তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন ॥ ইবিতে প্রশ্ন ফাঁসের সত্যতা মিলেছে

ইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এফ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। গতকাল শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন উর রশিদ আসকারীর নিকট এ প্রতিবেদন জমা দেন কমিটির সদস্যরা। তদন্তে প্রশ্নপত্র ফাঁসের সত্যতা মিলেছে বলে জানিয়েছেন কমিটির সদস্যরা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৭ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত এফ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ভর্তি পরীক্ষা চলাকালীন সময় খুব কৌশলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কর্মচারীর মাধ্যমে এফ ইউনিটের প্রশ্ন বাইরে চলে আসে। আর প্রশ্নটি চলে যায় ক্ষমতাসীন দলের একটি চক্রের হাতে। ছাত্রলীগের বতর্মান কমিটির সভাপতি সাইফুল ইসলাম, সদর থানা যুবলীগের নেতা আনিচুর রহমান বিকাশ, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী লাল্টুসহ আরো বেশ কয়েকজন বিষয়টি সমন্বয় করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনার সাথে স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মী তবিবর রহমান তোতা, য্বুলীগ নেতা আনিচুর রহমান বিকাশসহ আরও কয়েকজনের যোগসুত্র আছে বলে জানতে পেরেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সম্প্রতি সরকারের একটি গোয়েন্দা সংস্থা ও আইন শৃংখলা বাহিনী এ বিষয়ে তদন্তে নামে। প্রশ্নফাঁসের সাথে সম্পৃক্ততার অভিযোগে গত শুক্রবার ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরীণ একটি ফটোকপি দোকান সীলগালা করে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ফটোকপি দোকানের মালিক মনোজিৎ কুমার বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র। বর্তমানে সে পলাতক রয়েছে। ঘটনা তদন্তে গত ২৫ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. এসএম মোস্তফা কামালকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গতকাল শনিবার দুপুরে তদন্ত কমিটির সদস্যরা উপাচার্যের নিকট তাদের প্রতিবেদন জমা দেন। তদন্তে প্রশ্ন ফাঁসের সত্যতা মিলেছে।
এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক ড. এসএম মোস্তফা কামাল বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে এতে কোনো সন্দেহ নেই। আমরা উপাচার্যের নিকট তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। আগামী সিন্ডিকেট সভায় বিষয়টি আলোচনার পর সব রহস্যের অবসান হবে। তদন্ত প্রতিবেদন জমা দানের সময় উপস্থিত ছিলেন উপউপচার্য অধ্যাপক ড. শাহিনুর রহমান, কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক ড. এসএম মোস্তফা কামাল, কমিটির সদস্য ফলিত পদার্থ ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. আহসানুল আম্বিয়া, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এসএম আব্দুল লতিফ প্রমুখ। উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন উর রশিদ আসকারী বলেন, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন আমি হাতে পেয়েছি। আগামী সিন্ডিকেটে প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা হবে। তবে এটা সত্য যে, প্রতিবেদনে যে বা যারাই অভিযুক্ত হবে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।