জীবননগরের ধোপাখালী গ্রামে স্কুলশিক্ষকের থাপ্পড়ে শ্রবণ শক্তি হারাতে বসেছে এক শিশু : বিচার দাবি

 

স্টাফ রিপোর্টার: শিক্ষকের চড় থাপ্পড়ে এক কানে শ্রবণ শক্তি হারাতে বসেছে চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার ধোপাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির মেধাবী ছাত্র ফারদিন আহম্মেদ ফাহিম। জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর শারীরিক নির্যাতনের শিকার ফাহিমের পিতা আরিফ উদ্দিনের দাখিল করা লিখিত অভিযোগে এ তথ্য জানা গেছে।

অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ১২ ফেব্রুয়ারি ধোপাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির থার্ড বয় ফারদিন আহম্মেদ ফাহিম (১১) স্কুলের  টিফিন চলাকালে অন্য শিক্ষার্থীদের সাথে খেলছিলো। এর মধ্যে একই গ্রামের মানসিক প্রতিবন্ধী শামসুল ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে চলে এলে পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্র তাকে ঢিল মারে। দোষ হয় ফাহিমের নামে। এই অপরাধে স্কুলের সহকারী শিক্ষক মমিনুল ইসলাম একবার বেত দিয়ে ফারদিন আহম্মেদ ফাহিমকে শাসন করেন। পরে একই কারণে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খাজা আহমেদ কানে প্রচণ্ড আঘাত করেন। স্কুল থেকে টিসি দিয়ে বের করে দেয়ার হুমকি দেন শিক্ষক খাজা আহমেদ। বাড়িতে ফিরে ফাহিম অসুস্থ হয়ে পড়ে। শুরু হয় প্রচণ্ড কানের যন্ত্রণা। নেয়া হয় যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরলেও হয় না অবস্থার উন্নতি। পরবর্তীতে ৬ মার্চ যশোরে অবস্থিত ন্যাশনাল হিয়ারিং কেয়ার সেন্টারের নাক, কান, গলা বিশেষজ্ঞ ডা. এসএম নাজমুল হক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিশ্চিত হন ফাহিমের একটি কানের শ্রবণ শক্তি প্রায় শেষের পথে। সেখানেই বর্তমানে চিকিৎসাধিন শিশুটি।

ছেলের এ ঘটনার সাথে জড়িত শিক্ষকদের বিচার চেয়ে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি লিখিত অভিযোগ করেন পিতা আরিফ উদ্দিন। জীবননগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর লেখা অভিযোগপত্রের অনুলিপি দেয়া হয় জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর। ঘটনার বেশ কিছুদিন পার হয়ে গেলেও সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় গতকাল বুধবার বেলা ১১টায় চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করেছেন শিশু ফারদিন আহম্মেদ ফাহিমের বাবা-মা।

এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুসের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিষয়টি অবশ্যই তদন্ত করা হবে। আর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রমেন্দ্রনাথ পোদ্দার জানিয়েছেন, শিক্ষকদের বদলি, নিয়োগ নিয়ে কয়েকদিন ব্যস্ত থাকায় এ বিষয়টি তদারকি করার সময় হয়নি। এক কর্মকর্তাকে তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছিলো, তিনি গেছেন ট্রেনিঙে। তবে আগামী সপ্তায় নিজেই তদন্তে যাবেন বলে জানান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। একই সাথে বলেন, তদন্তে কেউ দোষী প্রমাণিত হলে অবশ্যই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। অভিযুক্ত শিক্ষক খাজা আহমেদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সরবরাহ করা মোবাইল নম্বরটি আরেক শিক্ষকের বলে দাবি করা হয় ফোনের অপর প্রান্ত থেকে। তিনি শিক্ষক খাজা আহমেদের পরিচিত বলে দাবি করে ফাহিমের পিতার অভিযোগ মিথ্যা বলে পাল্টা অভিযোগ করেন।