় ঘাটতি। চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকা বেলগাছি দক্ষিণপাড়ার ধানচাষি আবু কাওছার বিশ্বাস তা অকপটে স্বীকার করে অভিযোগ তুলে বলেছেন, বিলমাঠে ধানের আবাদ অকালে শুকিয়ে যাচ্ছে দেখে প্রতিকারের উপায় যানতে উপজেলা কৃষি অফিসে গিয়ে সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। এছাড়াও যে অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে তা খন্ডনও করা হয়েছে বেশ দক্ষতার সাথে। দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকায় গতকাল এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে উভয়পক্ষের বক্তব্য যথাযথ গুরুত্বসহকারে তুলে ধরা হলেও যে বিষয়টি খটকার কারণ, তাহলো ধানের আবাদে পাতাপোড়া প্রতিরোধে ধানচাষিকে কেন আগেই সতর্ক করা হয়নি? কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অধিনে অঞ্চলভিত্তিক একজন করে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাই শুধু দায়িত্ব পালন করেন না, বহু গ্রামেই রয়েছে কৃষক ক্লাব। এসব ক্লাবের নামে বরাদ্দও কম আসে না। তাহলে এতোদিন জেলা শহরের উপকণ্ঠের ধানচাষিরা কেন পাতাপোড়া রোগের মতো ভাইরাসজানিত রোগ সম্পর্কে তেমন কিছুই জানেন না? অজুহাত খাড়া করে বা যুক্তি দেখিয়ে চাকরি অরক্ষিত রাখা গেলেও এ ধরনের কিছু প্রশ্ন কর্মকর্তাদের কারো কারো কর্তব্যপরায়ণতায় যে ঘাটতি তা স্পষ্ট করে দেয়। এক দুজন এক ধানচাষির ধানের আবাদ যে কারণেই নষ্ট-বিনষ্ট হোক, তার ক্ষতি শুধু ওই ধানচষিরই নয়া, আবাদে ক্ষতির খেসারত কিছুটা হলেও সমাজকেও দিতে হয়। ফলে আবাদে কোনো প্রকারের ক্ষতি খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। কী কারণে কোন ধরনের ভাইরাস কখন কোন ফসলের ক্ষতির কারণ হতে পারে, তা আগাম জেনে কৃষকদের জানাতে না পারার দায় বা ব্যর্থতা কৃষি কর্মকর্তাদের ওপরই বর্তায়।