সিইসির বিরুদ্ধে বিএনপির বিস্তর অভিযোগ

 

স্টাফ রিপোর্টার: নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততাসহ বিস্তর অভিযোগ এনেছে বিএনপি। একইসঙ্গে এই নির্বাচন কমিশনের অধিনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব নয় বলে মনে করে দলটি। গতকাল মঙ্গলবার রাতে ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বৈঠক শেষে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব অভিযোগ করেন।

বৈঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, নতুন নির্বাচন কমিশন প্রধানমন্ত্রীর পছন্দের প্রতিফলন। এই কমিশন দিয়ে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তিনি বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ‘জনতার মঞ্চ’র একজন সংগঠক ছিলেন। অথচ কর্মরত সরকারি কর্মকর্তারা কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত হতে পারেন না। এমন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত হওয়া সরকারি চাকরি বিধির নিদারুণ লংঘন ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। বিএনপির মহাসচিব বলেন, ২০১০ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত নুরুল হুদা মিউনিসিপাল ডেভলোপমেন্ট ফান্ড নামের সরকারের একটি প্রজেক্টের এমডি হিসেবে সরকারের লাভজনক পদে কাজ করেছেন। আমরা সরকারি চাকরি শেষে লাভজনক পদে অধিষ্ঠিতদের নির্বাচন কমিশনে নিয়োগ না দেয়ার প্রস্তাব করেছিলাম এই জন্যই যে সরকারের অনুগ্রহভাজনদের এসব পদে নিয়োগ দেয়া হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা চেয়েছিলাম কারও কাছে বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ বা কারও প্রতি ক্ষুব্ধ কোনো ব্যক্তি যেন নির্বাচন কমিশনের মতো নিরপেক্ষ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ না পান। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে তাই হয়েছে। এসব কারণে স্বাভাবিকভাবেই জনমনে কে এম নুরুল হুদার সম্পর্কে নেতিবাচক উপলব্ধির সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি সার্চ কমিটি রাষ্ট্রপতির বিবেচনায় না আনা খুবই রহস্যজনক।

তিনি বলেন, আমরা মনে করি এমন একজন বিতর্কিত সাবেক সরকারি কর্মকর্তার নেতৃত্বে গঠিত কোনো প্রতিষ্ঠান নির্মোহভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবে না। বিশেষ করে তা নির্বাচন কমিশনের মতো প্রতিষ্ঠান যদি হয়। কাজেই প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নেতৃত্বে সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব হবে না। এমন একটি নির্বাচন কমিশন গঠনের পর নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সহায়ক সরকার গঠনের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে আমাদের প্রস্তাবের যৌক্তিকতা আরও দৃঢ় হয়েছে।

মির্জা ফখরুল আরও অভিযোগ করে বলেন, বিএনপি সম্পর্কে নুরুল হুদার মনে ক্ষোভ থাকতে পারে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে পদোন্নতি পেয়েছিলেন তিনি। তাই আওয়ামী লীগের প্রতি অনুরাগ পোষণ করতে পারেন। এ পরিস্থিতিতে তিনি কতটুকু নিরপেক্ষতা অবলম্বন করবেন সে ব্যাপারে জনমনে যৌক্তিক প্রশ্ন রয়েছে। তিনি বলেন, অভিজ্ঞ সচিব ছাড়া কাউকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করার ঘটনা নজিরবিহীন। রাজনৈতিক বিবেচনা ছাড়া এমন হওয়ার কথা না। শুধু কাগজেই নুরুল হুদা অতিরিক্ত সচিব এবং সচিব হয়েছেন। তিনি যুগ্ম সচিব হিসেবে চাকরি জীবন শেষ করেছেন।