ঝিনাইদহের মরমী লোককবি পাগলাকানাইয়ের তিন দিনব্যাপী জন্ম জয়ন্তী উৎসব শুরু হচ্ছে আজ

 

জাহিদুর রহমান তারেক: ঝিনাইদহের মরমী লোক কবি পাগলা কানাইয়ের ২০৭ তম জন্ম জয়ন্তী আজ বৃহস্পতিবার। এ উপলক্ষ্যে বেড়বাড়ি গ্রামে পাগলাকানাই স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদ তিন দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। আজ সকাল ১০টায় কবির নিজ গ্রাম বেড়বাড়িতে প্রধান অতিথি হিসেবে জন্ম উৎসবের উদ্বোধন করবেন জেলা প্রশাসক মাহবুব আলম তালুকদার। এছাড়া কবির মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, মিলাদ মাহফিল, লাঠি খেলা, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও কবি রচিত সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। ১১ মার্চ এই অনুষ্ঠান শেষ হবে।

অতিথি হিসেবে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক আবু ইউসুফ মো রেজাউর রহমান, ঝিনাইদহ জেলা পরিষদের সচিব মোহাম্মদ রেজাই রাফিন সরকার, গবেষক অ্যাড. মীর সাখাওয়াত হোসেন ও আক্কাস আলী উপস্থিত থাকবেন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করবেন পাগলাকানাই স্মৃতি সংরক্ষণ সংসদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুর রশিদ।

উল্লেখ্য, লোক-সাধনা ও মরমী সঙ্গীতের এ কবি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বেড়বাড়ি গ্রামে বাংলা ১২১৬ সালের ২৫ ফাল্গুন জন্মগ্রহণ করেন। বাংলা ১২৯৬ সালের ২৮ আষাঢ় তিনি উন্তেকাল করেন।

ইতিহাস থেকে জানা গেছে, ছোটবেলা থেকেই তিনি দুরন্ত ও আধ্যাত্মিক স্বভাবের ছিলেন। বাল্যকালে পিতৃহারা পাগলাকানাই’র ঘরে মন না টেকায় অর্থের অভাবে পড়ালেখা হয়নি। তিনি মানুষের বাড়ি রাখালের কাজ করেছেন। গরু চরাতে গিয়ে ধুয়ো জারি গান গাইতেন। নিরক্ষর হলেও তার স্মৃতি, মেধা ছিলো প্রখর। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে গান রচনা করে নিজ কণ্ঠে পরিবেশন করতেন। তার সঙ্গীতে যেমন ইসলাম ধর্মের তত্ত্বকে প্রচার করেছেন তেমনি হিন্দু-পুরান রামায়ণ ও মহাভারত থেকেও নানা উপমার প্রয়োগ ঘটিয়েছেন। এ কারণেই তার গান সার্বজনীনতা লাভ করে। তার মধ্যে বাউল ও কবিয়াল এ দুয়ের যথার্থ মিলন ঘটেছে। পাগলাকানাই’র গান গ্রামগঞ্জে আজও টিকে আছে।

পাগলাকানাই স্মৃতি সংরক্ষণ সংসদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুর রশিদ জানান, কবির জন্মজয়ন্তী পালন করতে ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।