কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: বাউল শিরোমনি ফকির লালন শাহ স্মরণে দোল উৎসবের ৩ দিনব্যাপী আনুষ্ঠানিকতা আজ শেষ হচ্ছে। অষ্ট প্রহরের সাধু সংঘ শেষ হওয়ায় আখড়াবাড়ি ছেড়ে সাধুরা রওয়ানা হয়েছেন নিজ নিজ আশ্রমে। সাধক আর বাউলদের ছাড়া নামমাত্র আলোচনা অনুষ্ঠান আর সাংস্কৃকিত অনুষ্ঠান চলবে রাত পর্যন্ত। মেলা থাকবে আরো ২ দিন।
সরেজমিন আখড়াবাড়ি ঘুরে দেখা যায়, গেরুয়া বসনে শোভিত বাউলদের আসর এখন অনেকটাই ফাকা। রোববার দুপুরের পর থেকে ফাঁকা হতে শুরু হলেও সোমবার সকাল থেকে সাধন সঙ্গিনী, শিষ্যদের নিয়ে দলে দলে সাঁইজীর ধাম ছাড়ছেন দুর-দূরান্ত থেকে আসা সাধুরা। তবে বিদায়ের আগে সাঁইজীর ধামের পরিবেশ হয়ে উঠেছে ভারী, মায়াময়। বিদায় নেয়ার সময় সাধুরা ধরে রাখতে পারেননি চোখের জল। নিজে কেঁদেছেন, কাঁদিয়েছেন শিষ্যকে। গুরু শিষ্য’র চোখের জলে মন ভেসেছে লালন অনুসারী আর দর্শনার্থীদের।
লালন সাধক হুদয় শাহ বলেন, লালন সাধকরা বিশ্বাস করেন তাদের সব কিছুর মূলে গুরু। গুরুকে ভজে তারা পরমাত্মার সন্ধান করে ফেরে। সেই গুরুকে বারবার প্রনাম ও নানা রকম ভক্তি জানিয়ে বিদায় নেন শিষ্যরা। তাই বিদায় বেলায় সাধুরা তাদের চোখের জল ধরে রাখতে পারে না।
লালন মাজারের প্রধান খাদেম ফকির মহম্মদ আলী শাহ বলেন, মায়া আর বস্তু। মায়া ত্যাগ করে বস্তুর সন্ধান করে ফেরে সাধকরা। বস্তুর চেতনা থেকে মানবপ্রেমকে জাগ্রত করা যায়। যার মধ্যদিয়ে একজন মানুষের পূর্ণতা আসে। এমন দীক্ষায় দীক্ষিত সাধকরা দোল পূর্ণিমায় যোগ দিয়ে ধন্য হয়েছেন। আবারও আসবেন তিরোধানের স্মরণোৎসবে।
সাধুরা বাড়ির পথ ধরলেও রাতে লালন মঞ্চে চলবে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। কালী নদীর সামনের মাঠে বসা মেলা চলবে আরো ২ দিন। এদিকে মেলার দোকানিরা জানান, আবহাওয়া খারাপ থাকায় বেচাকেনা খুব একটা জমে ওঠেনি।