রাতে পুলিশের ধাওয়া সকালে মিললো নদীতে লাশ

মুজিবনগরের রসিকপুরে তাস খেলার আসরে পুলিশের অভিযান

মুজিবনগর প্রতিনিধি: পুলিশের তাড়া খেয়ে পানিতে ডুবে আলমগীর হোসেন (৪৫) নামের এক ফল ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। গত রোববার দিনগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার রসিকপুর গ্রামে ভৈরব নদীতে ঝাপিয়ে পড়ার পর গতকাল সোমবার সকালে আলমগীরের মরদেহ ভেসে ওঠে। তার মৃত্যুর জন্য পুলিশকে দায়ী করছেন স্থানীয়রা। আলমগীর হোসেন রসিকপুর গ্রামের আনিছুর রহমানের বিয়াই। তিনি ঢাকার একজন ফল ব্যবসায়ী।

স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, কয়েকদিন থেকে আলমগীর হোসেন ব্যবসায়ীক কাজে ওই গ্রামে বেয়াই বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। গত রোববার দিনগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে গ্রামের খাঁপাড়ার ভৈরবনদের পাশে মোতালেব হোসেনের চায়ের দোকানে বসে ছিলেন। সেখানে জুয়া খেলা হচ্ছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে মুজিবনগর থানা পুলিশের একটি দল অভিযান চালায়। এ সময় পুলিশের ধাওয়ায় তাস খেলোয়াড়সহ দোকানে বসে থাকা লোকজন দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। এর মধ্যে আলমগীর হোসেনসহ কয়েকজন পাশের ভৈরব নদীতে ঝাঁপ দেয়। নদীতে থেকে দুজনকে আটক করে পুলিশ। কিন্তু আলমগীরে হদিস মেলেনি। পরে গতকাল সোমবার সকালে তার মরদেহ নদীতে ভেসে ওঠে।

আলমগীরের বিয়াই আনিছুর খাঁ ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, নদী থেকে তাদের আটক করার চেষ্টাকালে পুলিশ সেখানে কাউকে যেতে দেয়নি। আলমগীর হয়তো সাঁতার জানতেন না। এ কারণে পানিতে ডুবে তার মৃত্যু হয়েছে।  আলমগীরের পরিচয়, পিতা, আব্দুর রব ব্যাপারী গ্রাম- জংশন বাজার, থানা- ইলিশা, জেলা- ভোলা। তারা ৯ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে আলমগীর ৫ম। এক ছেলে ও এক মেয়ের বাবা আলমগীর একমাত্র মেয়ে সাথীকে গত ৬ বছর আগে বিয়ে দেন রশিকপুর গ্রামের আনিছুর খাঁর ছেলে ফুলবাসের সাথে সেই সুবাদে এলাকায় প্রতিবছর আম ও লিচুর বাগান কিনে থাকেন। মুজিবনগর এলাকায় ব্যবসায়ী হিসেবে ভালো সুনাম আছে তার।

আলমগীরের বড়ভাই রুহুল আমিন জানান, আমরা ৫ ভাইসহ ১০-১২জন এসেছি আমার ভাইয়ের লাশ নিতে। মা-বাবা বেঁচে আছে, রাতেই ভায়ের লাশ বাড়িতে নিয়ে যাবো এবং গ্রামের বাড়িতে দাফন করবো তার পর মামলা করবো কি-না বিষয়টি চিন্তা ভাবনা করে দেখবো।

সহকারী পুলিশ সুপার আহসান হাবীব জানান, গত রোববার দিনগত রাতে সেখানে মাদক ও জুয়াড়িদের বিরুদ্ধে একটি অভিযান হয়েছে। তবে এই অভিযানে তার মৃত্যু হয়েছে কি-না খতিয়ে দেখা হচ্ছে।