আলমডাঙ্গা ব্যুরো: আলমডাঙ্গা জগন্নাথপুর মাঠপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নানা সমস্যায় জর্জরিত ও দুর্নীতির সংবাদ দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকায় প্রাকাশের পর টনক নড়েছে কর্তৃপক্ষের। গতকাল বুধবার সকালে সংবাদ পড়ে সরজমিনে উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নুর ইসলাম ও শাহারিয়ার কবীর বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে সহাকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নুর ইসলাম প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে আগামী ৭ দিনের মধ্যে বিদ্যালয়ের পুরাতন টিন অপসারণ করে নতুন টিন লাগানোর নির্দেশ দেন। বিদ্যালয়ের আসা স্লীপের অনুদানের টাকা দিয়ে এ কাজ করতে বলেন। প্রাক-প্রাথমিকের টাকা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের সহয়তায় বিদ্যালয়ে একটি অফিস কক্ষ নির্মাণ করতে বলেন। যত দ্রুত সম্ভব বিদ্যালয়ের জলাবদ্ধতা কাটানোর জন্য মাটি ভরাটের ব্যবস্থা করতে বলেন।
উল্লেখ্য, গতকাল বুধবার মাথাভাঙ্গা পত্রিকায় আলমডাঙ্গা উপজেলার কালিদাসপুর ইউনিয়নের জগন্নাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি এখন নানা সমস্যা ও দুর্নীতিতে জর্জরিত। তীব্র গ্রীষ্মেও এখন জগন্নাথপুর মাঠপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়টি পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির বিরুদ্ধে এলাকাসীর অভিযোগের অন্ত নেই। ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠিত স্কুলটি এখন সরকারি হলেও টিনের বেড়া ও চালের ৪টি রুম বিশিষ্ট একটি ঘর সর্বস্ব।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কয়েকদিন আগের বৃষ্টির পানি এখনও জমে আছে বিদ্যালয়ের চারিদিকে। এক প্রকার পানিবন্দী হয়ে আছে বিদ্যালয়টি। বছরের মাত্র কয়েক মাস বাদে সারা বছরই এমন অবস্থা বিরাজ করে। জুতা-স্যান্ডেল হাতে নিয়েই বিদ্যালয়ে ঢুকতে হয় শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের।
অভিযোগকারীরা জানান, ২০১৬ সালে ও ২০১৭ সালে মোট ৮০ হাজার স্লিপের টাকা অনুদান পেলেও স্কুলের জন্য কোনো কাজ করা হয়নি। ২০১৬ সালে স্লিপের টাকায় কাজ না করে ওই বছর শিলাবৃষ্টিতে জেএস মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভবনের চালের টিন ফুটো হয়ে ব্যবহার অনুপযুগী হয়ে পড়ে। সেকারণে ওই মাধ্যমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভবনের চালের পুরাতন নষ্ট টিনগুলো পরিবর্তন করে নতুন টিন লাগায়। আর পুরাতন ফুটো টিনগুলো প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চেয়ে নিয়ে তা দিয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন মেরামত করে। বিষয়টি ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েকজন সহকারী শিক্ষকও স্বীকার করেছেন।
অভিযোগকারীরা আরও জানিয়েছেন, এই গ্রাম লাগুয়া শ্রীরামপুর গ্রাম। শ্রীরামপুর গ্রামে গত বছর জিকে সেচ প্রকল্পের ক্যানেলের ওপর একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়। ওই ব্রিজের ইট অবৈধভাবে নিয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ল্যাট্রিন তৈরি করা হয়। আর টিউবওয়েলটি এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তরিত করা হয়। প্রধান শিক্ষক জেসমিন আক্তারের বিরুদ্ধেও রয়েছে নানা অভিযোগ। তিনি নিয়োমিত বিদ্যালয়ে যান না বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। এ সংবাদ লেখার সময় প্রধান শিক্ষকের সাথে মোবাইলফোনে রিং দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
৫ম শ্রেণির ছাত্র মানিক হোসেনের সাথে কথা বলার সময় সে জানায়, তাদের খেলার কোনো মাঠ নেই। বিদ্যালয়ের যাওয়ার সময় কখনও পা পিছলে পড়ে গেলে আবার বাড়ি ফিরে যাওয়া লাগে। বই খাতা নষ্ট হয়।