চলে গেলেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত

 

স্টাফ রিপোর্টার: আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা ও সাংসদ সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত মারা গেছেন। আজ রোববার ভোররাতে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। তিনি হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের ব্যক্তিগত সহকারী কামরুল হক জানান, গতকালরো্ ভোররাত পৌনে চারটার দিকে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। তখন চিকিৎসকেরা হাসপাতালে ছুটে আসেন। ভোররাত ৪টা ২৪ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। কামরুল হক আরও জানান, গত বৃহস্পতিবার থেকে অসুস্থবোধ করছিলেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। গত শুক্রবার সকালে তাকে ল্যাবএইডে ভর্তি করা হয়। তার ফুসফুসে সর অবস্থার বেশ অবনতি হয়। রাত নয়টার দিকে তাকে লাইফ সাপোর্ট দেয়া হয়। চিকিৎসকেরা তাকে দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ছিলেন। তিনি আইন, বিচার ও সংসদ-বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন। সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ শোক জানিয়েছেন।

সকাল সাড়ে সাতটার দিকে ল্যাবএইড হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মৃত্যুতে কিছু বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন তিনি। বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ছিলেন এক বর্ণাঢ্য ব্যক্তিত্ব। পার্লামেন্টারিয়ান হিসেবে তিনি এক নম্বর ছিলেন বলে তাঁর মনে হয়। তাঁর মৃত্যুতে বিরাট শূন্যতা তৈরি হয়েছে। এই শূন্যতা সহজে পূরণ হবে বলে মনে করার কারণ নেই। হাসপাতাল থেকে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মরদেহ রাজধানীর জিগাতলায় তাঁর বাসভবনে নেওয়া হয়। পরে দুপুরের দিকে তাঁর মরদেহ নেওয়া হয় ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে। সেখানে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাঁর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপির নেতারা তাঁর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান।

ঢাকেশ্বরী মন্দিরে গিয়ে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ছিলেন একজন সদালাপী মানুষ। রাজনীতির অনেক ভারী বিষয় হালকাভাবে নিয়ে তার সমাধান দিতেন তিনি। সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের পরে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, দেশ ও জাতি একজন অনেক বড় ও প্রবীণ রাজনীতিবিদকে হারিয়েছে। তাঁর মতো একজন রাজনীতিবিদকে হারানোয় দেশের রাজনীতিতে একটি শূন্যতা সৃষ্টি হলো। তিনি সৎ, অভিজ্ঞ ও নিষ্ঠাবান নেতা ছিলেন। তাঁর সঙ্গে অনেক দিনের ব্যক্তিগত সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাজনীতি সম্পর্কে তিনি গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখতেন। মানুষের মধ্যে আস্থা তৈরি করতেন।

ঢাকেশ্বরী মন্দিরে শ্রদ্ধা নিবেদন ও ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে বেলা তিনটার দিকে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মরদেহ জাতীয় সংসদ ভবনে নেয়া হয়। সেখানে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ ও সংসদ সদস্যরা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

Leave a comment