ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: সংসারে সুখের আশায় বিদেশে গিয়ে নিরুদ্দেশ হয়েছেন ঝিনাইদহ কোটচাঁদপুরের আলাউদ্দীন। এদিকে সংসারে একমাত্র আয়-রোজগারের মানুষটিকে হারিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন তার পরিবার। স্বামীকে ফিরে পেতে সরকারের সু-দৃস্টি কামনা করেছেন তার স্ত্রী।
আলা উদ্দীনের স্ত্রী সুফিয়া খাতুন জানান, কোটচাঁদপুরের আলুকদীয়া গ্রামের মনিরুজ্জামানের ছেলে আলাউদ্দীন। দুই ভাইয়ের মধ্যে আলাউদ্দীন বড়। পেশায় তিনি ছিলেন মোটর গাড়ির সুপার ভাইজার। সংসারে একটু সুখের আশায় তিনি বিদেশে যাওয়ার কথা ভাবতে থাকেন। এ সময় বিদেশে যাওয়ার কথা হয় কুশনা গ্রামের রেজাউল ইসলামের সাথে। তিনি আলাউদ্দীনকে মোটা অঙ্কের বেতনের লোভ দেখান। রেজাউল বলেন একবার ঘুরে এলে সারা জীবন বসে খাওয়া যাবে। এ লোভে আলাউদ্দীন শুরু করেন বিদেশে যাওয়ার কার্যক্রম। হাতিয়ে নেয় ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা। এরপর ২০১৩ সালের অক্টোবরে পানি পথে মালয়েশিয়া পাঠিয়ে দেন আলাউদ্দীনকে। তারপর থেকে সব যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। অনেক চেষ্টা করেও তার কোন খোঁজ মেলেনি। বিষয়টি নিয়ে রেজাউলের কাছে গেলে তিনি কোনো পাত্তা দেন না, বলেন আমার পাঠানোর কথা আমি পাঠিয়েছি। এখন কোথায় আছে তা আমি কিভাবে বলবও। এভাবে ২ বছর চলে খোঁজাখুঁজি। এক দিকে সংসারে অভাব-অনাটন অন্যদিকে স্বামীকে খুঁজে না পাওয়ার বেদনা।
তিনি বলেন, ঠিক সে সময় ২০১৫ সালের শেষের দিকে ২ জন পুলিশ আসে আমাদের বাড়িতে। পরিচয়ে জানতে পারি তাদের একজন এসআই আনিসুর রহমান ও অন্যজন থানার ডিএসবি হুমায়ুন। তারা এসে বলেন তোমার স্বামী মরেনি, বেঁচে আছে তিনি এখন মায়ানমারের কারাগারে। তারা বলেন, আমরা এখন রিপোর্ট দিলে আলাউদ্দীন ছাড়া পাবে। এর জন্য কিছু টাকা লাগবে। কতো টাকা লাগবে জানতে চাইলে তারা বলেন বড় কাজ, ১৮-২০ হাজার টাকা লাগবে।
এরপর আমি তাদের হাতে-পায়ে ধরে ৭ হাজার টাকা দিই। তারা আমার স্বামী ফিরে আসবে এমন আশার কথা শুনিয়ে চলে যান। সে থেকে স্বামী ফেরার আশায় আজও বসে আছি। স্বামী আলাউদ্দীনকে ফিরে পেতে তিনি সরকারের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন। এ বিষয়টি নিয়ে কথা হয় আলাউদ্দীনকে বিদেশ পাঠানো রেজাউল ইসলামের সাথে তিনি বলেন, আমি তাদের কাছ থেকে কোন টাকা পয়সা নেয়নি।
ঝিনাইদহ গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দাউদ হোসেন বলেন, আমরা বিষয়টি তদন্ত করে রিপোর্ট পাঠিয়ে দিয়েছি। পরে কি হয়েছে তা আমাদের জানা নেই।