স্টাফ রিপোর্টার: নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের লক্ষ্যে আজ সার্চ কমিটির নাম ঘোষণা করতে পারেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সোমবার বিকালে বঙ্গভবনে বৈঠকে বসেন রাষ্ট্রপতি। এমন তথ্যই জানা যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে।
সূত্রটি জানায়, সময় স্বল্পতার কারণে আইন করে নিয়োগ-প্রক্রিয়ায় না গিয়ে আপাতত সার্চ কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। আর ওই সার্চ কমিটির মাধ্যমেই তিনি আগামী কমিশনের নিয়োগ দিতে চান।
বঙ্গভবন সূত্রে জানা গেছে, সার্চ কমিটির সদস্য কারা হতে পারেন সে বিষয়টিও মোটামুটি চূড়ান্ত করেছেন রাষ্ট্রপতি। সার্চ কমিটির সদস্য সংখ্যা পাঁচজন হতে পারে। কারা কারা থাকছেন এই বিষয়ে জানতে চাইলে সূত্র জানায়, প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। তবে কারা কারা থাকবেন এটার জন্য আরও কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে। কমপেক্ষ দুই জন বিচারপতি থাকবেন এটা মোটামুটি নিশ্চিত বলে সূত্রটি আভাস দিয়েছে। এর আগের যে সার্চ কমিটি করা হয়েছিল ওই সার্চ কমিটির সদস্য হিসাবে যেসব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ ছিলেন এবার তাদের রাখা হচ্ছে কিনা এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, ওই ধরনের কোনো পরিকল্পনা তার জানা নেই। বিষয়টি রাষ্ট্রপতিই ঠিক করবেন। সিদ্ধান্ত তিনি নিলেও বিষয়টি যাতে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয় তিনি তেমন সিদ্ধান্তই নেবেন।
সূত্র জানায়, বিএনপি ছাড়া অন্যান্য দল তাদের মতো করে প্রস্তাব দিয়েছে। বিএনপি সুনির্দিষ্ট করে সার্চ কমিটির সদস্যদের নাম বলার কারণে রাষ্ট্রপতিকে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে হচ্ছে। অন্তত তাদের প্রস্তাবের একজন হলেও রাখার চেষ্টা হবে। যাতে করে বিএনপি সার্চ কমিটির বিষয়ে কোনো আপত্তি করতে না পারে। জানা গেছে, সার্চ কমিটি হয়ে গেলে এরপর তারা বেশি সময় পাবেন না। কারণ ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কমিশন গঠন করতে হবে। আগামী এক সফতাহ থেকে দশ দিন সার্চ কমিটিকে সম্ভাব্য কমিশনারদের নাম বাছাই করার জন্য সময় দেয়া হতে পারে। এর মধ্যে সার্চ কমিটি নির্বাচন কমিশনার হওয়ার জন্য যাদের যোগ্য মনে করবেন এই রকম দশটি নাম দেবেন। ওই দশটি নাম থেকে রাষ্ট্রপতি পাঁচটি নাম চূড়ান্ত করবেন। নাম চূড়ান্ত করার পর এখন চারজনকে নিয়োগ দেবেন। আর বাকি একজনকে নিয়োগ দেবেন আরও এক সফতাহ পরে। কারণ নির্বাচন কমিশনের বর্তমান চার কমিশনারের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৮ ফেব্রুয়ারি। আর বাকি একজনের মেয়াদ শেষ হবে ১৪ ফেব্রুয়ারি। সেই হিসেবে একজন পরে দায়িত্ব নেবেন। তবে দায়িত্ব পরে নিলেও নিয়োগ একসঙ্গেও দেয়া হতে পারে।
বাণিজ্যমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া: এদিকে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জন্য সার্চ কমিটির প্রধান হিসেবে রাষ্ট্রপতি যাকে নিয়োগ দেবেন তিনি নিরপেক্ষই হবেন। তার বিশ্বাস সবার কাছে তিনি গ্রহণযোগ্য হবেন।
সোমবার সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রীর নিজ কার্যালয়ে তার সঙ্গে বাংলাদেশে অস্ট্রেলিয়ার নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত জুলিয়া নিবলেট সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে রাষ্ট্রপতির কাছে গিয়েছিলেন। সার্চ কমিটির প্রধান হিসেবে তারা কারও নাম প্রস্তাব করেননি। তিনি আরও বলেন, সাংবিধানিক প্রক্রিয়া রয়েছে। ওই প্রক্রিয়ায় সুপ্রিমকোর্ট, পাবলিক সার্ভিস কমিশনসহ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের নিয়ে সার্চ কমিটি গঠন হবে।
এর আগে গত রোববার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি সার্চ কমিটির প্রধান হিসেবে সুনির্দিষ্ট একজনের নাম প্রস্তাব করেছে। এ ব্যাপারে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তোফায়েল আহমেদ বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে রাষ্ট্রপতির সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম। সেখানে এ ব্যাপারে কোনো কথা হয়নি। তবে ওবায়দুল কাদের যে কথা বলেছেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সে কথা এখনো অস্বীকার করেননি।