গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে পুলিশকে একাত্ম হতে হবে

 

স্টাফ রিপোর্টার: ঔপনিবেশিক ধ্যান-ধারণা বদলে ফেলে পুলিশ বাহিনীকে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে একাত্ম হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল সোমবার জাতীয় পুলিশ সফতাহের উদ্বোধন করে এই আহ্বান জানান দেশের সরকারপ্রধান। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদসদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ঔপনিবেশিক আমলের ধ্যান-ধারণার পরিবর্তে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সাথে একাত্ম হয়ে পুলিশের সেবা আরো জনবান্ধব করতে হবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বক্তৃতা থেকে উদ্ধৃত করে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের মহান নেতা জাতির পিতা তার ভাষণে যে কথা বলেছিলেন, এই দেশ স্বাধীন দেশ। আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক। আমাদের পুলিশ বাহিনী স্বাধীন দেশের পুলিশ বাহিনী। কাজেই তাদের প্রতিটি ক্ষেত্রে দায়িত্ববান থাকতে হবে, জনসেবা করার মানসিকতা নিয়ে। শান্তিময় ও নিরাপদ সমাজ গঠনে কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রমকে আরো জোরদার করার ওপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রতিটি পুলিশ সদস্যকে অসহায় ও বিপন্ন মানুষের প্রতি অকুণ্ঠ চিত্তে সেবার হাত প্রসারিত করতে হবে।

এবারের পুলিশ সফতাহের প্রতিপাদ্য জঙ্গি মাদকের প্রতিকার, বাংলাদেশ পুলিশের অঙ্গীকার। রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে গতকাল সোমবার পুলিশ সফতাহের উদ্বোধনে ১৩২ জনকে বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) এবং রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম) পারিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। এর মধ্যে সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ কাজের জন্য ২৬ জনকে ২০১৬ সালের বিপিএম এবং ৪১ জনকে পিপিএম দেয়া হয়। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ মামলার রহস্য উদ্ঘাটন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, দক্ষতা, কর্তব্যনিষ্ঠা, সততা ও শৃঙ্খলামূলক আচরণের জন্য ২৪ জন বিপিএম (সেবা) এবং ৪১ জন পিপিএম (সেবা) পেয়েছেন এবার। পদকপ্রাপ্ত সবাইকে অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এত বিপুল সংখ্যক পদক অতীতে কখনো বিতরণ করা হয়নি। আপনারা এটা পেয়েছেন আপনাদের কাজের দক্ষতা ও যোগ্যতা প্রমাণ করতে পেরেছেন এবং জনগণকে নিরাপত্তা দিতে পেরেছেন বলে।

প্রধানমন্ত্রী সকালে রাজারবাগে পৌঁছলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক তাকে স্বাগত জানান। প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানানোর পর তিনি একটি খোলা গাড়িতে প্যারেড পরিদর্শন করেন। পুলিশের মহাপরিদর্শক এবং প্যারেড কমান্ডার চাঁদপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সাথে ছিলেন। প্যারেড পরিদর্শনের পর প্রধানমন্ত্রী সালাম গ্রহণ করেন। প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যের শুরুতেই দৃষ্টিনন্দন ও সুশৃঙ্খল প্যারেডের জন্য পুলিশ সদস্যদের অভিনন্দন জানান।

বাংলাদেশ পুলিশকে দেশের শান্তি, নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার প্রতীক হিসেবে বর্ণনা করে তিনি বলেন, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা প্রদান, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও মানবাধিকার রক্ষার দায়িত্বে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি সদস্য। জঙ্গিবাদের মূলোৎপাটনে ২০১৬ সালে পুলিশের কার্যকর পদক্ষেপ দেশকে বড় ধরনের নাশকতা ও অস্থিতিশীলতার হাত থেকে রক্ষা করেছে।

 

Leave a comment