ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুলে আসা বন্ধ ॥ প্রতিকার নেই ॥ হতাশ অভিভাবকরা

 

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহ সদরের মান্দারবাড়িয়া হাজি রফিউদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমীটি গঠনকে কেন্দ্র করে যে ঘাপলাবাজি হচ্ছে তাতে ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুলে আসা বন্ধ। প্রতিকার নেই। যেকোনো সময়ই ঘটতে পারে ব্যাপক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ।

সংঘর্ষের আশঙ্কায় ছাত্র-ছাত্রীরা আতঙ্কে স্কুলে আসা বন্ধ করে দিয়েছে। ক্রমে ক্রমে হতাশ হয়ে পড়ছে ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকরা। কে নো প্রকারেই সমাধান হচ্ছে না বলে হতাশ ও উদ্বিগ্ন প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। এছাড়াও স্কুলে ম্যানেজিং কমীটি গঠনকে কেন্দ্র করে যে ঘাপলাবাজি চলছে তাতে যেকোনো সময় স্কুল বন্ধও হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন গ্রামবাসী।

সরেজমিনে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে ঝিনাইদহ সদরের মান্দারবাড়িয়া হাজি রফিউদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমীটি গঠনকে কেন্দ্র করে যথেষ্ট ঘাপলাবাজি চলছে। অভিভাবকদের না জানিয়েই কমীটি প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এলাকার ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকরা।

মান্দারবাড়িয়া গ্রামের সহিদুল ইসলাম বলেন, বিদ্যুতসাহী অভিভাবককের পদে আমি এমপির কাছ থেকে ডিও লেটার এনে স্কুলে জমা দিয়েছি। পরে স্কুলের প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলামের কারসাজিতে ভুয়া ডিও লেটার জমা দিয়েছে আরেক জন। তিনি আরও বলেন, এমপি একই পদে দুজন পুরুষ অভিভাবকের ডিও লেটার দেননি। এ ব্যাপরে এমপি  চ্যালেঞ্জ করে পুনরায় আমাকে ডিও লেটার দিয়েছেন। আমাকে বিদ্যুতসাহী অভিভাবককের পদ থেকে জোর করে আইন বর্হিভুতভাবে বাদ দেয়া হচ্ছে বলে সহিদুল ইসলাম অভিযোগ করেছেন।

গ্রামবাসীদের মধ্যে পারভিনা খাতুন, বাদশা মিয়া ও শিরিন সুলতানা জানিয়েছেন, স্কুলের প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলামের স্ত্রী প্রায়ই স্কুলে এসে তার স্বামী প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলামের সাথে পরকীয়া সম্পর্ক নিয়ে গ-গোল ফ্যাসাদ করে ও মোবাইলফোন ভাঙচুর করে। এতে করে স্কুলসহ ছাত্রছাত্রীদের কচি মানষীকতায় ব্যাপক প্রভাব পড়ছে। তারা আরও জানায়, স্থানীয় নেতা জৈনিক মিল্টন মান্দারবাড়িয়া হাজি রফিউদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমীটির সভাপতি জোর করে হওয়ার জন্য প্রধান শিক্ষকের সহায়তায় সর্বদা কারসাজি চালিয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া অভিভাবকদের না জানিয়েই ম্যানেজিং কমীটি কিভাবে করা হচ্ছে? বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

গ্রামের মেম্বার মতিউর রহমান অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, উক্ত সংবাদের তথ্যগুলো সব সত্য। আমি গ্রামের আপমর জন সাধারণকে নিয়ে বারংবার সমাধানের চেষ্টা করেও প্রতিপক্ষ জৈনিক মিল্টন প্রভাবশালী হওয়ায় ও প্রধান শিক্ষকের জটিলতার কারণে সমাধান সম্ভব হচ্ছে না। তাছাড়াও মান্দারবাড়িয়া হাজি রফিউদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামকরণ থেকে হাজি রফিউদ্দিন নামটিও মুছে দেয়া হচ্ছে জৈনিক মিল্টনের কারণে বলেও তিনি অভিযোগ করেছেন।

এ ঘটনায় জৈনিক মিল্টন জানান, তিনি ঝিনাইদহ আওয়ামী লীগের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেএম রশিদ কর্তৃক মোননীত মান্দারবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হবু সভাপতি। তিনি বলেন, আমি নিয়ম নিতী মেনেই সভাপতি হতে যাচ্ছি। তাছাড়া মান্দারবাড়িয়া হাজি রফিউদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমীটি গঠনকে কেন্দ্র করে যে ঘাপলাবাজি হচ্ছে এ সংবাদ প্রকাশ না করার জন্যও সাংবাদিকদের পরামর্শ দিয়েছেন।

এ অভিযোগে মান্দারবাড়িয়া হাজি রফিউদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ৮৩ জনের স্বাক্ষরে কমীটি রেডি করা হয়েছে, এখনও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে জমা দেয়া হয়নি। খুব শিগগিরিই জমা দেয়া হবে।

এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সহকারী ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সুধাংশু শেখর জানান, মান্দারবাড়িয়া হাজি রফিউদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমীটিসহ তিন/চারটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমীটি নিয়ে অনিয়ম ও ঘাপলাবাজি হয়েছে বলে আমাদের কাছে অভিযোগ আছে। তদন্ত করে যথাযথ ব্যাবস্থা নেয়া হবে।