ঝিনাইদহে থামছে না কারারক্ষীর জামিন বাণিজ্য : টাকা ফেরৎ চেয়ে উকিল নোটিশ

 

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহ জেলা কারাগারে হাজতি আসামিদের উচ্চ আদালত থেকে জামিনের আশ্বাস দিয়ে দুজন চিহ্নিত কারারক্ষী রীতিমত বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে ঝিনাইদহ জেলার আইনজীবীদের মাঝে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। জামিন করতে ব্যার্থ হওয়ার পরও আসামিদের টাকা ফেরৎ না দেয়ায় মামুন (ব্যাচ নং ৪২৬৬৭) নামে ঝিনাইদহ জেলা কারাগারের এক কারা রক্ষীকে উকিল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। গতকাল বুধবার পর্যন্ত কারারক্ষী মামুন ৫০ হাজারের মধ্যে ৩৬ হাজার টাকা ফেরৎ দিয়েছেন। সাফায়েত নামে আরেক কারা রক্ষীর বিরুদ্ধেও এমন অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন একই স্থানে থাকার কারণে তারা এহেন কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে বলে অনেকের অভিমত।

প্রাপ্ত তথ্য ও উকিল নোটিশ সূত্রে জানা গেছে, এক মামায় ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গান্না ইউনিয়নের চান্দেরপোল গ্রামের ওমর আলী সোহাগ গ্রেফতার হয়ে কারাগারে যান। হাজতী আসামি সোহাগকে হাইকোর্ট থেকে জামিন করার জন্য কারারক্ষী মামুন ৫০ হাজার টাকা গ্রহণ করেন। কিন্তু মহামান্য হাইকোর্টের কোনো আইনজীবী দিয়ে জামিন করা হয়নি।

এ অবস্থায় গত ২৪ জানুয়ারি ঝিনাইদহের এক আদালত থেকে ওমর আলী সোহাগ জামিন লাভ করেন। হাইকোর্ট থেকে জামিন করার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে কারারক্ষী মামুন টাকা হাতিয়ে নেয়ার পর তা ফেরৎ না দেয়ায় আইনজীবীর দ্বারস্থ হন হাজতী আসামির সোহাগের ভাই তাজ উদ্দীন। ঝিনাইদহ জজ কোর্টের আইনজীবী শওকত আলী ২৩ ফেব্রয়ারি কারারক্ষী মামুনের বরাবর টাকা ফেরৎ চেয়ে উকিল নোটিশ পাঠান। উকিল নোটিশে ১৫ দিনের মধ্যে তার মক্কেলকে টাকা ফেরৎ দিতে বলা হয়। তড়িঘড়ি করে কারারক্ষী মামুন ৫০ হাজার টাকার মধ্যে ৩৬ হাজার টাকা ফেরৎ দিয়েছেন। বাকি টাকা না দিয়ে তাটবাহানা করছেন বলে অভিযোগ করেন সোহাগ।

এদিকে কারারক্ষী মামুনের এহেন কর্মকাণ্ড নতুন নয়। তিনি কালীগঞ্জ উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের সাবেক এক কমিশনারকে উচ্চ আদালত থেকে জামিন করে দেয়ার আশ্বাস দিয়ে ৭০ হাজার টাকা, কোটচাঁদপুর শহরের এক যুবকের কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা এবং শৈলকুপার চড়িয়ারবিল এলাকার আব্দুল হালিমের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তাদের জামিন করাতে পারেনি। তাদেরকে আবার টাকাও ফেরৎ দেয়া হচ্ছে না। টাকা চাইলে হুমকী ধমকি দেয়া হচ্ছে।

ঝিনাইদহ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম খবরের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, কারারক্ষী হিসেবে এই কাজ করা সম্পূর্ণ অন্যায়।

এ বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ কারাগারের জেলার নিজাম উদ্দীন জানান, মামুন নামে কারাগারে এক রক্ষী আছে। আমি নতুন যোগদান করেছি। তবে তিনি জামিন করার নামে কোনো টাকা নেন কি-না জানি না। তবে তথ্য যখন পেলাম তখন তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। এ বিষয়ে করারক্ষী মামুনের ০১৭৩৯৭২৯২৯৯ নাম্বার মুঠোফোনে ফোন করা হলে তার স্ত্রী পরিচয়দানকারী এক মহিলা জানান, তিনি জরুরি কাজে ব্যস্ত আছেন।