স্বামীর দেয়া আগুনে ঝলসে যাওয়া স্ত্রী অন্তরাকে নেয়া হয়েছে ঢাকায় : মামলা হয়নি

পরকীয়ার বিষয়টি গোপন করার চেষ্টা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি আগুন ধরিয়ে দেয়ার ঘটনা ভিন্নখাতে নেয়ার পাঁয়তারা?

 

স্টাফ রিপোর্টার: আড়াই বছরের শিশু আবির তার দাদির কাছে থাকলেও ঘুরে ফিরেই খুঁজছে মা লিমা আক্তার অন্তরাকে। তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল থেকে গতকাল মঙ্গলবার আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নেয়া হয়েছে। গতপরশু তাকে তার স্বামী চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের বেগমপুর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া বটতলাপাড়ার নাজমুল মল্লিক আগুন দিয়ে পুড়িয়ে পালিয়েছে। যদিও স্বামীপক্ষের লোকজন এ ঘটনাকে ভিন্নখাতে নেয়ার জন্য লিমা আক্তার অন্তরা নিজেই নিজের শরীরে আগুন দিয়েছে বলে জোর প্রচার প্রচারনা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি মোটা অঙ্কের টাকার নিয়ে পুলিশ ম্যানেজের জন্য ঘুরছে। গতকাল শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মামলা হয়নি। লিমা আক্তারের পিতা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ফলে গতকাল আর থানায় গিয়ে মামলা করতে পরেননি। আজ বুধবার মামলা করতে পারেন।

অগ্নিদগ্ধ লিমা আক্তার অন্তরা অভিযোগ করে বলেছে, সোমবার সকালে স্বামীগৃহের রান্না ঘরে রান্নাবান্না নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। রান্নার মশা নিতে ঘরে গিরে স্বামী পেছন থেকে পরনের শাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে পালিয়ে যায়। আগুনে পুড়ে যন্ত্রণায় চিৎকার করতে থাকি। এ সময় বাড়ির লোকজন ছুটে আসে। উদ্ধার করে। হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। প্রথমে প্রকৃত ঘটনা গোপন করার জন্য চাপ দিতে থাকে শ্বশুর সানোয়ার মল্লিকসহ তার সাথে লোকজন। পরে আমার পিতাপক্ষের লোকজন আমার পাশে পৌঁছুলে সত্যি কথা বলি।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের তিতুদহ বলদিয়া গ্রামের আলম আলীর মেয়ে লিমা আক্তার অন্তরা খাতুন যখন হিজলগাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী ছিলো তখন বিয়ে হয় বেগমপুর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া বটতলাপাড়ার সানোয়ার মল্লিকের ছেলে নাজমুল মল্লিকের বিয়ে হয়। বিয়ের পর লিমা আক্তার অন্তরা জানতে পারে তার এক মামির সাথে অবৈধ সম্পর্কের কারণে ধরা পড়ার পর তড়িঘড়ি করে নাজমুলকে বিয়ে দেয়া হয়েছে। সেই নাজমুলের স্ত্রী হতে হয়েছে লিমা আক্তার অন্তরাকে। বিয়ের পর বিষয়টি জানলেও লিমা আক্তার অন্তরা তার স্বামীকে সুপথে রাখার চেষ্টা করে। নাজমুল সুপথেই থাকে। এদের সংসারে আসে পুত্র সন্তান। নাম রাখা হয় আবির। ওর বয়স বর্তমানে আড়াই বছর। অপরদিকে নাজমুল কয়েক মাস ধরে সেই পুরাতন পরকীয়ার সাথে আবারও অবৈধ সম্পর্ক স্থাপন করে। লিমা আক্তার অন্তরা এ তথ্য জানিয়ে বলেছে, সেই মামির সাথে অবৈধ সম্পর্ক  আবারও গড়ে তোলার সাথে সাথে আমার ওপর নির্যাতন করতে থাকে। এরই একপর্যায়ে গত সোমবার সকালে পরিকল্পিতভাবে সে আমার গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পলিয়েছে।

লিমা আক্তার অন্তরার শরীরের নিম্নাংশের অর্ধেক বেশি পুড়ে গেছে। যন্ত্রণায় কাতরাছেন তিনি। পরশু গভীর রাতে সদর থানায় লিমা আক্তার অন্তরার পিতা ও এক মেম্বার সদর থানায় গিয়ে মামলা করতে যান। সদর থানার ওসি (তদন্ত) সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে হাসপাতালে রোগী দেখতে যান। রোগীর নিকট থেকে ঘটনার বর্ণনা শোনেন। অবশ্য গতকাল পর্যন্ত মামলা হয়নি। এ বিষয়ে ওসি (অপারেশন) আমির আব্বাসের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মামলা করতে কেউ আসেননি। অপরদিকে লিমা আক্তার অন্তরা খাতুনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় গতকাল তাকে ঢাকার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নেয়া হয়েছে। এদিকে তার আড়াই বছর বয়সী শিশুসন্তান আবিরকে দাদির কাছে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে।